১৩ জুন ২০২৪, ১১:০১

ঢাবি শিক্ষার্থীকে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর হুমকি ২ পুলিশের বিরুদ্ধে

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সাফিন  © সংগৃহীত

“রাত ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে রিকশা নিয়ে হাজারীবাগ এলাকায় আমাদের লেদার ইনস্টিটিউটের দিকে যাই। রিকশা থেকে নেমে ভাড়া দিয়ে মোবাইল বের করে আমার এক বড় ভাইকে যখন কল দিচ্ছি এমন মুহূর্তে রিয়াজ নামে এক পুলিশ কনস্টেবল পেছন থেকে এসে আমার হাতটা ধরলো। ধরে জিজ্ঞেস করলো, তুই এখানে কি করছিস? আমি তখন বললাম, মানে? আমি কি করবো? উনি আমার পকেটে হাত দেওয়ার চেষ্টা করলেন। আমি আজ টিউশনের বেতন পেয়েছি এজন্য পকেটে কিছু টাকা থাকায় আমি তাকে পকেটে হাত দিতে দিচ্ছি না।”

“তখন ওই পুলিশ কনস্টেবল বললেন, তোর পকেটে মাদক আছে, আমি চেক করব। তখন আমি বললাম, আমার পকেটে কিছুই নেই, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ওই সময় সিরাজুল হক নামে একজন পুলিশের এসআই দৌড়ে আসেন। এক পর্যায়ে, তারা দুইজনেই আমাকে আরও জেরা করতে শুরু করেন। এরপর আমি আমার পরিচয় দেওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম শুনেই এসআই সিরাজুল আরও এগ্রেসিভ হয়ে গেলেন। এসময় তিনি আমার গালে কয়েকটা থাপ্পড় মারেন।”

এভাবেই নিজের সাথে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের বর্ণনা দিচ্ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী সাফিন উজ জামান।

বুধবার (১২ জুন) রাত সোয়া ৯টার দিকে রাজধানীর হাজারীবাগে অবস্থিত লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ, মারধরের এক পর্যায়ে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর হুমকি দেন অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্য।

সাফিন বলেন, “আমার ওই বড়ভাই ওখানে উপস্থিত হলে, তাকেও ধরে ফেলেন। এরপর আমাদের দুইজনকেই তারা নির্জনে নিয়ে যেতে চেষ্টা করে, সেখানে মানুষজন থাকায় আড়ালে কোথাও নিতে পারেন নি। সেখানে আমাদেরকে তারা এক ঘন্টা বসিয়ে রাখেন এবং নানা ধরনের হুমকি ধামকি দেন। সর্বশেষ, তারা আমাদেরকে  বলেন, আপনারা চলে যান এবং আজকের ঘটনা কাউকে বলবেন না। যদি বলেন তাহলে আরো খারাপ কিছু হতে পারে।” 

ভুক্তভোগী এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, “ওখানে যদি কোনো মানুষজন না থাকতো তাহলে আমার অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারতো। তারা আমার পকেটে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে দিতো। তারা আমার গাঁয়ে হাত তুলেছে, গালাগালি করেছে, অসম্মান করেছে এবং সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো যে, তারা আমার পকেটে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আমি এই ঘটনায় এই দুই পুলিশ সদস্যের বিচার চাই।”

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান বাংলাদেশ মোমেন্টসকে বলেন, “ঘটনাটি শুনেছি। আমরা খোঁজ-খবর নিয়ে আমাদের জায়গা থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তবে, এ বিষয়ে হাজারীবাগ থানার ওসিকে একাধিকবার কল দিয়ে পাওয়া যায়নি।”

হাজারীবাগ থানার ডিউটি অফিসার এস আই তাহমিনা বলেন, “আমরা এখন পর্যন্ত এরকম কিছুর খবর পাইনি। তবে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য এস আই সিরাজুল হক এই থানায়ই কর্মরত সেটা তিনি নিশ্চিত করেন।”

অন্যদিকে, আরেক অভিযুক্ত কনস্টেবল রিয়াজের বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করতে পারেন নি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “রিয়াদ আহমেদ নামে একজন ড্রাইভার আছেন।”