ছেলে রাফি কোটা আন্দোলন করায় নিজেকে লজ্জিত মনে করেন বাবা

চবি
  © সংগৃৃহীত

সম্প্রতি দেশের সর্বত্র কোটা সংস্কার আন্দোলনের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে।এই আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুবিধা নিয়ে FFQ2 কোটায় ভর্তি হয়ে এখন সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া নিয়ে আলোচনা সমালোচনা চলছে ক্যাম্পাস এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে‌। এমন সময় আগুনে ঘি ঢেলে দেওয়ার মতো কান্ড করে বসলেন তার বাবা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তরিকুল ইসলাম চন্দন। 

বাংলাদেশ মোমেন্টস এর হাতে আসা কয়েকটি ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, চন্দন নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাথে কথা বলার সময় ছেলের কোটা বিরোধী আন্দোলনে যাওয়ায় নিজে লজ্জিত এবং এটি একটি অপকর্ম বলে আখ্যায়িত করেছেন।

তিনি বলেন - মুক্তিযোদ্ধার নাতি হিসেবে ভর্তি হয়ে এখন আবার চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিরোধীতা করে আমার ছেলে আন্দোলন করায় আমি তার বাবা হিসেবে লজ্জিত ও দুঃখ প্রকাশ করছি। নিশ্চয়ই এটি একটি অপকর্ম।এই অপকর্মের বিরুদ্ধে আমরা যে ব্যবস্থা নেন তাতে আমি একমত আছি।এই ধরনের কাজে জড়িত হওয়ায় আমি নিন্দা প্রকাশ করছি

অপর একটি ভিডিও ফুটেজে ছেলে কে ফোনে বলতে শোনা যায় -বাবা তোমার পায়ে ধরি তুমি বাড়ি চলে আসো, পালিয়ে লুকিয়ে যেভাবেই হোক তুমি বাড়ি চলে আসো।
একই ভাবে রাফির মামা ও খালু মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুবিধা নিয়ে এখন বিরোধীতা করার তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেন।

তবে এ বিষয়ে খান তালাত মাহমুদ রাফির সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে মুঠোফোনে পাওয়া যায় নি এবং হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ দিয়েও সাড়া মেলেনি।

গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে রাফি অবশ্য বলেছেন -একটা কথা কান খুলে শুনে রাখুন,প্রথম থেকেই আমি আমার অবস্থানে পরিষ্কার।যারা আমার পরিবারের উপর প্রতিনিয়ত প্রেশার ক্রিয়েট করছেন,আমাকে বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়ার ২/৪ দিনের আল্টিমেটাম দিচ্ছেন ।আপনারা শুনেন,আমার এই আন্দোলনে আমার পরিবার জড়িত নয়,এটা আমার একান্ত ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।সুতরাং পরিবারকে হুমকি ধামকি দিয়ে, বিভিন্নভাবে ভয় দেখিয়ে কোনোরকম লাভ হবে না। যদি সৎ সাহস থাকে এভাবে কাপুরুষের মতো পরিবারকে চাপ প্রয়োগ না করে, অপরিচিত নাম্বার থেকে কল না দিয়ে একদিন ডিবেটে আসেন, টকশোর আয়োজন করেন।

অবশ্য মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তি হয়ে এখন সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় মন্তব্য ই চোখে পড়ছে ।
 
অনেকেই বাবার এই বক্তব্যকে চাপ প্রয়োগ করে স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছে বলছেন। কিন্তু এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তার পরিবার।