নবীনদের ঠাঁই হলো মিনি গণরুমে, প্রতিবাদে মানববন্ধন, মশাল মিছিলের ডাক
- জাবি প্রতিনিধি:
- প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৩:৫৬ PM , আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৩:৫৬ PM

নানান টানবাহানার পর ঘুরেফিরে গণরুমেই ঠাঁই হলো নবীন শিক্ষার্থীদের । বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নতুন হলের উঠানোর আশ্বাসে নবীন শিক্ষার্থীদের ক্লাস অনলাইনে শুরু করেন। কিন্তু ঘুরে ফিরে ৫২ ব্যাচকে ঐ গণরুমেই উঠতে হলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক মো. নূরুল আলম সিটের বিপরীতে শিক্ষার্থী বরাদ্দ দেওয়ার কথা বললেও তিনি এখন সুর পাল্টিয়েছেন। এ নিয়ে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের ব্যানারে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১লা ফেব্রুয়ারি) বেলা দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ মানববন্ধন করে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা। শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক হাসিব জামানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জাবি সংসদ ছাত্র ইউনিয়নের আহ্বায়ক আলিফ মাহমুদ, কনৌজ কান্তি, সংগঠক সোহাগী সামিয়া, সাংস্কৃতিক জোটের দপ্তর সম্পাদক আহসান লাবিব প্রমুখ। মানববন্ধন থেকে আগামী সোমবার মশাল মিছিল করার ঘোষণা দেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এর আগে গণরুম হিসেবে যে জায়গাগুলো ব্যবহার করা হতো বর্তমানে সে জায়গাগুলো প্রশাসন তালাবদ্ধ করে রেখেছে। কিন্তু অন্য জায়গায় ঠিকই গণরুম তৈরি করেছে। দুই রুমের সিটের রুমে ১০/১২ জন, চারজনের রুমে ১৫/২০ জন করে রাখছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অবৈধ ও অছাত্রদের হল থেকে বের করতে কয়েকটি হলের প্রাধাক্ষ্য তৎপরতা দেখালেও অধিকাংশ হলের প্রাধাক্ষ্য নোটিশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকেছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ২৫০০ র অধিক অছাত্র রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯ তম ব্যাচ চতুর্থ বর্ষে উঠলেও এখনও অনেকে সিট বরাদ্দ পায়নি।এদিকে নবনির্মিত নতুন শেখ রাসেল হলেও অছাত্ররা বাসা বেধেছে। তাদের বের করতে প্রশাসন কোনো উদ্যোগ না নিলেও নবীন শিক্ষার্থীদের হল বরাদ্দ দিয়ে প্রশাসনিক গণরুম তৈরি করেছে প্রশাসন।
মানববন্ধনে ছাত্র ইউনিয়নের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসিব জামান বলেন, ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের কমিটি ৪২ ব্যাচের অথচ এখন ক্যাম্পাসে ৫২ তম আবর্তন চলে এসেছে। তাদের ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরও অবৈধভাবে হলে অবস্থান করে। এই কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃত্রিম আসন সংকট তৈরি হয়েছে।
কনৌজ কান্তি রায় বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বারবার গনরুম বিলুপ্তি করার কথা বললেও তারা এখনো সেটা করতে পারে। প্রশাসন বারবার ব্যর্থ হচ্ছে গনরুম বিলুপ্তি করতে।
সাংস্কৃতিক জোটের দপ্তর সম্পাদক আহাসান লাবিব বলেন, গনরুম কালচারের কারণে যে শিক্ষার্থী মাদক কখনো ছৌঁয় নাই তারাও একসময় মাদকে আসক্ত হয়। গণরুমে শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের কারণে একজন নবীনদের মেধা নষ্ট করে দেয়।অথচ এখানেই পড়ে শিক্ষকদের ছেলেমেয়েদের গণরুমে রাখে না কারণ গণরুম একজন শিক্ষার্থীর জন্য উপযুক্ত বাসস্থান নয়।
জাবি সংসদ ছাত্র ইউনিয়নের আহ্বায়ক আলিফ মাহমুদ বলেন, গণরুম প্রথা জিয়ে রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনই দায়ী। ৫২ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের প্রতিটি হলে দুই তিনটি রুম দেওয়া হয়। নতুন হল চালু করার পরও আসন সংকট। অছাত্রদের হল থেকে বের না করার কারণে এই কৃত্রিম আসন সংকট দেখা দিয়েছে। আর এই সংকটের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রলীগকে ব্যবহার করছে গণরুম নামক অপসংস্কৃতি রোধে আগামী সোমবার মশাল মিছিল করার ঘোষণা ও দেন তিনি।