রক্তের বাঁধনে জাবির সেচ্ছাসেবী সংগঠন

ক্যাম্পাস
রক্তের বাঁধনে জাবির সেচ্ছাসেবী সংগঠন  © টিবিএম ফটো

একের রক্ত অন্যের জীবন, রক্তই হোক আত্মার বাঁধন এই প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে শিক্ষার্থীদের গড়া রক্তদানের একটি সংগঠন বাঁধন। এরই সাথে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাঁধন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) জোন।

বাঁধন জাবি জোন ধারাবাহিকভাবে তাদের কাজের অগ্রগতি চলমান রেখেছে। সাংগঠনিক সূত্র হতে জানা যায় ২০২২ সালে বাঁধন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় জোনের মোট সংগৃহীত রক্তের পরিমাণ ছিল প্রায় ২৮০০ ব্যাগ। রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করা হয়েছিলো প্রায় ১২ হাজারের মতো।

শুধু রক্তদান আর রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ই নয় এর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কর্মকাণ্ডের জন্য এই সংগঠনটির জনপ্রিয়তা রয়েছে সাড়া ক্যাম্পাস জুড়ে। এরই ধারাবাহিকতায় বাঁধন জাবি জোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ সেশনের ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচি পালন করছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বাঁধনের কর্মীরা বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের মোবাইল-ফোন, ব্যাগ ও অন্যান্য সামগ্রী সংরক্ষণ করছে, যেগুলো নিয়ে পরীক্ষার হলে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার হলে পৌঁছানোর দিকনির্দেশ প্রদান, অভিভাবকদের সাময়িক বিশ্রামের ব্যবস্থা, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়সহ নানা সেবামূলক কাজ করছে।

তাদের সার্বিক কার্মসূচির বর্ণনা করে বাঁধন জাবি জোনের সভাপতি মুজতাহিদ হোসেন বলেন, বাঁধন জাবি জোন সবসময় চেষ্টা করে রক্তের প্রয়োজনে আসা মানুষদের পাশে দাঁড়াতে। যারা রক্তের গ্রুপ জানে না তাদেরকে জানিয়ে দিতে। আমাদের মূল কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে সবাইকে  রক্তের গ্রুপ জানিয়ে দেওয়া এবং সদ্য প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীকে স্বেচ্ছায় রক্তদানের প্রতি আগ্রহী করে তোলা।

বাঁধনের ভর্তি পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক শাহজালাল আহমেদ আকাশ বলেন, আমরা ভর্তি পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য সুপেয় পানি, বিশ্রাম, সীমিত পরিসরে মোবাইল ও ব্যাগ জমা রাখার ব্যবস্থা করেছি। পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্র খুঁজে পেতে সহায়তা করছি। এবছর এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ জনেরও বেশি ভর্তি পরীক্ষার্থীদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করেছি।

বাঁধনের হয়ে প্রথম রক্তদানের অনুভূতি প্রকাশ করে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শিমুল কুমার রায় বলেন, আমি এর আগে কখনো রক্ত দেইনি। ক্যাম্পাসে এসে প্রথম বাঁধনের ভাইদের মাধ্যমে রক্ত দিতে যাই। আসলে রক্ত দেওয়ার পর যে অনুভূতি সেটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। আমার মনে হয় রক্তের মাধ্যমে অন্যের জীবন বাঁচানোর মতো ভালো কাজ আর নেই।

প্রসঙ্গত, 'একের রক্ত অন্যের জীবন, রক্তই হোক আত্মার বাঁধন' স্লোগানকে সামনে রেখে ১৯৯৭ সালের ২৪ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যাত্রা শুরু করে স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের এই সংগঠনটি। পরবর্তীতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়ে বাঁধনের কার্যক্রম। ৫ জানুয়ারি ২০০৪ সাল থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়।