পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধে ঢাবিতে বিতর্ক প্রতিযোগিতা
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৩, ০৪:০৬ PM , আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৩, ০৪:০৬ PM

জাতিসংঘ ঘোষিত ‘পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধ দিবস’ উপলক্ষে ঢাকা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির আয়োজনে “সিআইপিআরবি -ডিইউডিএস পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধে বিতর্ক প্রতিযোগিতা-২০২৩” অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নদীমাতৃক এ দেশে পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধ সম্পর্কে সকলকে সচেতন করতে ও এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উদ্ধুদ্ধ করতে মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ অব বাংলাদেশ শাখার সহযোগিতায় আয়োজিত এ প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রিটিশ হাইকমিশন বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার ম্যাট ক্যানেল, ঢাকা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির চিফ মডারেটর ড. মাহবুবা নাসরীন ও সিআইপিআরবির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. একেএম ফজলুর রহমান।
শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি পানিতে ডুবে মৃত্য প্রতিরোধের উপর গুরুত্বারোপ করে সাঁতারকে শিক্ষাক্রমের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। পাশাপাশি, সচেতনতা তৈরির উদ্দেশ্যে আয়োজিত এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজক ঢাকা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি ও সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন এন্ড রিসার্চকে ধন্যবাদ জানান।
আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা; আন্তঃকলেজ বিতর্ক প্রতিযোগিতা; আন্তঃস্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতা- এই তিন ক্যাটাগরিতে সাজানো হয়েছিল বিতর্ক প্রতিযোগিতাটি।
ঢাকা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি মো. মাহবুবুর রহমান মাসুমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিষয় ভিত্তিক উপস্থাপন করেন ড. আমিনুর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন ডিবেটিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ফুয়াদ হোসেন।
উল্লেখ্য, মহামারির মতো জীবন কেড়ে নেওয়ার মত্ততায় নীরবে বাড়ছে পানিতে ডুবে মৃত্যুর সংখ্যা। বাংলাদেশ প্রেক্ষিতে সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন এন্ড রিসার্চ,বাংলাদেশ-CIPRB এর গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই তথ্য। কেন পানিতে ডুবে মৃত্যুর সংখ্যাকে মহামারির সাথে তুলনা করা হচ্ছে সে প্রশ্নের উত্তর মিলে পরিসংখ্যানের দিকে তাকালেই। পৃথিবীতে প্রতিবছরে পানিতে ডুবে মৃত্যু বরণ করেন ২ লাখ ৩৫ হাজার মানুষ, দিন প্রতি গড়ে ৬৫০ জন। পৃথিবীতে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর তৃতীয় প্রধান কারণ হলো পানিতে ডুবে মৃত্যু। এই দুঃখজনক মৃত্যুর প্রায় ৯০ শতাংশই নিম্নমধ্যম আয়ের দেশগুলোতে ঘটে। উচ্চ আয়ের দেশের তুলনায় যা কি-না তিনগুণ বেশি। পৃথিবীতে জুড়ে পানিতে ডুবে মৃত্যুর এই ভয়াবহ অবস্থা; এ চিত্র বাংলাদেশে আরও মারাত্মক। জরিপ মতে, বাংলাদেশে বছরে পানিতে ডুবে ১৯০০০ মানুষ মারা যায়। তন্মধ্যে ৭৬ভাগের বেশিই শিশু, আবার এর মধ্যে ৫৮ ভাগ শিশু হলো এক থেকে পাঁচ বছর বয়সী। ভয়াবহতা ঠাহর করতে পারি যখন দেখি খবরের শিরোনাম আসে “রোগে নয়, শিশুরা বেশি মারা যাচ্ছে পানিতে ডুবে"।
এমন পরিস্থিতিতে ২০২১ সালের ২৮ এপ্রিল, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভায় পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধের জন্যে একটা দিবসের দাবি উত্থাপন হয় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে; যা নিয়ে বাংলাদেশ, আয়ারল্যান্ডসহ জাতিসংঘের সদস্য রাষ্টগুলো আগে থেকেই দাবি জানিয়ে আসছিলো। এসডিজি বাস্তবায়নে সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণের লক্ষ্য অর্জনে পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও কাজ করা অধিকতর গুরুত্বের সাথে আমলে নিয়ে ২০২১ সাল থেকে আন্তর্জাতিক ভাবে ২৫ জুলাই কে পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধ দিবস ঘোষণা করে।