বৈশিক মোড়লদের আস্ফালন দুষ্টু রাখালের গল্পের মতোই; রাবি উপাচার্য 

রাবি
রাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সাব্বির সাত্তার  © সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, বর্তমানে প্রবাসী মোড়ল, যাদের মোড়ল পোনায় আমরা বিভ্রান্ত হচ্ছি। যারা আমাদেরকে ২০০ বছর শাসন করে গেছে। অনেক দেশ যাদের উপনিবেশীয়, অনেক মহাদেশের মধ্যে যাদের উপনিবেশ রয়েছে। তাদেরকে আমরা বৈশিক মোড়ল হিসাবে দেখতে পাচ্ছি। যে মমতাময়ী মায়ের হাত ধরে বাংলাদেশ এগোচ্ছে তাতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তাদের আস্ফালন আমার কাছে দুষ্টু রাখালের গল্পের মতোই মনে হয়। তারা জানেনা ১৯৭১ সালে আমরা তথাকথিত পরাক্রমশালী এক হিংস্র বাহিনীকে পরাজিত করেছি। 

বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সিনেট ভবনে আয়োজিত 'বঙ্গবন্ধু ও গণতান্ত্রিক  সমাজতন্ত্র' শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্যকালে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি  আরো বলেন, শেখ হাসিনা মানেই  উন্নয়ন, শেখ হাসিনা মানেই আমাদের বেঁচে থাকার আলোর রশ্মি। আমাদের যে সোপার্জিত স্বাধীনতা এটা কারো দানে নয়। আমাদের প্রধানমন্ত্রী চির-উন্নতমম শীর। আমাদের বাঙালীপনার বিরুদ্ধে যাবতীয় যে বিরুদ্ধোপনা তার বিরুদ্ধে তাঁর যে ধ্রিষ্ঠিত অবস্থান যা বাংলাদেশকে, বাঙালীকে একটা লক্ষ্যের দিকে নিয়ে যাবে বলে মনে করি। 

বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার বিশেষত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু-বঙ্গবন্ধু বলে ফ্যানা তোলা নয় তাঁকে জানা-উপলব্ধি করা, নিজেদের মধ্যে প্রাত্যহিক জীবনে তার প্রতিফলন ঘটানো। বাংলাদেশের অতীত, বর্তমান এবং আগামীতে যে ভবিষ্যতে রচনা হবে সেটিও পিতা-কন্যার যৌথ প্রযোজনা। মুজিব-হাসিনার যে যূথবদ্ধার যে ছবি আঁকা হয়েছে তাতে রয়েছে মানবমুক্তির পথ।

মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন বলেন, যদিও পুঁজিবাদ থেকে একসময় একচেটিয়া পুঁজিবাদ  গড়ে ওঠে কিন্তু পুঁজিবাদ এবং একচেটিয়া পুঁজিবাদ গ্রহণ করা দুটি ভিন্ন বিষয় । বঙ্গবন্ধুর অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিলো একচেটিয়া পুঁজিবাদ গ্রহণে সম্মতি না দেওয়া। এবং এক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু কোন ছাড় দিতে রাজি ছিলেন না। কারণ পাকিস্তান আমলের ২২ পরিবার গড়ে ওঠার অভিজ্ঞতা তার মনে একদম দগ্ধভাবে গেঁথে ছিলো। 

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু একচেটিয়া পুঁজিবাদ গড়ে উঠতে দিলে তার মালিকরা  রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হয়ে উঠতো এবং ছোট, বড়, মাঝারি কোন পুঁজিরই বিকাশ ঘটতো না।

এসময় সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের সাথে আরো অনেকদিন থাকবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি। আজকে এত দুঃখ কষ্ট বুকের যন্ত্রণা নিয়েও প্রধানমন্ত্রী বাংলার মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য আমাদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। যাদের কাছ থেকে তিনি দুঃখ কষ্ট পেয়েছেন আজকে তাদের চিকিৎসার জন্য তিনি আদালতের রায় উপেক্ষা করে যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তা আমাদের সবার জন্য চিরস্মরণীয় এবং শিক্ষনীয় হয়ে থাকবে। 

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ, সন্ত্রাসবাদে, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো এবং তাদের মুখে দুমুঠো অন্ন তুলে দেবার বিষয়ে আপোষহীন। শেখ হাসিনার হাত ধরেই আমরা অর্থনৈতিক মুক্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর সুদূরপ্রসারী চিন্তার ফলেই তিনি আমাদের জন্য ২১০০ সালের ডেল্টা প্ল্যান তৈরি করেছেন। যতদিন শেখ হাসিনার হাতে বাংলাদেশ আছে ততদিন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা নিরাপদ থাকবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার অধ্যাপক আব্দুস সালামের সঞ্চালনায় এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ওবায়দুর রহমান প্রামাণিক, জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার পাণ্ডে, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম সাউদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকসহ প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, সকাল ১০ টায় শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃক্ষরোপণ করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার।