গুলিস্তানে আহতদের পাশে ছাত্রলীগের ১০০০ ভলান্টিয়ার, ৫০০ জরুরী রেসপন্স টিম 

ছাত্রলীগ
  © টিবিএম ফটো

রাজধানী গুলিস্তানে বিস্ফোরণের ঘটনায় হতাহত ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়িয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ। আহতদের বিভিন্ন সেবা দিতে কাজ করছে ১ হাজারের অধিক ভলান্টিয়ার ও ৫০০ কুইক রেসপন্স টিম। শুধু তাই নয়, আহতদের রক্ত দিতে সংগঠনটি সংগ্রহ করেছে ১০০ ব্যাগ রক্ত। তাদের চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসকরা যখনই রক্ত চাচ্ছেন তখনই রক্ত পৌঁছে দিতে ছুটে যাচ্ছেন দলটির নেতাকর্মীরা। দ্রুত চিকিৎসা সেবা দিতে সংগঠনটির চারটি মেডিকেল কলেজ শাখার নেতাকর্মী কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।

গতকাল বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে গুলিস্তানে ভবনে বিস্ফোরণের পর পরই হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হতে থাকে। তাদের জন্য রক্ত সংগ্রহ, প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া ও আহত ব্যক্তিদের নির্বিঘ্ন চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে এদিন পৌনে আটটার দিকে তথ্য ও সেবাকেন্দ্র স্থাপন করে ছাত্রলীগ। এতে নেতৃত্ব দেন দলটির কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান। 

শুধু তাই নয়, আহতদের সাহায্য করতে জরুরী ভিত্তিতে একটি বিজ্ঞপ্তি দেয় সংগঠনটি। এতে বলা হয়, ‘ঢাকার সিদ্দিকবাজারের একটি ভবনে আকস্মিক বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে বিভিন্ন গ্রুপের রক্তের প্রয়োজন। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে যে প্রয়োজনীয় রক্ত জোগান দিতে তাঁরা যেন ব্যক্তিগত ও সাংগঠনিকভাবে এগিয়ে আসেন।’ 

এ আহ্বানের পর ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ শাখাসহ বিভিন্ন ইউনিটের সহস্রাধিক নেতা-কর্মী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান। তাঁরা আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত কাজ শুরু করেন। ‘রক্ত লাগলে যোগাযোগ করুন’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে জরুরি বিভাগের সামনে দাঁড়িয়ে যান অনেকেই। এতে করে ব্লাড ব্যাংকে জমা হয় ১০০ ব্যাগ রক্ত। 

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বাংলাদেশ মোমেন্টসকে বলেন, ‘আমরা গতকাল এ ঘটনার পর পরই নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে নির্দেশনা দেই। রক্ত সংগ্রহ করা, আহতদের দ্রুত চিকিৎসা পেতে সহযোগিতা করা, নিহতদের বাড়ি পৌঁছে দেয়াসহ সকল প্রকার সহযোগিতায় আমরা কাজ করছি। এ পর্যন্ত আমাদের কাছে ১০০ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহে আছে। ডাক্তাররা যখনই রক্ত যাচ্ছেন আমরা তাদেরকে রক্ত পৌঁছে দিচ্ছি। শুধু তাই নয় গতকাল গুলিস্তানের এ ঘটনায় উদ্ধার কাছে আমাদের অসংখ্য নেতা কর্মী অংশগ্রহণ করেছিল।’

ঢাবি শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন বাংলাদেশ মোমেন্টসকে বলেন, এ ঘটনার পর পরই আমরা মেডিকেলে ছুটে যাই। আহতদের সহযোগিতায় একটি টিম গঠন করি। তাদের সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করতে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এমনকি নিহতদের বাড়ি পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রেও আমরা কাজ করছি।

গতকাল বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে গুলিস্তানে বিআরটিসির বাস কাউন্টারের কাছে সিদ্দিকবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পাশাপাশি দুটি বহুতল ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেখানে উদ্ধারকাজ চালায় ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট। এ দূর্ঘটনায় আহত হন শতাধিক মানুষ, যাদের মধ্যে ৭০ জনকে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি রয়েছেন ১০ জন, যাদের কেউই শঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। বিস্ফোরণের পর মঙ্গলবার ভবনটি থেকে ৪০ জনকে জীবিত উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।