হত্যার হুমকি অস্বীকার, ঢাবির নেতা পরিচয়ে পাল্টা হুমকি প্রদানের অভিযোগ

চবি
শিক্ষার্থী রাফি এবং হৃদয় (চবি)   © টিবিএম

বেশ কিছুদিন ধরেই দেশের উচ্চ শিক্ষাঙ্গন গুলো উত্তপ্ত কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে। এর মধ্যেই গত ৮ জুলাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফিকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠে একই বিভাগের সিনিয়র ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী হৃদয় আহমেদ রিজভীর বিরুদ্ধে। তবে ঘটনার একদিন যেতে না যেতেই অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা হত্যার হুমকি প্রদানের বিষয়টি সামনে এনে প্রক্টর বরাবর অভিযোগপত্র দেন হৃদয় আহমেদ রিজভী।

প্রথমে গত ৮ জুলাই প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দিয়ে রাফি বলেছিলেন,  (রোববার) রাতে একটি নম্বর থেকে আমার আব্বুর নম্বরে কল দিয়ে আমাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমার বাবাকে ওই ব্যক্তি বলে, ‘আপনার ছেলেকে যদি কোটা আন্দোলন থেকে সরে যেতে না বলেন তাহলে হয়ত আপনার ছেলেকে আর পাবেন না, তার লাশটা পাবেন। দেখা যাবে যে কোথাও না কোথাও মেরে ফেলে রাখা হয়েছে। পরে লাশটা অ্যাম্বুলেন্সে করে পাঠানো হবে।’ পরে আব্বু পরিচয় জানতে চাইলে লোকটি বলে, ‘আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি। ক্যাম্পাসেই থাকি।’ এটা বলে ফোন কেটে দেয়। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি ঐ নম্বর টি নাট্যকলা বিভাগের ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী হৃদয় আহমেদ রিজভীর।এই বিষয়ে প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দিয়ে পরবর্তীতে জিডি করেন তিনি।

তবে তালাত মাহমুদ রাফির করা অভিযোগ কে সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট বলে গত ৯ জুলাই প্রক্টর বরাবর পাল্টা অভিযোগ করেন হৃদয় আহমেদ রিজভী।

অভিযোগ পত্রে তিনি উল্লেখ করেন- “আমার বিরুদ্ধে করা হত্যার হুমকি সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট এবং ভিন্ন ভাবে তুলে ধরা হয়েছে।২০২০ সালে FFQ2 (মুক্তিযোদ্ধা কোটা) কোটায় ভর্তি হওয়ার পর থেকে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও প্রজন্ম সংগঠনের সাথে যুক্ত হই। সেই সংগঠনের নতুন সদস্য হিসেবে রাফির সাথে পরিচয় হয়। সম্প্রতি চলমান কোটা বিরোধী আন্দোলনে যাওয়া না যাওয়া ব্যক্তিগত ব্যাপার। আন্দোলন করার যেমন অধিকার আছে ঠিক তেমনি কোনো অপশক্তির দেশকে অস্থিতিশীল করার সুযোগ নেই। আমি অন্যদের কে ভয় ভীতি দেখিয়ে প্রভাবিত না করার জন্য তাকে বুঝিয়ে বলি।পরে সে  আমার সাথে ফোনে খারাপ ব্যবহার করে।এই ব্যাপারে তার পরিবার কে অবহিত করি।তার পরিবার কে জানানোর পর ৮ তারিখ (রবিবার) ২ টা  ৫০ মিনিটে ০১৫৭৫৩৭১২৮১ এই নম্বর থেকে কল আসে এবং আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ঢাকার না যাওয়ার কথা বলে।আমি ঐ ব্যক্তির পরিচয় জানতে চাইলে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় নেতা বলে ফোন কেটে দেয়।এই ঘটনায় আমি আমার জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তা চাই। পরবর্তীতে আইডেনটিটি চেক করা হলে নম্বরটি চান মিয়া নামের একজনের বলে জানা যায়।“

অবশ্য এই ঘটনায় চবি প্রক্টর অধ্যাপক ড অহিদুল আলম বলেন -ঘটনাটি যেহেতু লিগ্যাল ইস্যু তাই এটি পুলিশ প্রশাসন তদন্ত করে দেখবে।

রাফি এবং হৃদয় দুই জন একই বিভাগের শিক্ষার্থী। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তি হয়ে তারা দুই জনেই চবি মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ডের সদস্য।