শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রলীগের নিপীড়নের প্রতিবাদে রাবি শিক্ষকের অনশন

রাবি
শিক্ষক ফরিদ উদ্দিন খান  © সংগৃহীত

সারাদেশের শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রলীগের চরম নৈরাজ্য-নিপীড়নের প্রতিবাদে এবং দোষীদের শাস্তির দাবিতে প্রতীকী অনশনে বসেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান।
 ‍
আজ বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্বোহা চত্বরে সকাল ১০টা থেকে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান অনশন শুরু করেন। বিকেল ৫টা পর্যন্ত অনশন করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ফরিদ খান বলেন, আমরা দীর্ঘদিন দেখছি যে ক্যাম্পাসে ক্ষমতাশীন ছাত্র সংগঠন তারা বিভিন্নভাবে দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি ও নৈরাজ্য করছে। আমরা এর আগেও আন্দোলন করছি। দিনে দিনে এটি ব্যাপকতা লাভ করছে। আমি একজন শিক্ষক ও অভিভাবক হিসেবে আমি বুঝি যাদের সন্তানরা ক্যাম্পাসে পড়ে তারা এধরণের সংবাদ দেখে কতোটা হতাশ হয়, দুশ্চিন্তা করে।

তিনি আরও বলেন, যারা এধরণের ঘটনা ঘটাচ্ছে তারা কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়। তাদেরও বিচারের আওতায় এনে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। সরকারকেও ভাবা উচিত দেশের শিক্ষাঙ্গনে যারা দেশ গড়ার কারিগর তাদের ওপর এধরণের নির্যাতন হচ্ছে। পৃথিবীর আর কোন দেশ দেখানো যাবে কি যে একজন শিক্ষার্থী তার সহপাঠীর সাথে এমন আচরণ করে। এটি চরম দুঃখজনক।

অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, দেশজুড়ে ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর একের পর এক যে নিপীড়ন আর নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে যা রীতিমত মানবাধিকার লঙ্ঘন। এটি মেনে নেয়া যায়না। একজন সাধারণ শিক্ষক হিসেবে আমি ব্যথিত, ক্ষুব্ধ এবং উদ্বিগ্ন। এই নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়ানো নৈতিক দায়িত্ব মনে করছি।

তদন্ত কমিটির বিষয়ে তিনি বলেন, তদন্ত জমা দেওয়ার পরেও সেটি প্রকাশ হচ্ছে না। কোন ব্যবস্থাও নিচ্ছে না। এই যে একধরণের নমনীয়তা, লালন-তোষণ নীতি যা চরম দুঃখজনক। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে চিন্তা করতে হবে সে সকলের অভিভাবক। যদি দেখে তার সন্তান আক্রান্ত হচ্ছে তার উচিত তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া। যারা লাঞ্ছনা করছে, রক্তাক্ত করছে তাদের জন্য তদন্তের পর্যন্ত বসে থাকা উচিত নয়।

গত রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলাম ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সোলাইমানের নেতৃত্বে কৃষ্ণ রায় নামের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়। এ সময় তাকে মারধর করে শিবির বলে চালিয়ে দেওয়ারও হুমকি দেন ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হল প্রাধ্যক্ষ ও প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। হল প্রাধ্যক্ষ ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করেছেন।

উল্লেখ্য, এর আগেও ফরিদ উদ্দিন খান বিভিন্ন ইস্যুতে সরব থেকেছেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের দখলদারিত্ব, আসন-বাণিজ্য, শিক্ষার্থীদের নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবাদ করে আসছেন। বিভিন্ন সময় মানববন্ধন, প্রতীকী অনশনেও বসেছেন তিনি। গত বছরের ২৬ জুন একই চত্বরে নির্যাতনের বিরুদ্ধে অনশন করেন তিনি।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ