ফোনালাপ ফাঁসে আবারো বিতর্কিত চবি ছাত্রলীগ সভাপতি, কর্মীকে কুপানোর অভিযোগ

চবি
  © ফাইল ছবি

বিতর্ক আর  চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল একে অপরের সাথে যেন অঙ্গাঅঙ্গি ভাবে জড়িত। এবার তিনি বিতর্কিত নিজের কর্মীকে কোপানোর স্বীকারোক্তি দিয়ে। বুধবার (৭ জুন) রাতে এমন একটি অডিও ফাঁস হয়। যাতে শাখা ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ও নিজ গ্রুপ সিএফসির কর্মী মোহাম্মদ রমজান হোসাইনকে কোপানোর কাজ তিনি করিয়েছেন বলে শিকার করেন।

এদিকে এ ঘটনার জেরে রাতেই তাকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত করেন বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা ‘রুবেল নিপাত যাক, চবি ছাত্রলীগ মুক্তি পাক’, ‘অবৈধ সভাপতি মানি না মানবো না’, ‘নৈতিকতাহীন সভাপতি, মানি না মানবো না’ স্লোগান দেন। পরে রুবেলের বিশ্ববিদ্যালয়ের আমানত হলের ৩১১ নম্বর কক্ষে ভাঙচুর করেন।

এর আগে ১ জুন শাখা ছাত্রলীগের দুই উপগ্রুপ সিএফসি ও সিক্সটি নাইনের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সেখানে মারাত্মকভাবে কুপিয়ে আহত করা হয় শাখা ছাত্রলীগের উপদপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ রমজান হোসাইনকে।

ভাইরাল হওয়া অডিওতে রেজাউল হক রুবেল বলেন, ‘তাকে (রমজান) বিভিন্ন মানুষ আয়ত্তে নিয়ে নিছে। নিজের ........(স্ল্যাং) নিজেই মারি ফেলবে। রমজাইন্নারে মারতে হইছে আমার? আমারে চিটাগাং ভার্সিটির সবাই ভয় পাইরে ভাই, ভয় পায়। তুই শুধু আমার পাশে থাক। বাকি কাজ অটো হয়ে যাবে। রমজাইন্নারে কোপ পড়ছে না? অনেক লাফাইছে না? লাফাইছে রমজান। ওই হিসেবে পড়ি গেছে। সবকিছু মুখে বলতে হবে কেন? চুপ করে থাক না। আমারে দাঁড়াইতে দে। দেখবি অনেকে হিসাবের মধ্যে হয় পায়ে এসে পড়বে নয়তো নিজের মতো নিজের হিসাব মিলাই নিবে"। ফোনালাপ টি ইতিপূর্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল।

এর আগেও বিভিন্ন অপকর্মের জন্য সমালোচিত হয়েছিল রেজাউল হক রুবেল। নিজের আপত্তিকর ছবি ছড়িয়ে পড়া,ছাত্রত্ব না থাকা সত্ত্বেও ক্যাম্পাসে থাকার জন্য 'আদু ভাই' তকমা সহ কমিটি মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়া সহ নানাবিধ অভিযোগে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ব্যক্তিগত ভাবে রুবেল কে সতর্ক করেছিল।

কিন্তু ফোনালাপ দিয়ে আবারো আলোচনায় চবি ছাত্রলীগ সভাপতি। ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাদাফ খান বলেন-‘অডিওতে স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে রুবেল রমজানকে ষড়যন্ত্র করে কুপিয়েছে এবং তা গর্বের সঙ্গে শিকার করছে। নিজ গ্রুপের কর্মীকে যখন একজন ছাত্রলীগ নেতা ব্যক্তিগত বিদ্বেষ থেকে হামলা করাতে পারে তার কাছে এতো বিশাল ইউনিটের ছাত্রলীগকর্মীরা কীভাবে নিরাপদ? মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার কারণে তার আসলেই এখন কোনো দায়বদ্ধতা নেই। সে নিজের ফায়দা হাসিল করতে চাচ্ছে। খুব দ্রুত এ মেয়াদহীন বিতর্কিত কমিটি বাতিলের দাবি জানাই।’

তবে এই বিষয়ে সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন -, ‘ফোনকল রেকর্ডটি সুপার এডিটেড। এগুলো আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আমার বিভিন্ন কথাবার্তাকে সংযোজন বিয়োজন করে এই অডিও রেকর্ডটা বানানো হয়েছে।’

উল্লেখ্য যে ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই ১ বছরের জন্য  ঘোষিত কমিটিতে রেজাউল হক রুবেল সভাপতি ও ইকবাল হোসেন টিপু কে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ১ বছর পেরিয়ে এখন কমিটির বয়স চার বছর।