‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সন্তানকে গণরুমে রাখা বাধ্যতামূলক করার দাবি’

জাবি
  © টিবিএম ফটো

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সন্তানকে গণরুমে রাখা বাধ্যতামূলক করতে পারলে গণরুম নামক সংস্কৃতি এক নিমিষেই উঠাও হয়ে যাবে বলে দাবি করেছেন ছাত্র ইউনিয়নের আহ্বায়ক আলিফ মাহমুদ।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫২ ব্যাচের নবীনদের গণরুমে উঠানো ও অনলাইন ক্লাসের নামে প্রহসনের প্রতিবাদে মানববন্ধন শেষে গনমাধ্যমে এমন দাবি করেন আলিফ মাহমুদ । তিনি আরো  বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে হলগুলোতে ২৫০০ সিট অছাত্ররা দখল করে রয়েছে। এছাড়া নতুন দুই হলে ২০০০ সিট বৃদ্ধি পেয়েছে। তারপরও নবীন শিক্ষার্থীদের ঠাঁই হয়েছে মিনিগণরুমে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সন্তানরা প্রতিবছর ভর্তি হলেও কেউই এই গণরুমের মুখ দেখেন না।

মানববন্ধনটি বৃহস্পতিবার (১লা ফেব্রুয়ারি) বেলা দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত হয়। শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক হাসিব জামানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জাবি সংসদ ছাত্র ইউনিয়নের আহ্বায়ক আলিফ মাহমুদ, কনৌজ কান্তি, সংগঠক সোহাগী সামিয়া, সাংস্কৃতিক জোটের দপ্তর সম্পাদক আহসান লাবিব প্রমুখ। মানববন্ধন থেকে আগামী সোমবার মশাল মিছিল করার ঘোষনা দেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এর আগে গনরুম হিসেবে যে জায়গাগুলো ব্যবহার করা হতো বর্তমানে সে জায়গাগুলো প্রশাসন তালাবদ্ধ করে রেখেছে। কিন্তু অন্য জায়গায় ঠিকই গনরুম তৈরি করেছে। দুই রুমের সিটের রুমে ১০/১২ জন, চারজনের রুমে ১৫/২০ জন করে রাখতেছে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন। অবৈধ ও অছাত্রদের হল থেকে বের করতে কয়েকটি হলের প্রাধাক্ষ্য তৎপরতা দেখালেও অধিকাংশ হলের প্রাধাক্ষ্য নোটিশের মাধ্যে সীমাবদ্ধ থেকেছে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ২৫০০ র অধিক অছাত্র রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯ তম ব্যাচ চতুর্থ বর্ষে উঠলেও এখনও অনেকে সিট বরাদ্দ পায়নি।এদিকে নবনির্মিত নতুন শেখ রাসেল হলেও অছাত্ররা বাসা বেধেছে। তাদের বের করতে প্রশাসন কোন উদ্যোগ না নিলেও নবীন শিক্ষার্থীদের হল বরাদ্দ দিয়ে প্রশাসনিক গনরুম তৈরি করেছে প্রশাসন।

মানববন্ধনে ছাত্র ইউনিয়নের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসিব জামান বলেন, ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের কমিটি ৪২ ব্যাচের অথচ এখন ক্যাম্পাসে ৫২ তম আবর্তন চলে এসেছে। তাদের ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরও অবৈধভাবে হলে অবস্থান করে। এই কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃত্রিম আসন সংকট তৈরি হয়েছে।
কনৌজ কান্তি রায় বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বারবার গনরুম বিলুপ্তি করার কথা বললেও তারা এখনো সেটা করতে পারে। প্রশাসন বারবার ইব্যার্থ হচ্ছে গনরুম বিলুপ্তি করতে।

সাংস্কৃতিক জোটের দপ্তর সম্পাদক আহাসান লাবিব বলেন, গনরুম কালচারের কারনে যে শিক্ষার্থী মাদক কখনো ছৌঁয় নাই তারাও একসময় মাদকে আসক্ত হয়। গনরুমে শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের কারনে একজন নবীনদের মেধা নষ্ট করে দেয়।অথচ এইখানেই পড়ে শিক্ষকদের ছেলেমেয়েদের গনরুমে রাখে না কারণ গনরুম একজন শিক্ষার্থীর জন্য উপযুক্ত বাসস্থান নয়।

জাবি সংসদ ছাত্র ইউনিয়নের আহ্বায়ক আলিফ মাহমুদ বলেন, গনরুম প্রথা জিয়ে রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনই দায়ী। ৫২ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের প্রতিটি হলে দুই তিনটি রুম দেওয়া হয়। নতুন হল চালু করার পরও আসন সংকট। অছাত্রদের হল থেকে বের না করার কারনে এই কৃত্রিম আসন সংকট দেখা দিয়েছে। আর এই সংকটের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রলীগকে ব্যবহার করছে গনরুম নামক অপসংস্কৃতি রোধে আগামী সোমবার মশাল মিছিল করার ঘোষনা ও দেন তিনি।