অধ্যাপক ইমতিয়াজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ঢাবি ছাত্রলীগের স্মারকলিপি প্রদান
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৩, ০৪:০৮ PM , আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৩, ০৪:০৮ PM

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদের বইয়ে বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও গণহত্যা সম্পর্কে ‘অসত্য ও বিকৃত’ তথ্য উপস্থাপনের অভিযোগে আইনগত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।
আজ বুধবার (৬ এপ্রিল ) তিনটায় এ দাবি জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ। এসময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত প্রমুখ।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদের রচিত বইয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীন বাংলাদেশ তৈরির দীর্ঘ সংগ্রাম, ৭ই মার্চের ভাষণকে অবমূল্যায়ন করা হয় এবং একাত্তরে এদেশে পাকিস্তানিদের দ্বারা সংঘটিত গণহত্যা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয় এমন বেশ কিছু বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করেছেন বলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গোচরীভূত হয়েছে।’
এতে বলা হয়েছে, ‘ড. ইমতিয়াজ আহমেদ তার লেখা বইয়ে ( Historicizing 1971 Genocide: State Versus Person, Dhaka, Janu-ary 2009) উল্লেখ করেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একাত্তরের ৭ই মার্চের ভাষণ শেষে 'জয় পাকিস্তান' বলেছেন; আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে বাংলাদেশে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পরিচালিত গণহত্যাকে 'গণহত্যা' বলা যাবে না এবং একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের সংখ্যা নিয়েও ড. ইমতিয়াজ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।’
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘ড. ইমতিয়াজ জাতির পিতার দীর্ঘ সংগ্রাম, ৭ই মার্চের ভাষণ, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের দ্বারা সংঘটিত একাত্তরের গণহত্যা ইত্যাদি নিয়ে বেশ কিছু মিথ্যা রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃত জাতীয় ইতিহাসের বিকৃতি ঘটানো মন্তব্য করেছেন যা একেবারেই ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। যেমন, একাত্তরের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক বক্তৃতার সমাপ্তিতে বঙ্গবন্ধু 'জয় বাংলা'র সাথে জয় পাকিস্তান বলেছেন বলে দাবি করেছেন ড. ইমতিয়াজ।’
‘এছাড়াও তখনকার পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের অধিবাসীদের মধ্যে বিয়ে হতো, দুই অংশের মধ্যে সাংস্কৃতিক অনেক মিল ছিল, উর্দুর সঙ্গে বাংলাও পাকিস্তানের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা ছিল, দুই অংশের অধিবাসীদের মধ্যে নৃতাত্ত্বিকও অনেক মিল ছিল এ ধরনের উদ্ভট দাবীও তিনি তার বইয়ে করেছেন; কখনো নিজের বরাতে, কখনো অন্যের মুখে শুনেছেন দাবী করে লিখেছেন।’
এতে বলা হয়, ‘উল্লেখিত বিষয়গুলো মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে চূড়ান্তভাবে মীমাংসিত হয়েছে। জাতির পিতার অবদানকে অবমূল্যায়ন কিংবা স্বাধীনতা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের মীমাংসিত ইতিহাস নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টাকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধের শামিল মনে করে ও তীব্র ধিক্কার জানায় এবং এধরনের অপচেষ্টার পেছনে কোনো গূঢ় ষড়যন্ত্র রয়েছে এমন সন্দেহ পোষনের অবকাশ রয়েছে বলে মনে করে।’
অধ্যাপক ইমতিয়াজের বিচারের দাবিতে ছাত্রলীগ দুইটি দাবী স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেছে। দাবিগুলো হলো-
১. অনূর্ধ্ব ১৫ দিনের মধ্যে ড. ইমতিয়াজ আহমেদের বিরুদ্ধে তদন্তের মাধ্যমে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টার কার্যকারণ উদ্ঘাটন ও প্রতিবেদন প্রকাশ করা;
২. ড. ইমতিয়াজ আহমেদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযথ আইনানুগ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বাংলাদেশ মোমেন্টসকে বলেন,‘ আমরা অধ্যাপক ইমতিয়াজের বিরুদ্ধে আইনানুগ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে উপাচার্য স্যারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। স্যার ব্যবস্থা নিবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।’