জাবিতে ছাত্রী হেনস্তার ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল আটক
- জাবি সংবাদদাতা
- প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৩, ০১:৫৮ PM , আপডেট: ১২ জুন ২০২৩, ০১:৫৮ PM

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় এক ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে এক পুলিশ কনস্টেবলকে আটক করা হয়েছে। রোববার (১১ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন সংলগ্ন সড়কে এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবলের নাম মেহমুদ হারুন। তিনি নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইনসে কর্মরত।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন সংলগ্ন সড়কে এক নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করেন ঐ পুলিশ কনস্টেবল ও তার সাথে থাকা এক যুবক, বিদ্যুৎ চৌধুরী। এ সময় ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী মীর মশাররফ হোসেন হলে অবস্থানরত বন্ধুদের কল করেন এবং অভিযুক্তদের মীর মশাররফ হোসেন হল সংলগ্ন দোকানের সামনে দেখেন। এসময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এবং তার বন্ধুরা তাদের ধাওয়া করলে অভিযুক্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল সংলগ্ন ফটক দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন।
এ সময় পুলিশ কনস্টেবলের সাথে থাকা ব্যক্তি পলিয়ে গেলেও ঐ কনস্টেবলকে ধরে ফেলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। পরবর্তীতে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখায় হস্তান্তর করা হয়।
ভুক্তভোগী ঐ নারী শিক্ষার্থী বলেন, 'আমি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনের সমানের রাস্তা দিয়ে হলে ফিরছিলাম। বোটানিক্যাল গার্ডেনের সামনে মোড়ে যখন আসি তখন দু'জন লোক আমার গতিরোধ করে এবং আমি ক্যাম্পাসের কি না জিজ্ঞাস করে। আমি তাদের পরিচয় দেই। কিন্তু পরক্ষণেই তাদের আচরণে বুঝি যে উনারা ক্যাম্পাসের না। আমি চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে তারা এসময় আমার পথ আটকায় এবং আমাকে হেনস্তা করা শুরু করে। এক পর্যায়ে আমাকে "জঙ্গলে চলো" সহ এরকম আরও যৌন নিপীড়নমূলক এবং আপত্তিকর বিভিন্ন কথা বলা শুরু করে এবং আমার ফোন নাম্বার চায়। ওই মূহুর্তে আমি একটা রিকশা দেখে দ্রুত রিকশায় উঠে স্থান ত্যাগ করতে চাইলে তারা বার বার রিকশা থামায় এবং আমার নাম্বার দিতে জোরাজুরি করে। এক পর্যায়ে আমি কোনভাবে রিকশাওয়ালার সহয়তায় ওই স্থান ছেড়ে মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে এসে আমার বন্ধুদের কল দেই। এসময় হলের সামনের চায়ের দোকানে ঐ দুই ব্যক্তিকে আবার দেখতে পাই এবং তাদের ধরতে উদ্যত হলে তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় আমি এবং আমার বন্ধুরা একজনকে ধরতে পারি এবং বাকি একজন পালিয়ে যায়।
অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল মেহমুদ হারুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার কাছে অভিযোগ স্বীকার করেছেন। এসময় তার কাছে অবৈধভাবে ব্যবহার করা হ্যান্ডকাপ, ওয়াকিটকি এবং আইডি কার্ড পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন বলেন, 'অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য প্রাথমিকভাবে তার দোষ স্বীকার করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরপূর্বক তাকে আশুলিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।'
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, 'আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি অবহিত হয়েছি। সে যা করেছে তা আমাদের পুলিশদের জন্য অসম্মানের। অফ ডিউটিতে থাকাকালীন সে ওয়াকিটকি ও হ্যান্ডক্যাফ ব্যবহার করেছে, যা অবৈধ। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে সে যেন সর্বোচ্চ শাস্তি পায় সে ব্যবস্থা করা হবে।'