ফেসবুকে জাবি ভর্তিচ্ছুর অভিযোগ : যা জানালেন দায়িত্বরত শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা 

জাবি
  © ফাইল ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৩ -২০২৪ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক সম্মান ভর্তি পরীক্ষায় সমাজ বিজ্ঞান ও আইন অনুষদভুক্ত 'বি' ইউনিটে এক ভর্তিচ্ছু কর্তৃক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে   হেনস্থার  অভিযোগ করেছেন। এর পাশাপাশি তাকে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। 

২ মার্চ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের 'টেক্সট  হ্যাক্স' ও 'সাইকোলজি এন্ড মাইন্ড ' নামক গ্রুপ সহ আরোও একাধিক গ্রুপে পোস্ট দেন তিনি। তবে এগুলোর স্ট্যাটাস বা কমেন্টে নাম উল্লেখ করেননি তিনি। এজন্য পরবর্তীতে তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। 

ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে তিনি বলেন, এক্সাম হলে ডুকার সময় আমাকে এক ম্যাম জিজ্ঞেস করে পকেটে ফোন আছে নাকি, আমার পকেটে শুধু মানিব্যাগ ছিলো সেটা বের করে দেখিয়েছি, এরপর সামনে ঘুরে 'ধুর' বলে সিড়ির দিকে হাটা শুরু করি। হটাৎ বিএনসিসির এক ভাই আমার দিকে দৌড়ায় এসে বলে "তুমি ম্যাডামকে কি বল্লা?" আমি ম্যাডামকে কিছুই বলি নাই, এভাবেই ধুর বলেছিলাম তাও বেশি জোরে না, তারপরো আমি অহেতুক ঝামেলা থেকে বাঁচার জন্য ম্যামকে সরি বলে আসি। ম্যাডাম তখন খোটা মেরে বললেন- "এম্নেও তো তোমার চান্স হবে না তোমার, যাও এক্সাম দাও" কথাটা আমার গায়ে লাগে। তখন আমিও রাগের মাথায় ভুল করে বলি- "ম্যাম আমার বিউপিতে চান্স হয়েছে, এখানে না হলেও চলবে"। বলার পর ম্যাম বলে যে আমি নাকি বেয়াদবি করেছি, এক্সামই দিতে দেবে নাহ।

বিএনসিসিরা আমাকে টেনে নিয়ে যায় ২ তলার একজন সিনিয়ার ম্যাডামের রুমে। সেখানে যেয়ে ওই ম্যাডাম বানিয়ে বানিয়ে অনেক কথা বলে, আমাকে কথা বলার সুযোগ পর্যন্ত দেয় নাহ। সব নাহ শুনেই বড় ম্যাডাম বল্লেন- " এমন বেয়াদবের আমাদের ভার্সিটিতে এক্সাম দেয়া লাগবে নাহ"। আমি যতই আমার পক্ষটা বলার চেস্টা করি, ধমক দিয়ে থামিয়ে দেয়া হয়। ওই ম্যাম, বড় ম্যামের কাছে অনেকবার ক্ষমাও চাইলাম , তারপরো তারা আমাকে পরিক্ষা দিতে দিলো নাহ।' এছাড়াও নিরাপত্তা অফিসে নিয়ে তাকে মারধর করা হয়েছে বলে ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন তিনি। 

পরীক্ষার দিন সেসময় দায়িত্বরত বিএনসিসি সদস্য সানজিদা আফরিন বলেন, আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম । তিনি ফেসবুক  পোস্টে  যেভাবে বলেছেন তার থেকেও অনেক বেশি বাজে আচরণ ছিলো তার। অনেককেই ফোনের জন্য আটকানো হয়েছিল। কারন এর আগের দিনও ফোন দেখে পরিক্ষার্থীদের পরিক্ষা দিতে গিয়ে ধরা পড়ার ঘটনা ঘটে। ফলে খুব স্বাভাবিক যে আপনাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশের আগে ফোন চেক করানো হবে। এই স্বাভাবিক প্রসেস টা বাকিরা মেনে নিলেও তার জন্য অনেক বিরক্তিকর হয়ে গেছিল এবং তিনি কেবল মাত্র মুখে "ধুর" বলেন নি, তার অঙ্গভঙ্গিতেও যথেষ্ঠ বেয়াদবি ছিল। 

সার্বিক বিষয়ে সহকারী প্রক্টর ও ওই ভবনের দায়িত্বরত শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য প্রকৃতি বিশ্বাস বলেন, এর আগের দিন একইভাবে একটি ঘটনা ঘটেছে যেখানে এক শিক্ষার্থী প্রশ্নপত্রের নিচে মোবাইল নিয়ে গুগল সার্চ করে উত্তর লিখে। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে  শিক্ষার্থীরা যেনো মোবাইল নিয়ে হলে ডুকতে না পারে সেজন্য বিএনসিসির সদস্যরা বারবার সতর্ক করেছে। পরীক্ষার লাইনে দাঁড়িয়ে মোবাইল সার্চ করার সময় ওই ছেলে বাজে আচরণ করে। বারবার অনুরোধ করা হলেও তিনি তা শুনতে চাননি। ওল্টো বিএনসিসির সদস্যদের সাথে একনাগাড়ে খারাপ আচরণ করতে থাকেন। এরপর ঐ ভর্তিচ্ছুকে তর্ক না  করে পরীক্ষায় যাওয়ায় অনুরোধ করা হলেও তিনি তা শুনেননি। পরে বিষয়টি আমি ঐ ভবনের আঞ্চলিক সমন্বয়কারীকে জানাই।এরপর তার নির্দেশমতো ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আমি একবারও চাই নি সে পরীক্ষা না দিতে পারুক। 

গণিত ও পরিসংখ্যান ভবনের আঞ্চলিক সম্বনয়কারী অধ্যাপক জেসমিন আক্তার বলেন, সেদিনের ঘটনায় ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রণীত শৃঙ্খলা বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ