শিক্ষার্থীর আকুতিতেও মন গলেনি জাবি উপাচার্যের।
- জাবি সংবাদদাতা;
- প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৪, ০৪:৩৮ PM , আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৪, ০৪:৫৪ PM
-11653.jpg)
'এই কথাই হয়তো শেষ কথা', 'ভাই আমাদের বাঁচান', এমন আকুতি করছিলেন গতকাল ১৫ জুলাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) কোটা সংস্কার আন্দোলনে উপাচার্যের বাসভবনে আটকে পড়া শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এই আকুতিতেও মন গলেনি জাবি উপাচার্য প্রফেসর মো. নূরুল আলমের। তিনি তখন দিব্যি রুমেই অবস্থান করছিলেন। গতকাল সোমবার (১৫ জুলাই) সন্ধ্যায় আন্দোলনকারী মিছিলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় শাখা ছাত্রলীগ। তার বিচার চাইতে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনে যান শিক্ষার্থীরা। সেখানেই হামলা চালায় ছাত্রলীগ ও ভাড়াটিয়ারা। হামলার এক পর্যায়ে উপাচার্যের বাসভবনে ঢুকে বারবার গেইট খুলে দেওয়ার আকুতি জানান শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এতেও মন গলেনি উপাচার্যসহ দায়িত্বশীল প্রশাসনিক ব্যক্তিদের।
আন্দোলনকারী একাধিক শিক্ষার্থী জানান, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সন্ধ্যা সাতটায় আন্দোলনকারীরা শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে শতাধিক নেতা-কর্মী বটতলা এলাকায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করেন। নারী শিক্ষার্থীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর করা হয়। এর বিচারের দাবিতে উপাচার্যের বাসভবনে আমরা অবস্থান নিই। কিন্তু উপাচার্যের বাসভবনে অবস্থানকালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও তাদের ভাড়া করা গুন্ডাবাহিনীকে আমাদের উপর লেলিয়ে দেয়। তাদের কাছে রামদা, বন্দুক, পেট্রোলবোম ধারালো অস্ত্র দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। একের পর এক আমাদের ওপর কাচের বোতল ছুড়ে মারা হয়। কিছুক্ষণ পর তাদের সাথে যুক্ত হয় পুলিশবাহিনী। আমাদেরকে একটি বদ্ধ জায়গায় একের পর এক টিয়ারশেল মারে তারা। এসময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা বারবার আকুতি জানায় কিন্তু উপাচার্য তার কেচিগেট খোলেনি ।
এ বিষয়ে প্রক্টর প্রফেসর মোহাম্মদ আলমগীর কবির বলেন, আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।'প্রশাসনের এই দায়িত্বহীনতায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সব জায়গায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় বইছে৷ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন মোড়ে উপচার্যের নিখোঁজ সংবাদের পোস্টার টানানো হয়েছে। উপাচার্যকে উপহাস করে গায়েবি জানাজা করার কথা তুলছেন অনেক শিক্ষার্থী। এর আগে, গতকাল রাতে (১৫ জুলাই) দিবাগত রাতে কয়েক দফায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার চালায় শাখা ছাত্রলীগ ও তাদের ভাড়াটেরা।পরে আন্দোলনকারীরা ভিসির বাসভবনে ঢুকলে সেখানেও হামলা চালায় আক্রমনকারীরা।
এসময় পুলিশ প্রশাসনকে হামলাকারীদের জন্য পথ ছেড়ে দিয়ে নীরবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। পরে সব হল থেকে শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে বের হয়ে আসেন। তারা হামলাকারীদের হটিয়ে ক্যাম্পাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ভিসির বাসভনে অবরুদ্ধ শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এর পর থেকেই উত্তপ্ত জাবি ক্যাম্পাস। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক এবং নারী শিক্ষার্থীসহ কয়েক শত আহত হয়েছেন।