জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস নিয়ে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভাবনা

গবি
  © সংগৃহীত

"গ্রন্থাগারে বই পড়ি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ি এই প্রতিপাদ্য কে সামনে রেখে আজ সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারী) সারাদেশে পালিত হচ্ছে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস। দিবসটি নিয়ে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছেন দ্যা বাংলাদেশ মোমেন্টস এর প্রতিনিধি আসিফ হোসেন। 


আবু হুরায়রা 
ব্যাচ: ১২তম
বিভাগ: ভেটেরিনারি অনুষদ 

একটি  সুন্দর ও আলোকিত সমাজ গঠনে গ্রন্থাগারের ভূমিকা অপরিসীম। এই অনলাইনের যুগে এসে আমরা অধিকাংশ মানুষই আজ বই পড়া ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু এই বই আমাদের জীবনে এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু দিন যতই যাচ্ছে কেন জানি অধিকাংশ মানুষজন এই বই থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। তারা ঝুকে পড়ছে প্রযুক্তির অন্ধকার দিকে। তাদের গ্রাস করে নিচ্ছে নানান প্রযুক্তি যেমন: ফেসবুক, ইউটিউব, ইন্সটাগ্রাম ইত্যাদি। কিভাবে আমরা আবার এই বইমুখী হতে পারে এই বিষয়ে প্রতিটি স্কুল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে সচেষ্ট ভূমিকা পালন করতে হবে।

 

তারেক রহমান
বিভাগ : আইন 
ব্যাচ: ২৪ তম

আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার জ্ঞানের ভান্ডার হিসেবে আমাদের মতো শিক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। জ্ঞান আহরণের জন্য যেমন লাইব্রেরির সংখ্যা যথেষ্ট হওয়া প্রয়োজন, ঠিক তেমনি লাইব্রেরিও বই পড়ার উপযোগী হওয়া চাই।জ্ঞানবিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে লাইব্রেরির জনপ্রিয়তাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত থাকে হাজার হাজার বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য, শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতির জ্ঞান। শিক্ষান্বেষী মানুষের কাছে লাইব্রেরি তাই এক জ্ঞানতীর্থ, যেখানে মুক্তির সন্ধান পাওয়া যায়, জ্ঞানের সন্ধান পাওয়া যায়, বিকশিত হয় মানবতা। তবে সময়ের সাথে আধুনিক প্রযুক্তির অপব্যবহারের কারণে মানুষ বই পড়া থেকে অনেক দূরে সরে যাচ্ছে। আর আজকের এই গ্রন্থাগার দিবসের সকলের সংকল্প হোক  পই পড়ার দিকে ফিরে আসা।

 


প্রিয়াংকা পাল
বিভাগ : ইংরেজি  
ব্যাচ:৩২তম

প্রমথ চৌধুরি, যথার্থই বলেছেন, "আমরা যত বেশি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করব, দেশের তত বেশি উপকার হবে, আমার মনে হয়, এদেশে লাইব্রেরির সার্থকতা হাসপাতালের চাইতে কিছু কম নয়। একজন ছাত্র-ছাত্রীর কাছে গ্রন্থাগারের মূল্য অপরিসীম। গ্রন্থাগারের মধ্যে গেলে যে মানসিক শান্তি পাওয়া যায় তা আর কোথাও পাওয়া যায় না, সেখানের নীরব-শান্ত পরিবেশ আমাকে মুগ্ধ করে। গ্রন্থাগারকে বলা হয় একটি দেশ-জাতির জ্ঞানভান্ডারস্বরূপ। যে খানে থেকে মানুষ তার প্রয়োজনীয় জ্ঞান আহরণ করতে পারে। বইয়ের পরিমাণটা আমাদের লাইব্রেরিতে কম বলে আমার মনে হয়। একজন শিক্ষার্থী কোনো বই নিলে তাকে কোনো সময়সীমা দেওয়া হয়না বইটি ফেরত দেওয়ার জন্য। এর ফলশ্রুতিতে অন্য কারো বইটি প্রয়োজন হলে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়, তাই আমার মনে হয় বই নেওয়ার ক্ষেত্রে সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া উচিত। এছাড়া লাইব্রেরিতে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের বইয়ের সাথে সাথে চাকরির প্রস্তুতির জন্য বিভিন্ন বই রাখা উচিত বলে আমি মনে করি।


মো:শামীম হোসেন
বিভাগ: ফার্মেসী  
ব্যাচ: ৩৮তম

জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস  প্রতি বছর ৫ ফেব্রুয়ারি পালিত হয়।  জাতীয় গ্রন্থাগার একটি ঐতিহ্যবাহী স্থান, যা শতাব্দী ধরে মানবসভ্যতা এবং সাংস্কৃতিক ধারা বিকাশে অসামান্য  ভূমিকা পালন করে আসছে। 
জাতীয় গ্রন্থাগারগুলি অনলাইন এবং অফলাইন দুইটি পরিসংখ্যান সেবা প্রদান করে। সাধারণ মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যের সংগ্রহশৃঙ্গ হিসেবে গ্রন্থাগারগুলি বিভিন্ন ধর্ম, ভাষা, এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী উপাদান গুলোকে  একত্রিত করে থাকে।
গ্রন্থাগারে মানুষ উপভোগ করতে পারে বিশেষ অনুষ্ঠান, বইমেলা, এবং চর্চার মাধ্যমে তাদের ঐতিহ্যবাহী বৃদ্ধি এবং অবদানের সাক্ষর। 
এই দিনটির মাধ্যমে আমরা আত্মনির্ভরশীলতা, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং বিজ্ঞান-প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখার ব্রত নিতে পারি।


উল্লেখ্য, বাংলাদেশ গ্রন্থাগার সমিতির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদের সভায় ৫ ফেব্রুয়ারিকে ‘জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস’ ঘোষণা করেন। এরপর থেকে প্রতি বছর ৫ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে বিভিন্ন কর্মসূচির পালনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সব সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান নানা কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে উৎসবমুখর পরিবেশে দিনটি উদযাপন করে থাকে।