বহিরাগতদের উৎপাতে ব্যহত পবিপ্রবি জার্মপ্লাজমের গবেষণা কার্যক্রম

পবিপ্রবি
জার্মপ্লাজম কেন্দ্র  © টিবিএম ফটো

বহিরাগতদের নিয়ম বহির্ভূত অনুপ্রবেশ এবং গবেষণালব্ধ বৃক্ষাদির ক্ষতিসাধনে ব্যহত পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় জার্মপ্লাজম কেন্দ্রের গবেষণা কার্যক্রম। পর্যাপ্ত সংরক্ষণ ও নিরাপত্তার অভাবে দেশের অন্যতম এ বৃহৎ জার্মপ্লাজমের প্রায়শই বিভিন্ন গবেষনার ফলাফল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা শোনা যায়।

বর্তমানে সার্বক্ষণিক তালা থাকলেও তা যথেষ্ট নয় বলে অভিমত এর সংশ্লিষ্টদের। রাতে বিভিন্ন গবেষণালব্ধ ফুল, ফল ও বৃক্ষ চুরির অভিযোগ অহরহই শোনা যায়। শুধু তাই নয় এসব করতে গিয়ে জার্মপ্লাজমের নিরাপত্তা বেষ্টনী ও বিভিন্ন কক্ষের ছাউনিরও ক্ষতিসাধন করেছে এ ধরণের অনুপ্রবেশকারীরা। কাটাতার কেটে তার ভেতর দিয়ে প্রবেশের অভিযোগও রয়েছে এদের বিরুদ্ধে। 

তাছাড়া নেই পর্যাপ্ত আলোকসজ্জা। যার ফলে নজরদারিও অনেকাংশে বিঘ্নিত। এমনকি নেই মজবুত ও উঁচু কোন সীমানা প্রাচীর। কেবলমাত্র বেল, বৈচী ও বন্য বরইয়ের মতো কিছু সবুজ বেষ্টনীজাতীয় বৃক্ষ দিয়ে ঘেরাও করা রয়েছে। ফলে বহিরাগতরা অনায়াসেই এতে প্রবেশ করছে এবং না বুঝেই বিভিন্ন গবেষণালব্ধ গাছ ও ফলমূলের ক্ষতিসাধন করছে।

প্রায় ৪ একর জায়গার উপর প্রতিষ্ঠিত দেশের অন্যতম বৃহত্তর এই জার্মপ্লাজম ইতোমধ্যে সফলতার সাক্ষ্য বহন করছে। এটি ২০১২ সালে বিশ্বব্যাংকের উচ্চশিক্ষা প্রকল্প হেকেপের (HEQEP) অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পরবর্তীতে সরকারি অর্থায়নে এর কার্যক্রম চলমান আছে।

জার্মপ্লাজমটি স্থানীয় ফলমূল ও বৃক্ষের জিনগত উন্নতি সাধনে বেশ কয়েকবছর ধরেই কাজ করে যাচ্ছে। যা পরবর্তীতে জলবায়ু পরিবর্তনে দক্ষিণাঞ্চলের খাদ্য নিরাপত্তায় আশানুরূপ ভূমিকা রাখবে বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের। ইতোমধ্যে এখানে বেশ কয়েকটি উন্নত ও উচ্চফলনশীল ফলের জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। যেগুলোর মধ্যে পিএসটিইউ বিলাতী গাব-১, পিএসটিইউ বিলাতী গাব-২, পিএসটিইউ ডেউয়া-১, পিএসটিইউ ডেউয়া-২, পিএসটিইউ বাতাবি লেবু-১, পিএসটিইউ কামরাঙ্গা-১, পিএসটিইউ কামরাঙ্গা-২, পিএসটিইউ তেঁতুল-১, পিএসটিইউ বৈচী-১ অন্যতম। 

তাছাড়া এখানে ইতোমধ্যে ৪ জন শিক্ষার্থী পিএইচডি সম্পন্ন করছে এবং আরও দুজন বর্তমানে পিএইচডি অধ্যয়নরত আছেন। একই সাথে ৪০ জন শিক্ষার্থী এ জার্মপ্লাজমের অধীনে তাদের মাস্টার্স প্রোগ্রাম সম্পন্ন করেছেন এবং বর্তমানে ১১ জন মাস্টার্সে অধ্যয়নরত আছেন। 

জার্মপ্লাজমটির নিরাপত্তা বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্তের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, যে প্রকল্পের আওতায় জার্মপ্লাজমটি রয়েছে তার অর্থায়নের মাধ্যমেই নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করার কথা। এ বিষয়ে পরবর্তীতে আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

তবে সংশ্লিষ্টরা জানান সরকারি অর্থায়নের সিংহভাগ অর্থই জার্মপ্লাজমের ব্যবস্থাপনা ও গবেষণাকার্যক্রমে ব্যয় হয়ে যায়। ফলে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার জন্য কোন কর্মী নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। 

এ বিষয়ে জার্মপ্লাজমের তত্বাবধায়ক প্রফেসর ড. মাহবুব রাব্বানী বাংলাদেশ মোমেন্টসকে বলেন, জার্মপ্লাজমটি শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের নয় বরং সমগ্র দেশের জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাগার। বর্তমান প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে বরাবরই আন্তরিক। আশা করছি জার্মপ্লাজমের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ