জাবিতে মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া ভবন নির্মাণ প্রতিহতের ঘোষণা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

জাবি
  © ফাইল ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করার আগে যেকোনো নির্মাণ কাজ শুরু করা হলে তা প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। 

৫ এপ্রিল (শুক্রবার) সকালে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নতুন প্রশাসনিক ভবনের পিছনে কলা ও মানবিকী অনুষদের সম্প্রসারিত ভবনের নির্মাণ কাজ 'প্রতিহত' করার সময় এ কথা জানান তারা। 

জানা যায়, ১ মাস আগে প্রকল্পের আওতায় জীববিজ্ঞান অনুষদ এবং গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়। স্থান নির্বাচন সংক্রান্ত জটিলতার কারণে এতদিন কলা ও মানবিকী অনুষদের সম্প্রসারিত ভবনের কাজ শুরু না হলেও ১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের পর তাও শুরু হয়েছে। এদিকে চারুকলা অনুষদের জন্য একটি ৬ তলা ভবনের নির্মাণ কাজের জন্য সাইট ঘেরাও কার্যক্রম শুরুর কথা জানিয়েছেন চারুকলা ভবন নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক এম এম ময়েজ উদ্দিন। যদিও চারুকলা এখনও বিভাগ হিসেবে রয়েই গেছে। একদিকে লেকচার থিয়েটার নির্মাণের পর এসব ভবনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে আরেকদিকে প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসের বিষয়টিও আলোচনা করছেন মাস্টারপ্ল্যানের দাবিতে করার আন্দোলনকারীরা।

এসব প্রশ্ন তুলে আজ সকালে কলা ও মানবিকী অনুষদের নির্মাণ কাজের জন্য ঘেরাও করা সাইটের টিনের বেড়া খুলে ফেলে দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। ঈদের ছুটিতে নির্মাণ কাজ শুরুকে লুকোচুরি বলে অভিযোগ করেন তারা। এসময় প্রশাসন ও প্রকল্প কর্তৃপক্ষকে এসব নির্মাণ কাজ স্থগিত রাখার কথা বলেন। মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া একটি ভবনও করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে পরবর্তীতে বৃহত্তর  আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।

ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের একাংশের সভাপতি অমর্ত্য রায় বলেন, অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত লেকচার থিয়েটারে ৬৫ টি ক্লাসরুমে একসাথে ৬ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী ক্লাস করতে পারবে। সেটির নির্মাণকাজও অনেকটা অগ্রসর। এখন আবার ক্লাস সংকটের দোহাই দিয়ে সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। তাহলে নতুন ভবনের প্রয়োজনীয়তা কি? আর ভবন সব নির্মাণ শেষ হয়ে গেলে মাস্টারপ্ল্যান দিয়ে কী হবে? কথা একটাই- মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া ভবন নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না। না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, শিক্ষার্থীরা ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার পর এসব বিধ্বংসী কার্যক্রম এক ধরণের ফৌজদারি অপরাধের শামিল। আর ভবন নির্মাণ চালু রেখে মাস্টারপ্ল্যানের আলোচনা ভাঁওতাবাজি। আমরা আমাদের প্রাণের বিনিময়ে হলেও আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করে অপরিকল্পিত একটা ভবনও করতে দেবো না। 

এ বিষয়ে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী নাসির উদ্দীন বলেন, আমি আজকের ঘটনা 
সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিনসহ প্রশাসনকে জানাবো। তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ নিয়ে চারুকলা ভবন নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এম এম ময়েজ উদ্দিনের বক্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাকে মুঠোফোনে পাওয়া যায় নি।


মন্তব্য