নামসর্বস্ব দলে হতে যাচ্ছে ছাত্রদলের জোট

ক্যাম্পাস
ছাত্রদলের জোট  © ফাইল ফটো

নাম সর্বস্ব ছাত্রসংগঠনগুলোকে নিয়ে জোট গঠন করতে যাচ্ছে বিএনপির অঙ্গসংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল রাজনৈতিক মাঠে এমন গুঞ্জন এখন বেশ চাউর। বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের আন্দোলনকে আরো বেগবান করার জন্য এ জোট গঠন করতে যাচ্ছে ছাত্রসংগঠনটি। তবে  এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। প্রশ্ন উঠেছে নামসর্বস্ব এসকল ছাত্রসংগঠনগুলোকে নিয়ে কি আদৌও আন্দোলন সফল করা যাবে?

সূত্র জানায়, ১৫টি নামসর্বস্ব দল নিয়ে জোট গঠন করতে যাচ্ছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। গতকাল বৃহস্পতিবার  রাতে এই ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় করেন ছাত্রদলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা। পরবর্তীতে আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় ‘জোট গঠন হওয়ার কথা রয়েছে। একই সঙ্গে ‘ফ্যাসিবাদীবিরোধী ছাত্র ঐক্য’নামে জোটটি তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন বলে জোটের একাধিক শরীকরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান। 

জোটভুক্ত হতে যাওয়া ছাত্রসংঠনগুলো হলো- ছাত্রদল, ছাত্র ফেডারেশন, জেএসডি ছাত্রলীগ, নাগরিক ছাত্রঐক্য, ভাসানী ছাত্র পরিষদ, বিপ্লবী ছাত্রসংহতি, রাষ্ট্র সরকার ছাত্রআন্দোলন, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ছাত্র ফোরাম (মন্টু), জাতীয় ছাত্রসমাজ (কাজী জাফর),জাগপা ছাত্রলীগ(রবিউল), গণতান্ত্রিক ছাত্রদল (এনডিপি), জাতীয় ছাত্র সমাজ (বিজেপি, পার্থ),জাগপা ছাত্রলীগ (লুৎফর)। 

ছাত্রদলের জোট গঠন নিয়ে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ সকল বেনামী বা নামসর্বস্ব দল দিয়ে জোটগঠন করে সরকার বিরোধী আন্দোলন সফল করা সম্ভব কিনা প্রশ্ন থেকে যায়। বামপন্থী দলগুলো মধ্যেকার যে বিভেদ তারা নিজেদের মধ্যেই ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারে না। তারা কিভাবে জোটে অংশ নিয়ে আন্দোলন সফল করবে। আর যে সকল নামসর্বস্ব ছাত্রসংগঠন জোটে আসছে তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে নিজের আখের গোছানো। 

তারা আরো জানান, ছাত্রদলের মত প্রতিষ্ঠিত সংগঠন যদি এমন নামসর্বস্ব ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে জোট গঠন করে তাহলে ছাত্র ও তরুণদের কাছে সংগঠনটি হাসির পাত্র হবে। যেমনটি এর আগে ২০২২ সালের জুলাই মাসে বিএনপি বেশ কয়েকটি নামসর্বস্ব দলের সঙ্গে বৈঠক করায় তাচ্ছিল্য করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছিলেন, নামসর্বস্ব দলের সঙ্গে বৈঠকই বিএনপির রাজনৈতিক সংকটের প্রমাণ। নাম সর্বস্ব দলের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি প্রমাণ করেছে যে তারা চরম রাজনৈতিক সংকটে রয়েছে।

এদিকে ইসলামী শাসনতন্ত্রসহ কয়েকটি ইসলামী সংগঠনের ঢাকা কেন্দ্রীক প্রভাব প্রতিপত্তি থাকলেও তাদেরকে জোটে নেওয়া হচ্ছে না কারো কারো স্বার্থে। ছাত্রদল ও বিএনপির এক অংশ চাইলেও আরেক অংশ চায়না ইসলামী দল ভিত্তিক ছাত্র সংগঠনগুলো তাদের সঙ্গে আসুক।

এদিকে ছাত্র জোট হলেও ছাত্র রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তেমন কারোই কোনো অবস্থান নেই। কর্মসূচি নেই। তাদের নিয়ে জোট হলে সফল হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে মত সংশ্লিষ্টদের। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলও বিষয়টি এখনো কিছুই জানে না। তাদেরকে এক প্রকার বাইরে রেখে জোটের কার্যক্রম করা হচ্ছে।

ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল বলেন, ছাত্র ঐক্যের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। আমাদের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিষয়টি দেখছেন। সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বলেন, আমাদের বৈঠকে রাখা হয়নি তাই বিষয়টি আমাদের জানার বাইরে।

ঢাবি ছাত্রদলের শীর্ষ এক নেতা বলেন, ছাত্র জোট হচ্ছে আমাদের এখানে রাখা হচ্ছে না, বৈঠকে কি হচ্ছে না হচ্ছে আমরা জানি না। ভালো কয়েকটা সংগঠনকেও রাখা হচ্ছে  না। এই জোট নিয়ে আমরা সন্দিহান। 

এ বিষয়ে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান ও সাধারণ সম্পাদক সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।