ঢাবির বঙ্গবন্ধু হলের পুকুরপাড়ে ৪ গ'লাকা'টা বিড়ালছানা, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

ঢাবি
মৃত পড়ে থাকা বিড়ালছানা  © টিবিএম ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের পুকুরপাড়ের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে কবি জসিম উদ্দীন হল মাঠ সংলগ্ন স্থানে গলাকাটা অবস্থায় ৪ বিড়ালছানাকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। একে বিবেকহীন ও নিষ্ঠুর আখ্যা দিয়ে বিচার দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে হল বঙ্গবন্ধু ও জসীম উদ্দিন হল প্রশাসন।

আজ শুক্রবার (২৬ মে) দুপুর দুইটার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গলাকাটা অবস্থায় ৪ বিড়ালছানার নিথর দেহ পড়ে আছে। গলায় বড় ক্ষত। রক্ত শুকিয়ে জমে গেছে। তবে বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর তিনটার দিকে বিড়ালছানাগুলো অজ্ঞাত ব্যক্তি সড়িয়ে ফেলে বলে জানান বঙ্গবন্ধু হলের কেয়ারটেকার রবিউল ইসলাম।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আমিরুল ইসলাম দ্য বাংলাদেশ মোমেন্টসকে বলেন, গতকাল আমি ও আমার বন্ধু আবদুল লতিফ মিলে রাত সাড়ে ৯টার দিকে গাছতলায় বসে একটু গল্প করার জন্য বঙ্গবন্ধু হল পুকুর পাড়ের দক্ষিণ পাশে বসি। একটু পর ৩/৪ জন ভাই ওদিকে হেঁটে যাওয়ার পথে তারা জবাই করা বিড়ালছানা গুলো দেখতেছিলো। তখন আমি আমার বন্ধুকে দেখে আসতে বলি। ঘটনাক্রমে আমাদের সাথে আরেক বন্ধু যুক্ত হওয়ায় আমরা গল্প করতে করতে রাত ৪টা বেজে যায়। হঠাৎ দেখি একটি মা বিড়াল তার ছানাগুলোর খোঁজ পাওয়ার জন্য এদিক-সেদিক ঘোরাঘুরি করতেছে।
 
সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের জাহিদ হাসান নামের এক শিক্ষার্থী জানান, ‘জসীমউদ্দীন হল মাঠের উত্তরপাশে বিড়ালের বাচ্চাগুলোকে কে যেনো মেরে রেখে গেছে। গতকাল সন্ধ্যায় টিউশনে যাওয়ার পথে আমি জসীমউদ্দীন হলের গার্ডেনে বাচ্চাগুলোকে দেখে ছবি তুলে রাখি। আজকে দেখি বাচ্চাগুলোকে মেরে ফেলছে। নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে। সাথে সাথে পোষ্ট দিয়ে নিরাপদ জায়গায় রেখে দিলে হয়তো এমনটা হতোনা। আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুক। কি দরকার ছিলো নিরীহ প্রাণীগুলোকে মারার? আমি সন্দেহ করতেছি জসীমউদ্দীন হলের যেকোনো কর্মচারী এই কাজটা করছে। কারণ বাচ্চাগুলো তখন হলের শহীদ মিনারের ওই পাশটাতে ছিলো।

এদিকে এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানান হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আকরাম হোসেন। তিনি বাংলাদেশ মোমেন্টসকে বলেন, আমি এটা শোনার সাথে সাথে ওখানে হলের কেয়ারটেকারকে পাঠিয়েছি। আমি তাদের সিসি টিভি ফুটেজ দেখতে বলেছি। আমরা চেষ্টা করছি যারা এই জঘন্য কাজটি করেছে তাদেরকে চিহ্নিত করতে। চিহ্নিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, এটা জসীম উদ্দিন হলের দেয়ালের সাথেই ফেলা হয়েছে। যারা এটা ফেলেছে তারাই আবার সেটা এখান থেকে নিয়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে।

কবি জসীম উদ্দিন হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শাহীন খান‌ বাংলাদেশ মোমেন্টসকে বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। সিসি টিভি ফুটেজ দেখে দোষীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করতেছি। এটা মেনে নেয়া যায় না। খুবই নিষ্ঠুর ও জঘন্য কাজ করেছে।

এদিকে ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হতে দেখা যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের। এটিকে নিষ্ঠুর ও অমানবিক আখ্যা দিয়ে জড়িতদের বিচার দাবি করেছেন তারা।


মন্তব্য