বুয়েটে শিবিরকে ‘চাঙ্গা’ করতেই টাঙ্গুয়ার হাওরে ট্যুর

ক্যাম্পাস
  © সংগৃৃহীত

সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে গিয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ২৪ ছাত্রসহ ৩৪ শিক্ষার্থী পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের ঘটনাটি নানামুখী আলোচনার জন্ম দিয়েছে। স্থানীয় পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, মূলত ঢাকা থেকে পাওয়া গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই অভিযান হয়েছে। এতে নেওয়া হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তাও। 

বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ ও বিভিন্ন আলামত জব্দ করার পর তাদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কাগজপত্র, সংগঠনের তহবিল-সংক্রান্ত প্রচারপত্র, সংগঠনের সাথি ও সদস্যদের পাঠযোগ্য সিলেবাস, কর্মী ঘোষণা সংক্রান্ত নথিপত্র জব্দ করা হয়।  পুলিশের দায়ের করা মামলার জব্দ তালিকায় তা উল্লেখ করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারদের মধ্যে ছাত্রশিবিরের বুয়েট শাখার বায়তুল মাল সম্পাদক আফিফ আনোয়ার রয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে সবাই হাওরে এসেছিলেন। জব্দ নথিপত্র বিশ্লেষণ ও গোয়েন্দা সূত্র জানায়, সংগঠনকে ‘চাঙ্গা’ করার উদ্দেশ্যে প্রাকৃতিক পরিবেশের সান্নিধ্য নিতে আফিফের নেতৃত্বে তারা সুনামগঞ্জ যান। সেখানে ‘মোটিভেশনাল’ নানা বক্তব্য রাখার কথা ছিল। জব্দ আলামত ও ডিভাইস পরীক্ষা করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। আফিফ বুয়েটের ম্যাটেরিয়ালস অ্যান্ড মেটালার্জিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁর বাড়ি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার মান্দারখিল  গ্রামে। 

এদিকে, গ্রেপ্তার বুয়েট শিক্ষার্থীদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাদের অভিভাবকরা। তাদের ভাষ্য, সন্তানরা নিরপরাধ। সন্তানরা কোনো ধরনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। এ ধরনের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

তবে বুয়েটের নিরাপত্তা অফিসার আফগান হোসেন বলেন, অভিভাবকরা এসেছিলেন। ভিসি ও ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তর পরিচালক পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় যতটুকু পারে সহযোগিতা করবে।  

সোমবার ওই শিক্ষার্থীদের সুনামগঞ্জের আদালতে তোলা হলে তাদের পক্ষে দাঁড়ান কয়েকজন আইনজীবী। এই আইনজীবীরা একসময় জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা ছিলেন।

সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি আইনজীবী আবুল বাশার সাংবাদিকদের বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতরা ছাত্রশিবিরের কোন পর্যায়ের নেতাকর্মী, তা এখনও আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। তাদের জন্য আইনজীবী নিয়োগের ব্যাপারে পরিবার থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।’

পুলিশের তথ্যমতে, গ্রেপ্তার ৩৪ জনের মধ্যে ২৪ জন্য বুয়েটের বর্তমান শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছয়জন প্রথম বর্ষ, ছয়জন দ্বিতীয় বর্ষ, পাঁচজন তৃতীয় বর্ষ, পাঁচজন চতুর্থ বর্ষ এবং দু’জন স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে পড়ছেন। বাকি ১০ জনের মধ্যে সাতজন বুয়েটের সদ্য সাবেক শিক্ষার্থী। অন্য তিনজনের মধ্যে দু’জন এবার এসএসসি পাস করেছে, একজন বুয়েটের এক শিক্ষার্থীর বাসায় কাজ করেন।