ঢাবির কুয়েত-মৈত্রী হলে সিট সংকট, নিরসনে শিক্ষার্থীদের আকুতি
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৩, ০৬:৪৪ PM , আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২৩, ০৬:৪৪ PM

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নারী শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দকৃত বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলে দীর্ঘদিন ধরে চলা সিট সংকট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের কাছে আবেদন জানিয়েছেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
এসময় উপাচার্যের কাছে হলের শতাধিক শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর সম্বলিত একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন শিক্ষার্থীরা। স্মারকলিপি প্রদান শেষে বিকাল সাড়ে তিনটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে করেন শিক্ষার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা জানান, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল মেয়েদের হলগুলোর মধ্যে সব থেকে ছোট হল। বছরের পর বছর ধরে এই হলের শিক্ষার্থীরা সিট সংকটের ভুক্তভোগী হয়ে আসছে। এই হলে সিট বরাদ্দ পাওয়া শিক্ষার্থীরা ৩য় বর্ষের পূর্বে বৈধ সিট বরাদ্দ পায় না। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের তিনটি বছর বাহিরে থাকার ব্যবস্থা করতে অপারগ শিক্ষার্থীরা হলের কথিত অতিথি কক্ষে মানবেতর জীবনযাপন করছে। বর্তমানে আমাদের হলের সিট সংকট চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলার পর্যায়ে পৌঁছেছে। ২০১৯-২০ সেশনের ৩৫ জন শিক্ষার্থী এখনো অতিথি কক্ষে অবস্থান করছে।
“দুঃখজনক হলেও সত্য যে তারা ৪র্থ বর্ষে উঠেও এখনো বৈধ সিট পায়নি। ২০২০-২১ সেশনের একাংশকে বৈধ সিট দেওয়া হয়েছে যারা বর্তমানে ৩য় বর্ষে অধ্যয়নরত। ২০২১-২২ সেশনের বৈধ সিট দেওয়ার প্রক্রিয়া এখনো প্রশ্নাতীত। এমতাবস্থায়, ইতোমধ্যে ২০২২-২৩ সেশনকে এই হলে অ্যালোটমেন্ট দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ চারটি সেশনের শিক্ষার্থীরা মৈত্রী হলের সিট জটিলতায় তাদের বৈধ সিটের অধিকার হারাতে বসেছে।”
সিট সংকটের বর্ণনা দিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, মৈত্রী হলের মূল ভবনে ৫ টি অতিথি কক্ষে থাকেন ১০০ জন শিক্ষার্থী। ১০০ জনের জন্য রয়েছে মাত্র ৩টি ওয়াশরুম এবং ঝুকিপূর্ণ বসবাস অনুপযোগী সিকদার মনোয়ারা ভবনের তিনতলার ১৫ টি অতিথি কক্ষে বর্তমানে ১১০ জন শিক্ষার্থী অবস্থান করছে এবং তাদের জন্য রয়েছে মাত্র ২টি ওয়াশরুম। সময়বিশেষে সেখানে প্রতি রুমে ৩০জনের অধিক শিক্ষার্থী অবস্থান করার বাস্তবতা বর্ণনা করছে সেখানে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীরা এবং একই ভবনের দোতলায় একরুমের ২৪ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১ টা ওয়াশরুমের ব্যবস্থা আছে। অথচ হল প্রশাসন থেকে এই ভবনে শিক্ষার্থীদের উঠতে নিষেধ করা হয়। অপরদিকে এই ভবনের জন্য একজন হাউজ টিউটরও নিয়োগ দিয়েছে হল প্রশাসন।
সিট সংকটে নিরসণে শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি জানান। তাদের দাবিগুলো হলো-মৈত্রী হলের অতিথি কক্ষগুলোর করুণাবস্থা ও সংকটকে নিরসনের জন্য অন্তত ৩০০ জন শিক্ষার্থীকে অন্য হলে এক মাসের মধ্যে স্থানান্তরের মাধ্যমে বৈধ সিট নিশ্চিত করা; পরবর্তীতে মৈত্রী হলের সিট সংখ্যার সাথে সমন্বয় রেখে শিক্ষার্থী অ্যাটাচমেন্ট দিতে হবে, যাতে ভর্তি হওয়ার ৬ মাসের মধ্যে বৈধ সিট নিশ্চিত করা যায়; মৈত্রী হলের সার্বিক সংকট বিবেচনায় মূলভবনের প্রতি রুমে ৬ জনের বেশি শিক্ষার্থী বরাদ্দ নিয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করা যাবেনা।
দাবিগুলো মেনে নেয়া না হলে ১৪ আগস্ট ভিসি চত্বরে একটি মানববন্ধন করার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। তারা আরো জানান, হলের অতিথি কক্ষে শিক্ষার্থীদের চাপ কমানোর জন্য বর্তমানে মূলভবনের রুমগুলোতে একরুমে ৬ জনের জায়গায় ৭ জন সিট বরাদ্দ করা হয়েছে। যা পড়াশোনা ও থাকা খাওয়ার পরিবেশকে আরো সংকীর্ণ করছে।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, তারা আমার কাছে খুব যৌক্তিক দাবি উপস্থাপন করেছিল। তারা যে কথাগুলো বলেছে অনেক সুন্দর বলেছে। আমাদেরকে অনেক ভালো সিদ্ধান্ত নিতে সহযোগিতা করবে। ওদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে হলের। ফলে ওই মেয়েদের প্রতি আমাদেরকে বিশেষ নজর দিতে হবে বিভিন্ন দিকে।