ঢাবি বঙ্গবন্ধু হলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

ঢাবি
ঢাবি বঙ্গবন্ধু হলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার আজ মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে প্রধান অতিথি হিসেবে এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন।

খেলায় যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন দর্শন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মো. রামু বাবু এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের স্নাতক (সম্মান) ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম সিয়াম। এই প্রতিযোগিতায় রানার্স-আপ হয়েছেন শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের স্নাতক (সম্মান) ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মির্জা মনির। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।

স্বাগত বক্তব্যে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আকরাম হোসেন বলেন, আমি খুবই সৌভাগ্যবান লোক যে জাতির জনকের নামের হলে প্রাধ্যক্ষ হিসেবে কাজ করছি যেটা আমার আদর্শের সাথে একেবারে সিঙ্ক্রোনাইজ। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই যারা আমাকে এই দায়িত্ব দিয়েছেন। আমাদের শিক্ষার্থীরাও  নিজেদের গৌরবান্বিত মনে করে যে তারা জাতির জনকের নামের হলের শিক্ষার্থী। যেই জাতির জনকের জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো কিনা সন্দেহ আছে। উনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন, এই খেলার মাঠে ওনার পদচারণা ছিল। ওনার পুত্র শেখ কামাল এই মাঠে খেলাধুলা করেছেন। আমরা তাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। এসময় তিনি খেলা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছার বলেন, আমরা জানি জন্মের পর থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা শিক্ষা গ্রহণ করি। আমাদের প্রথম শিক্ষক আমাদের মা। যে সমাজে আমরা বাস করি সেই সমাজ আমাদের শিক্ষা দেয়। যে পরিবেশে আমি বাস করি সেই পরিবেশ আমাকে শিক্ষা দেয়। তারপরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আমরা শিক্ষা গ্রহণ করি এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদেরকে চরিত্র গঠনে সহায়তা করে। কিন্তু শিক্ষার মধ্যে শুধু ক্লাস শিক্ষাটা আমরা প্রাধান্য দেই না। ক্লাসের বাইরে শিক্ষার্থীদের কৃতিত্ব ঘটাবার যে প্রয়াস সেক্ষেত্রে ক্রিয়া একটি বিরাট অংশ হিসেবে কাজ করে।

তিনি বলেন, এই ক্রিয়াগুলোকে আমরা অনেকগুলো ভাগে ভাগ করেছি। একটি ইনডোর গেমস আর একটি আউটডোর গেমস। আজকে যে ক্রিয়া অনুষ্ঠিত হচ্ছে এটা আউটডোর গেমস যেখানে শারীরিক কার্যক্রমকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।

“শুধু বইয়ের মধ্যে পড়ে থাকলে মস্তিষ্কের বহিঃপ্রকাশ ঘটে না। একজন মেধাবী ছাত্রের মননশীলতার তখনই বহিঃপ্রকাশ ঘটে যখন তার ফিজিক্যাল এক্টিভিটির সাথে মানসিকতার পরিবর্তন ঘটে। আমাদের শরীরের বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একটিমাত্র কাজ হচ্ছে হরমোনাল রেগুলেশন। হরমোন গুলোর যৌথ কাজকর্ম করতে গেলে আমাদের ফিজিক্যাল এক্টিভিটি খুব দরকার।”

অধ্যাপক বাছার আরো বলেন, আমাদের যে লাইফ সার্কেল এটা একটা সার্কাডিয়াম রিদমের সাথে চলে। আমরা একটা সময় ঘুমাই, খাই; এইটা কিন্তু একটা সাইকেল এবং এতে (সাইকেল) যখনি আমরা ব্যতয় ঘটাই তখনই আমাদের শরীরে সমস্যা সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে যেসব ছাত্র রয়েছে তারা গর্বিত যে এই হলের শিক্ষার্থী তারা। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে তোমরা সেখানে শিক্ষা গ্রহণ করবে।

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অমর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই মহাপুরুষ স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু রচিত 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী', 'আমার দেখা নয়াচীন' এবং 'কারাগারের রোজনামচা' বই তিনটি প্রকাশিত না হলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস অসম্পূর্ণ থেকে যেত। এই বই তিনটি পড়ার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু নিজেও ছোটবেলা থেকে খেলাধুলার সাথে জড়িত ছিলেন এবং তাঁর পরিবারের অনেক সদস্য দেশের ক্রীড়াঙ্গণে অনন্য অবদান রেখে গেছেন। জাতির পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই হলটির মর্যাদা ও ঐতিহ্য ধরে রাখতে শিক্ষা, গবেষণাসহ ক্রীড়াঙ্গণেও হলের শিক্ষার্থীরা বিশেষ অবদান রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।

খেলায় ঢাবি এ্যাথলেটিকস কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া, শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. অসীম সরকার, কেন্দ্রের পরিচালক মো, শাহজাহান আলীসহ বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ এবং বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় মোট ১৭টি ইভেন্টে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও স্বোচ্ছাসেবকরা অংশ নেয়।