প্রশাসনের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক, কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা ইবি শিক্ষার্থীদের

ইবি
  © টিবিএম

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে সকল ধরনের কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। সোমবার (২৯ জুলাই) শিক্ষার্থী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ৫ দফা দাবি জানিয়ে কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্বকারী ৯ জন শিক্ষার্থী। 

দাবিগুলো হলো: ১.আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সদস্যদেরকে গ্রেপ্তার, ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও বিভিন্নভাবে হেনস্তা না করে। ২. সাধারণ শিক্ষার্থীদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার। ৩. কোটা আন্দোলনে শহীদদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। ৪. বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা ও বহিরাগতদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা এবং ৫. অতিদ্রুত হলসমূহ খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের হলে আবাসন নিশ্চিত করা।

উপরোক্ত দাবিগুলো জানিয়ে শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষরিত ওই লিখিত বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, প্রধান দাবি পূরণ হওয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কার আন্দোলনের সকল কর্মসূচি প্রত্যাহার করে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা মনে করে কোটা সংস্কার আন্দোলন সর্ব সাধারণের আন্দোলন। এটি কোন রাজনৈতিক বা স্বার্থান্বেষী মহলের আন্দোলন নয়। সুতরাং আজ থেকে যারা নাশকতা, ভাংচুর ও অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করবে তাদের সাথে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোন সম্পৃক্ততা নেই। আমরা নাশকতা প্রত্যাশা করিনি। তবে কোটা সংস্কারের বিষয়ে কমিশন গঠন করে সকল কোটাধারীদের মধ্য থেকে প্রতিনিধি নিতে হবে। পরবর্তীতে যদি পরিবর্তন প্রয়োজন হয় তাহলে প্রতিনিধিদের মতামতের ভিত্তিতে পরিবর্তন বা সংস্কার করতে পারবে। এ ছাড়াও আরও আমাদের যে ৯টি দাবি আছে তা মেনে নিয়ে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে। এক্ষেত্রে যদি শিক্ষার্থী সমাজ একাত্মতা পোষণ না করে তাহলে সেই দায়ভার আজকের মিটিংয়ের সদস্যরা নিবে না। শিক্ষার্থী সমাজের ৯ দফা দাবি অব্যাহত থাকবে এবং পরবর্তীতে আরও আলোচনার সুযোগ থাকবে। আজকের মিটিংয়ের প্রধান বিষয় ছিল হল খোলা এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা।

রুদ্ধতার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ প্রমুখ।

এর আগে, সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির মিটিং রুমে প্রশাসনের সঙ্গে রুদ্ধতার বৈঠক করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্বকারী টিম। প্রায় ২ ঘন্টার রুদ্ধতার বৈঠক শেষে তারা সাংবাদিকদের সামনে কোনধরনের ব্রিফিং না করেই চলে যায়। এরপর আন্দোলন প্রত্যাহারের বিষয়ে ৯ শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরিত কপি সাংবাদিকদের নিকট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হস্তান্তর করেন।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্বকারী ৯ শিক্ষার্থী হলেন: আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এনামুল হক, ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আব্দুর রহমান, ইশতিয়াক আহমেদ, ল’ এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তানভীর আল যুবাইর তামিম, অর্থনীতি বিভাগের তন্ময় কুমার সাহা, আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের বাধন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের আরাফাত, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের জুবায়ের এবং সমাজকল্যাণ বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ।

এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয় ও কুষ্টিয়ার বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা বিকাল ৩ টায় কুষ্টিয়া শহরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে গেলে পুলিশ তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশকয়েকজন শিক্ষার্থীকে আটক করতে দেখা যায়।