সোহরাওয়ার্দী কলেজে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা

ক্যাম্পাস
সোহরাওয়ার্দী কলেজে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন  © টিবিএম ফটো

পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে অবস্থিত ৭৩ বছরের ঐতিহ্যবাহী সোহরাওয়ার্দী কলেজে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। প্রতিষ্ঠানটিতে উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসে শিক্ষার্থীরা। ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানে মাত্র তিনটি ভবনে এইচএসসি, অনার্স ও মাস্টার্স মিলে প্রায় ৯ হাজার শিক্ষার্থী পোড়াশোনা করছে। এর মধ্যে আবার দুটি ভবন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোন সময় ধসে পড়ার আশংকা রয়েছে। তরপরও চালানো হচ্ছে শ্রেণি পাঠদান।

ভবনগুলো ঘুরে দেখা গেছে, নতুন এবং পুরান ভবনের দেয়াল এবং ছাদের অনেক স্থানে ফাটল ধরেছে। কয়েকটি ক্লাসরুমের ছাদের অনেকাংশ খসে পড়ে রড বের হয়ে গেছে। এছাড়াও ভবনের পিলারের মধ্যে ফাটল চোখে পড়েছে। তিনটি ভবনের মধ্যে ১টি ৩ তলা পুরাতন ভবন, ১টি ৩ তলা নতুন ও ১টি ৫ তলা নতুন ভবন। যার মধ্যে ৩ তলা পুরান ভবনটি এবং ৩ তলা নতুন ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। কিছু দিন আগেও ক্লাস চলাকালে ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ক্লাসরুম এবং অর্থনীতি বিভাগের ক্লাসরুমের ছাদের কিছু অংশ খসে পড়ে। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, নতুন ভবন তৈরি না হওয়ার আগ পর্যন্ত আমাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ক্লাস করতে হবে। একটা দুর্ঘটনা না ঘটলে হয়তো আমাদের এই সমস্যার সমাধান হবে না। তারা আরও বলেন, এমন একাধিক ডিপার্টমেন্ট আছে, যেগুলোতে একটি ক্লাসে দুটো ডিপার্টমেন্টের ক্লাস নিতে হয়। সেই হিসাবে সপ্তাহে ৩ দিন করে ক্লাস নিতে পারে একটি ডিপার্টমেন্ট। এর মধ্যে থাকে অনার্স প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ এবং মাস্টার্সের ক্লাস। তাই দেখা গেছে, সপ্তাহে ২-৩ দিনের বেশি ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয় না। ফলে অনেক সময় সিলেবাস শেষ না করে আমাদের পরীক্ষায় বসতে হয়, যার ফলে রেজাল্ট খারাপ হয়।

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিষয়ে উক্ত কলেজের অধ্যক্ষ মোহসীন কবিরের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, ‘কলেজের তিনটি ভবনের মধ্যে দুটোই ঝুঁকিপূর্ণ ভবন। এর মধ্যে নতুন যে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ, তা করা হয়েছিল বিএনপি সরকারের আমলে। ঐ সময় ভবনটি ৬ তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে ৩ তলা সম্পন্ন করা হয়েছিল। আমি আশার পর ক্লাস সংকট থাকার কারণে চেয়েছিলাম উপরে আরও দুই-তিন তলা বাড়ানো যায় কিনা। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম ভবনটিতে আর বাড়ানো হলে যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে। তাই আর বাড়ানো সম্ভব হয়নি। আর আরেকটি যে পুরাতন ভবন রয়েছে তা আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।”

নতুন করে কোন ভবনে উঠানোর কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ” আমরা ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে আমাদের সমস্যার কথা জানিয়ে দিয়েছি এবং নতুন ভবনের বিষয়ে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। আশা করি, খুব শীঘ্রই আমরা একটা সুখবর পাবো। “


মন্তব্য