'জ্ঞান চর্চা ও বিকাশের ক্ষেত্রে গ্রন্থাগার প্রত্যেকটা মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ'

গবি
  © সংগৃহীত

গ্রন্থাগার হলো সভ্যতার দর্পণ। মানবজাতির শিক্ষা, রুচিবোধ ও সংস্কৃতির কালানুক্রমিক পরিবর্তনের সঙ্গে গ্রন্থাগারের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। সে কারণে গ্রন্থগার হচ্ছে অতীত ও বর্তমান শিক্ষা-সংস্কৃতির সেতুবন্ধন। জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস নিয়ে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি লাইব্রেরিয়ান সেগুফতা হোসাইন এর সাথে কথা বলেছেন দ্যা বাংলাদেশ মোমেন্টস এর প্রতিনিধি আসিফ হোসেন। 

সেগুফতা হোসাইন
ডেপুটি লাইব্রেরিয়ান
গণ বিশ্ববিদ্যালয়

গ্রন্থাগারের ইতিহাস :

লাইব্রেরী শব্দটি একটি ল্যাটিন শব্দ।  
লাইব্রেরী শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ লাইব্রে থেকে যার অর্থ বই। আর লাইব্রেরী শব্দটির অর্থ হচ্ছে একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে বই, পুস্তক, জার্নাল পান্ডুলিপি, অডিও ভিজ্যুয়াল ডকুমেন্ট সমূহ বিধিবদ্ধভাবে বিন্যাসিত করা থাকে যাতে ব্যবহারকারী সহজে কাঙ্খিত তথ্য পেতে পারে। মানুষ যখন সভ্যতার ঊষার আলোকে উদ্ভাসিত হয় তখন থেকেই নিজেকে চিনতে ও জানতে প্রয়াস পায়। মানুষের অনুসন্ধান স্পৃহা ক্রমে বেড়ে যায়। তখন মানুষ তার লব্ধ ও সংগৃহীত জ্ঞান স্থায়ী ভাবে ধরে রাখার মাধ্যম খুঁজতে থাকে। ফলে গাছের বাকল, প্যাপিরাস, শিলা, চামড়া প্রভৃতির ব্যবহার আরম্ভ হয়। মানুষ তার বিচিত্র অভিজ্ঞতা সাহিত্য দর্শন, বিজ্ঞান প্রভৃতির নানা তথ্যাদি এ সকল বস্তুতে বিস্তৃতভাবে লিখতে থাকে। এমন করে দর্শন ইতিহাস, বিজ্ঞান, শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রসার ও বিস্তার লাভ করে। ক্রমে বিস্তৃত জ্ঞান ভান্ডার পরবর্তী মানুষের ব্যবহারের জন্য সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা মানুষ এক সময় তীব্রভাবে অনুভব করে; এ অনুভব থেকেই একদা লাইব্রেরির উৎপত্তি ঘটে। যেমন: আলেকজান্দ্রিয়া লাইব্রেরী, অসুরবানি পাল লাইব্রেরি, নালন্দা মহাবিহার লাইব্রেরী ইত্যাদি। 

 

আলোকিত মানুষ গড়তে লাইব্রেরী :

লাইব্রেরি একটি দেশ-জাতির জ্ঞানভান্ডারস্বরূপ। যে জাতি যত বেশি শিক্ষিত সেই জাতি তত বেশি উন্নত। আর এই জাতীয়কে শিক্ষিত করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে লাইব্রেরী। জ্ঞান আহরণের জন্য যেমন লাইব্রেরির সংখ্যা যথেষ্ট হওয়া প্রয়োজন, ঠিক তেমনি লাইব্রেরিও বই পড়ার উপযোগী হওয়া চাই।জ্ঞানবিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে লাইব্রেরির জনপ্রিয়তাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত থাকে হাজার হাজার বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য, শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতির জ্ঞান। শিক্ষান্বেষী মানুষের কাছে লাইব্রেরি তাই এক জ্ঞানতীর্থ, যেখানে মুক্তির সন্ধান পাওয়া যায়, জ্ঞানের সন্ধান পাওয়া যায়, বিকশিত হয় মানবতা। এইজন্য সকলকে লাইব্রেরীতে আসতে হবে, বই পড়তে হবে। 


যুগের সাথে তাল মিলিয়ে গ্রন্থাগারের উন্নয়ন:

এখন কার সময়ে জ্ঞান অর্জনের অনেক মাধ্যম রয়েছে।  যুগের সাথে তাল মিলিয়ে গ্রন্থাগারেরও উন্নয়ন করতে হবে। এইজন্য গণ বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার একটি সফটওয়্যার লঞ্চ করতে যাচ্ছে কিছুদিনের মধ্যে। যার মাধ্যমে ছাত্ররা তাদের হাতের মুঠোয় সকল বই ও রিসার্চ  পেয়ে যাবে। গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত আছে প্রায় ত্রিশ হাজারের চাইতে বেশি বই। অনেক পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতেও এমনটি দেখা যায় না। যেটি গণ বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের একটি অর্জন বলা যেতে পারে।


মন্তব্য