আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের দু'গ্রুপের সংঘর্ষে উত্তপ্ত ববি ক্যাম্পাস 

ববি
  © মোমেন্টস ফটো

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আবারো ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০ টার দিকে এই ঘটনার সূত্রপাত হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রাত ১০ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে রিদম-আবিদ গ্রুপের সাথে রাফি-নাভিদ গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তার প্রেক্ষিতে রাফি-নাভিদসহ তাদের গ্রুপের কর্মীরা তাদের উপর পাল্টা হামলা চালায়। এভাবে দুই গ্রুপের ভিতর চার দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। 

গত বৃহস্পতিবার রুপাতলি কোচিং সেন্টার ভাড়াকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মীর সঙ্গে বাড়ির মালিক ও স্থানীয়দের কথাকাটাকাটি হয়। তার প্রেক্ষিতে ঐদিন স্থানীয়দের পক্ষ নেওয়ায় রিদম-আবিদ গ্রুপের সাথে রাফি-নাভিদ গ্রুপের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। গতরাতে ক্যাম্পাসে এ বিষয়ে বসাবসির এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে বহিরাগতদের নিয়ে রিদম-আবিদ গ্রুপ সিফাত-নাভিদের উপর হামলা করে। তার প্রেক্ষিতে রাফি-নাভিদ গ্রুপ আবিদ-রিদম গ্রুপের উপর হামলা করে।

এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ম ব্যাচের আল সামাদ শান্ত, মাহমুদুল হাসান তমাল, নাওয়ার হক, সরোয়ার আহমেদ সাইফসহ ৭-৮ জন রিদম-আবিদসহ বহিরাগতদের প্রটোকল দিয়ে ক্যাম্পাসের বাইরে বের করে দেওয়ার অভিযোগ করে রাফি নাভিদ গ্রুপ। পরবর্তীতে রাফি-নাভিদ গ্রুপ শান্ত-তমাল গ্রুপের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। হলের ফ্লোরে ফ্লোরে শোডাউন দেয় উভয়পক্ষ। 

সংঘর্ষ চলাকালে ৫ জন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়। আহত শিক্ষার্থীরা হলো ২০১৮-১৯ সেশনের বাংলা বিভাগের তাহমিদ জামান নাভিদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের রুমান হোসেন, ২০১৭-১৮ সেশনের মাহমুদুল হাসান তমাল, ২০১৫-১৬ সেশনের গণিত বিভাগের আবিদ হোসেন ও ২০১৩-১৪ সেশনের গণিত বিভাগের মহিউদ্দিন আহমেদ সিফাত। আহত সকলেই বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারী।

ঘটনায় আহত বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী তাহমিদ জামান নাভিদ বলেন, দুইদিন আগে রুপাতলী আমার এক বন্ধুকে নিয়ে ঝামেলা বাধে। সেই ঘটনা আমরা সমাধান করে আসি। পরে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল স্থানীয়রা ক্যাম্পাসে আসে। আলোচনার এক পর্যায়ে আবিদ, আল সামাদ শান্ত, মাহমুদুল হাসান তমালের ইন্ধনে বহিরাগতরা আমার উপরে হামলা চালায় এবং আমাকে আহত করে। ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

এ বিষয়ে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আবিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মারামারি হয়েছে মূলত ভুল বোঝাবুঝির কারণে। স্থানীয়রা মারামারি করেছে, আমরা এর সঙ্গে যুক্ত না। ঝগড়া বা মারামারি যেন না বাধে সেজন্য আমারা চেষ্টা চালিয়েছি ৷ 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. খোরশেদ আলম জানান, গতকাল রাতে সিনিয়র জুনিয়র একটা হাতাহাতির ঘটনা শুনেছি। ঘটনা জানার পরপরই আমি ক্যাম্পাসে এসে দুই গ্রুপের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেছি। এখন ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। 

সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে এখনো মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে দুই গ্রুপ। ক্যাম্পাস জুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সর্তক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ।