রাবি ছাত্রলীগের হল সভাপতি তন্নীকে রুম ছাড়ার নির্দেশ হল প্রশাসনের

রাবি
রহমতুন্নেসা হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না তন্নী  © সংগৃৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রহমতুন্নেসা হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না তন্নীকে তার কক্ষ ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছেন হল প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০টায় তাকে এই নির্দেশনা দেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোছা. হাসনা হেনা।

তন্নী বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্রকলা প্রাচ্যকলা ও ছাঁপচিত্র বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি রহমতুন্নেছা হলে ৪৫৯ নং কক্ষে থাকেন। তাকে সেই কক্ষ থেকে চলে যেতে বলা হয়েছে।

হল প্রসাশনের অভিযোগ রয়েছে, তন্নী হলের ৪৫৯ নং কক্ষে থাকেন। কক্ষটি চার সিটের। সেখানে একটা সিট ফাঁকা আছে। একজন শিক্ষার্থীকে সেই সিটে বরাদ্দ দিলেও উঠতে দিচ্ছেন না তন্নী। এছাড়াও তার মাস্টার্সের পরীক্ষা শেষ হয়েছে ১৭/১৮ মাস আগে। তিনি একজন রানিং শিক্ষার্থী নন। এছাড়াও হল প্রশাসন বলছেন, রহমতুন্নেছা হলে এমফিল শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো সিট বরাদ্দ নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তন্নী বলেন, “গতকাল রাত ১০টায় প্রভোস্ট ম্যাম, দুইজন পুরুষ ও হাউজ টিউটর নিয়ে আমার রুমে এসে আমাকে রুম ছেড়ে দিতে বলেছেন। ওই সময় আমার রুমের অন্য শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেছেন। ম্যাম অভিযোগ করছেন, আমার ছাত্রত্ব নেই। কিন্তু আমার ২০২৩ সালে মাস্টার্সের রেজাল্ট হয়। তারপরই আমি এমফিলের জন্য আবেদন করি। কিন্তু একাডেমিক কমিটির মিটিং না হওয়ায় আমার এমফিলের সুপারিশটা এখনো পাইনি। এই বিষয়টি আমি একাধিকবার হল প্রশাসনকে জানিয়েছি। তারপরও হল প্রশাসন এমনটা করেছে।”

তন্নী জানান, “আমার সিটে নাকি একটা প্রথম বর্ষের মেয়েকে উঠানো হয়েছে। ওই মেয়ের কাছে ডকুমেন্টস দেখতে চেয়েছি কিন্তু কোনো ডকুমেন্টস দেখাতে পারেনি। একটা প্রথম বর্ষের মেয়ে ডরমিটরিতে না থেকে কীভাবে প্রথমে রুম পায়?”

ছাত্রলীগের এই নেত্রী অভিযোগ করেন, “ মেয়েদের রুমে হল প্রভোস্ট আসতে পারেন। এটা মানলাম কিন্তু পুরুষরা কি রাত সাড়ে দশটায় একজন মেয়ের রুমে যেতে পারে? রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি নেই বলে হল প্রভোস্টরা ছাত্রলীগের মেয়েদের সাথে যা ইচ্ছা তাই ব্যবহার করতে পারে? আমি হল সভাপতি হওয়ায় বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আমার রুমে অনেক মেয়েরা আসে। ফলে তাদের জন্য হল প্রভোস্টকে বলে একটা সিট খালি রাখা হয়েছে। কিন্তু এর আগে, আমাকে হল সুপার ডেকে বলেছিলেন, কোনো সমস্যা হলে শিক্ষার্থীরা কেন তোমার কাছে যায়? তুমি আমাদের কাছে পাঠিয়ে দিতে পারো না? আমি একটা সংগঠন (ছাত্রলীগ) করি আমার কাছে শিক্ষার্থী আসতেই পারে। কিন্তু তাঁরা এই বিষয়টি ভালো চোখে দেখেন না। গতকালকের বিষয়টি আমি প্রশাসনকে জানিয়েছি। আশা করি প্রশাসন একটা ব্যবস্থা নিবে।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রহমতুন্নেসা হলের হাউজ টিউটর ড. রতন কুমার বলেন, “গতকাল আমাদের একটা মিটিং ছিল, সেখানে তন্নীর বিষয়ে আলোচনা হয়। তার চার সিটের রুমে একটা সিট ফাঁকা আছে সেখানে একজন শিক্ষার্থীকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু তন্নী তাকে উঠতে দেয়নি। এছাড়াও তার এখন আর ছাত্রত্ব নেই। প্রায় ১৭/১৮ মাস আগে তার মাস্টার্স শেষ হয়েছে। সে এমফিল করবে বলে আমাদের জানিয়েছে কিন্তু আমাদের হলে এমফিল শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো আসন বরাদ্দ থাকে না।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের মেয়েদের হলগুলো একটা নিয়ম মাফিক চলে। সেখানে যে কেউ ইচ্ছে মতো থাকতে পারে না।”

সার্বিক বিষয়ে রহমতুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মোছা. হাসনা হেনা বলেন, “এই বিষয়ে আমি এখনি কিছু বলতে চাচ্ছি না। সময় হলে আপনাদের ডেকে নিয়ে বিস্তারিত জানাব।