ঢাবি ছাত্রের ‘আত্মহত্যার চেষ্টা’, শিক্ষকের বিচার চেয়ে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৩, ০৯:৪৯ AM , আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২৩, ০৯:৪৯ AM

শ্রেণীকক্ষে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ‘অপমানিত ’ হওয়ার অভিযোগ এনে ‘আত্মহত্যার চেষ্টা’ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এহসান উল্লাহ ধ্রুব নামের এক শিক্ষার্থী। পরে ওই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করানো হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার বিচার চেয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রাত একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। আত্মহত্যার চেষ্টাকারী ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের প্রশিক্ষণ বিষয়ক উপ-সম্পাদক।
জানা যায়, ধ্রুব তার ব্যাচের এক মেয়ের সাথে ভাল বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। এক পর্যায়ে সে ওই মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব করলে সে নাকচ করে দেয়। এরপর কয়েকদিন আগে তারা বিভাগ থেকে এক শিক্ষা সফরে গিয়েছিল। সেখানে ওই মেয়ে কয়েকজন ছেলে বন্ধুর সাথে ‘নেশা করে’ তাদের সাথে ‘রাত্রি যাপন’ করেছিল বলে এরকম গুঞ্জন উঠে যা তাদের বিভাগে কেউ এটা ছড়ায়। পরে এটা ছড়ানোর জন্য ধ্রুবকে দায়ী করে ক্লাসের মধ্যে এ সম্পর্কে জানতে চান ওই বিভাগের শিক্ষক ও আয়োজকের দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক তানজীম খান। এতে সে ব্যথিত হয়ে আত্মহত্যার কথা জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেয়।
আরও পড়ুন: বাস ভাঙচুর করায় আইডিয়ালের সাইনবোর্ড খুলে ফেললো ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা
ফেসবুকে ধ্রুব লিখেছেন, 'মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সালাম জানবেন। খুব ইচ্ছা ছিল আমার সাথে দেখা করার। একটা ছবি তোলার। পূরণ হলো না। সব ইচ্ছা পূরণ হয় না। আপনার কাছে আমার সাথে হওয়া অন্যায়ের বিচার দিয়ে গেলাম। প্রিয় তানজিম স্যার, আপনার ওপরে আমার রাগ নেই। ভালো থাকবেন।’
ধ্রুব আরও লিখেন, 'বাবা-মা, ক্ষমা করে দিও। ভেবেছিলাম দোকান ঘুরে ঘুরে দু’একটা করে কিনবো। এক দোকানই দু’পাতা বিক্রি করলো। যদি ঔষধে ভেজাল না থেকে থাকে, তাহলে এন্ড অব দ্যা জার্নি।’
ধ্রুবের ফেসবুক পোস্টের পর রাত একটার দিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দিতে থাকেন। এসময় তারা অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খানের বিচার দাবি করেন।
এ নিয়ে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত তার ফেসবুক পেইজে লিখেছেন,‘আমার ভাইয়ের কিছু হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ছাত্রলীগেরও রক্তের মূল্য আছে। প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে রক্তের মূল্য আদায় হবে। জয় বাংলা।’
তবে ওই বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান নির্দোষ দাবি করে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। ফারহানা শাহনেওয়াজ নামের এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ’তানজিম স্যারের বিরুদ্ধে না জেনে আজেবাজে মন্তব্য না করতে অনুরোধ করছি। আজকের ক্লাস যারা করেছি, শুধু তারাই জানি ব্যাপারটা একজন শিক্ষকের স্বাভাবিক শাসনসুলভ আচরণ ছিলো। আমরা প্রায় ৫০+জন শিক্ষার্থী সাক্ষী। ছাত্রলীগ প্রসঙ্গে স্যার কোনো কথাই উচ্চারণ করেননি! ধ্রুবকে পাওয়া গিয়েছে, দোয়া করবেন ওর সুস্থতার জন্য।’
এ বিষয়ে অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন বলেন, বিভাগের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের নিয়ে ট্যুরে গিয়েছিলাম। এ নিয়ে ধ্রুব তাঁর রুমে এসে এক সহপাঠীকে নিয়ে কটু কথা বলে। এ সময় তাকে সতর্ক করে দেওয়া হয়। পরে জানা যায় এহসান যাকে নিয়ে মিথ্যা বলছে তাকে পছন্দ করতো, প্রেমের প্রস্তাবও দিয়েছে। রাজি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ ছিল। তাকে বুঝিয়েছি, ফুচকাও খাইয়েছি। বাবার সঙ্গেও কথা হয়েছে আমার। এখন রাতে ফেসবুকে আত্মহত্যার কথা লিখেছে।