জবি'র বাস গুলোয় শৃঙ্খলা আনতে বিজ্ঞপ্তি
- জবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৩:৪৯ PM , আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৩:৪৯ PM

নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের হাত থেকে রক্ষায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থীদের পরিবহনে নিয়োজিত বাসে চলাচলে একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নির্দেশনায় বাস কমিটি গঠনে শিক্ষার্থীদের প্রতি নিষেধাজ্ঞাসহ বাসে ছাত্র-ছাত্রীদের আলাদা বসার নিয়ম করা হয়েছে।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. সিদ্ধার্থ ভৌমিক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এসকল তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বই, খাতা, ব্যাগ বা রুমাল রেখে কোনো আসন দখল করা যাবে না। আগে আসলে আগে বসা সাপেক্ষে বাসে কোনো সিনিয়র-জুনিয়র হিসেবে বসা বা দাঁড়ানো যাবে না। সেইসঙ্গে ছাত্র-ছাত্রীদের বাসে কোনো কমিটিও গঠন করা যাবে না।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী বহনকারী নিজস্ব রুপালী রঙের সকল একতলা বাসের সামনের দ্বিতীয় সারি থেকে পঞ্চম সারি পর্যন্ত দুপাশের সকল আসন ছাত্রীদের জন্য বরাদ্দ থাকবে। বাকি আসনগুলো বরাদ্দ থাকবে ছাত্রদের জন্য।
এ ছাড়া বিআরটিসি হতে ভাড়াকৃত লাল রঙের দ্বিতল বাসের নিচের তলায় ছাত্রীরা ও উপর তলায় ছাত্ররা অবস্থান করবে।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে নবীন শিক্ষার্থীদের ওপর র্যাগিংয়ের অভিযোগ পাওয়া যায়। প্রকাশ্যে কেউ কাউকে র্যাগ না দিলেও প্রশাসনের চোখের আড়ালে বাসে জুনিয়রদের ওপর চলে মানসিক নির্যাতন।
তবে সুনির্দিষ্ট কারো বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ না পাওয়ায় ব্যবস্থা নিতে পারছে না বলে দাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের।
দূর্জয়, অনির্বাণ, উল্কা-১-সহ শিক্ষার্থীদের পরিবহনকারী প্রায় সকলে বাসেই এ ধরনের অভিযোগ উঠেছে। তবে দূরের গন্তব্যের বাসে র্যাগিংয়ের ঘটনা বেশি ঘটছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে ড. সিদ্ধার্থ ভৌমিক বলেন, ‘আমরা র্যাগিংয়ের অভিযোগ পাচ্ছি। আগেও বলা হয়েছে, বাসে কোনো কমিটি হবে না। তবু বিভিন্নভাবে বাসে কমিটি দেয়া হয়েছে৷ শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসার জন্য প্রজ্ঞাপনটি দেয়া হয়েছে। এখন কড়া নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যে, বাসে কোনো প্রকার কমিটি হবে না৷ ছেলে-মেয়ে একসঙ্গে বসা নিয়ে যেন সমস্যা না হয়, তাই তাদের সিটও আলাদা করে দিয়েছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে জবি প্রশাসন জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে। যদি কেউ অভিযোগ দেয়, সে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আমরা তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
‘কিছু মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। তার প্রেক্ষিতে প্রক্টরিয়াল টিম ক্যাম্পাসে নজরদারি বৃদ্ধি করেছে।’
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে নবীন শিক্ষার্থী এলে র্যাগিংয়ের ঘটনা বেড়ে যায়। নবাগত যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসে, তারা অনেক স্বপ্ন নিয়ে আসে। তাদের সুন্দর স্বপ্ন পূরণ করা আমাদের দায়িত্ব। আর এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থীরা, তাদের নির্দেশনা দিতে পারেন শিক্ষক প্রতিনিধিরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘ক্যাম্পাসে র্যাগিংয়ের অপরাধে কেউ জড়িত হলে ছাত্রত্ব বাতিলের সঙ্গে অভিভাবকদেরও জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ে না জড়ানোর জন্য দাপ্তরিক নির্দেশনা দিয়েছি। এ বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি। এরপরও যদি কেউ র্যাগিং করে, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
র্যাগিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী অভিযুক্তকে বহিষ্কার করা হবে বলে গত ৮ সেপ্টেম্বর একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে জবি প্রশাসন।