প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে খুলতে যাচ্ছে চবির নতুন দুই ছাত্র হল
- চবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:৪৩ PM , আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:১৫ PM

উদ্বোধনের প্রায় আট বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) দুই নির্মাণাধীন হল ছাত্রদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনকে উপলক্ষ করে দুইটি হল খুলে দেয়া হবে। এতে অবসান হবে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের আক্ষেপ। ঘুচবে আবাসন সংকটও। হল দুটিতে মোট এক হাজার ৫০ জন শিক্ষার্থী থাকতে পারবেন।
আগামী ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রথম পর্যায়ের নির্মাণ কাজ বুঝে নিবে চবির প্রকৌশল দপ্তর। চবিতে মোট ১২টি আবাসিক হল রয়েছে। এরমধ্যে ৭টি ছাত্রদের ও ৫টি ছাত্রীদের জন্য। ১২টি হলে মোট আসন রয়েছে ৫ হাজার ৩০৭টি। এতে মোট শিক্ষার্থীদের মাত্র ১৯ দশমিক ৩১ শতাংশ শিক্ষার্থী আবাসিক সুবিধা পায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও অতীশ দীপংকর হল চালু হলে আবাসিক সুবিধার হার ৩ দশমিক ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে আবাসন সুবিধা ২২ দশমিক ৬৪ শতাংশে উন্নীত হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৮ অক্টোবর ছাত্রদের জন্য ১৮৬ আসন বিশিষ্ট প্রায় ৪৫ হাজার বর্গফুটের দোতলা বিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের উদ্বোধন করা হয়। হলটিতে দুটি লিফট, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পাঠাগার, ৫০ কেভি পাওয়ারের জেনারেটর, ক্যান্টিন, প্রার্থনা কক্ষ, ইনডোর গেম, কমন কক্ষ, ইউনিয়ন কক্ষ, টিভি কক্ষ, ওয়েটিং কক্ষ, প্রভোস্ট কক্ষ, আবাসিক শিক্ষকদের কক্ষ, লন্ড্রি, দোকানসহ রয়েছে সব আধুনিক সুযোগ–সুবিধা। নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৯ কোটি ৭৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।
দেড় বছর পর ২০১৭ সালের মে মাস থেকে হলটির ঊর্ধ্বমুখী সমপ্রসারণের কাজ শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর মধ্যে ১৮৬ আসন বিশিষ্ট দোতলা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলকে ৭৩৮ আসন বিশিষ্ট ছয় তলা ভবন করা হয়। ফলে এর মোট আয়তন দাঁড়ায় প্রায় ১৩ হাজার ৮৪৮ বর্গ মিটার। যার নির্মাণ ব্যয় ৩৩ কোটি ১৪ লাখ ৪৭ হাজার টাকা ধরা হয়। নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হলেও আট বছরেও চালু হয়নি হলটি। যার কারণে শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্রে হলটি সংযুক্তি দেওয়া হলেও আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা নানা সময় দাবি জানিয়ে আসছিলেন হলটি খুলে দেওয়ার।
অপরদিকে ২০১৬ সালের ২১ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু হলের পাশে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় অতীশ দীপংকর শ্রীজ্ঞাম হলের। ২০১৮ সালের ৩০ মে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে হলটির প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হলেও পুনরায় বর্ধিত করে কাজের পরিধি বাড়ানো হয়। এরপর শুরু হয় দ্বিতীয় ধাপের কাজ। ৬ মাসের কাজ শেষ হয়নি প্রায় পাঁচ বছরেও। বার বার বৃদ্ধি করা হয় সময়। দীর্ঘসময় নির্মাণ কাজ আটকে থাকায় হলটিতে নষ্ট হচ্ছে লাখ টাকার সম্পদ। কয়েকবার লাখ টাকার মালামাল চুরির ঘটনাও ঘটে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদার আজাদীকে বলেন, গত মাসে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল খুলে দেওয়া হয়েছে। আরও দুইটি নির্মাণাধীন হল দীর্ঘদিন খুলে দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় হলগুলো খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলো। খুব শীঘ্রই হল দুইটি শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেয়া হবে। আর খুব শীঘ্রই সব হলের আসন বরাদ্দ নিয়েও কাজ শুরু হবে।
সার্বিক বিষয়ে চবির প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর ফজল আজাদীকে বলেন, আগামী ২০ তারিখের মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রথম পর্যায়ের কাজ বুঝে নেব। এরপর যেকোনো দিন হলে শিক্ষার্থী উঠতে পারবে। এর দুই মাসের মধ্যে দ্বিতীয় অংশের কাজও বুঝে নেয়া হবে।