জন্মদিন পালন বাদ দিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে রাবি অধ্যাপক

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্বঘোষিত ৯ দফা দাবিতে শনিবার সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করছে। এছাড়া দেশব্যাপী রোববার থেকে ‘সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন’র ডাক দেওয়া হয়েছে। সারা দেশের মতো রাজশাহীতেও ছাত্র-জনতা বিক্ষোভে নেমেছে। আজও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন শিক্ষকরা। শুধু তাই নয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যায়ের এক অধ্যাপক নিজের জন্মদিন পালন না করে আন্দোলনে নেমেছেন। 

রাবির ওই অধ্যাপকের নাম সালেহ হাসান নকীব। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক। শিক্ষার্থীদের আজকের বিক্ষোভ সমাবেশ নিয়ে নিজের ফেসবুক ওয়ালে একটি স্ট্যাটাসও দিয়েছেন তিনি। 

স্ট্যাটাসে অধ্যাপক নকীব বলেন, ‘আমার ছাত্রদের সঙ্গে সংহতি জানাতে আজ সকালে বের হয়েছিলাম। রাজশাহীতে স্মরণকালের ভেতর সবচেয়ে বড় ছাত্র সমাবেশের সাক্ষী হলাম। এদের সাহস এবং দৃঢ়তা বারবার আমাকে অবাক করে’।

আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘অপদার্থ আওয়ামী বাকশালিরা কী উপলব্ধি করে, কী পরিমাণ মানুষ এদের এখন ঘৃণা করে? উপলব্ধি করতে পারলে ভালো হতো’।

আজকের বিক্ষোভ মিছিল শুরুর আগের একটি ঘটনা বর্ণনা করে রাবির এই অধ্যাপক বলেন, “সাদা পোশাকে বিজিবির এক সদস্য ছাত্রদের হাতে ধরা পড়ে। বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের ঘেরাওয়ের ভেতর সে ভয়ে কাঁপছে। খবর পেয়ে অঘটনের আশঙ্কায় সেখানে ছুটে যাই। আমি দেখেছি, ছাত্রদের সামনে শিক্ষকের মতো দাঁড়ালে, তারা কথা শোনে। বিজিবি সদস্যের আইডি কার্ড ফেরত নিয়ে তাকে বের করে নিয়ে আসি। আমার হাত ধরে সে কাঁপছিল। ‘স্যার, স্যার,  আমরাও মানুষ, কিন্তু হুকুমের গোলাম’। খুব কঠিন কিছু কথা মুখে চলে এসেছিল। বিপন্ন মানুষ দেখে আর বলিনি। শুধু বলেছি- অনেক দূরে চলে যান। এখানে আর আসবেন না”।

‘পুরো ঘটনা কি surrealistic! গত পরশু ডিবি অফিস থেকে আমাদের ছাত্র রিফাতকে বের করে আনতে পারিনি। আজ আল্লাহ আমাকে দিয়ে একজন বিজিবি সদস্যের নিরাপত্তা হয়তো নিশ্চিত করলেন’ যোগ করেন নকীব।

নিজের জন্মদিন পালন না করার বিষয়ে এই অধ্যাপক বলেন, ‘আজ আমার জন্মদিন ছিল। সারাদিন পরিবারের সঙ্গে কাটাতে চেয়েছিলাম। মানুষভাবে এক রকম। আল্লাহ চান আরেক রকম’।