বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে
শিক্ষকের বিতর্কিত ভূমিকা, অভিযোগ আছে ছাত্রদের বাসায় ডেকে মাদকের 'গ্র্যান্ড ট্রিট' দেওয়ার
- সারওয়ার মাহমুদ ,চবি প্রতিনিধি;
- প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২৪, ০৫:৪১ PM , আপডেট: ২১ আগস্ট ২০২৪, ০৫:৪১ PM
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতার জেরে ফ্যাসিস্ট সরকারের গণহত্যার সমর্থন, ছাত্রদের বাসায় ডেকে বিভিন্ন সময়ে গাঁজা- মদের আসর বসানোর মতো আরো বেশ কিছু অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সাবেক সহকারী প্রক্টর হাসান মুহাম্মদ রোমান শুভর বিরুদ্ধে। গত কয়েকদিন যাবত অভিযুক্ত শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে চবি আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ, কুশপুত্তলিকা দাহ করা, নামফলক ছিঁড়ে ফেলার মাধ্যমে প্রতিবাদ করে আসছে তারা।২১ আগস্ট (বুধবার) চবি সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রোমান শুভর পদত্যাগ সহ আরো কয়েকটি দাবি পেশ করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
তথ্য প্রমাণ,বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ও ছাত্রদের অভিযোগ গুলোতে দেখা যায়, ছাত্র আন্দোলনে সরাসরি বিরোধিতা, বিভিন্ন সময়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়া, রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক শক্তি প্রয়োগ করে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সময়ে হেনস্থা করা হয়। প্রতিবেদকের হাতে আসা কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্যে উঠে আসে বাসায় ডেকে নিয়ে মাদকের আসর বসানোর বিষয়টি বেশ কয়েকজনের সাথে রোমান শুভর ম্যাসেঞ্জার কথোপকথন এবং কয়েকজন সাক্ষীর জবানবন্দিতে বিষয়টি উঠে আসে।
কথোপকথনে অভিযুক্ত রোমান শুভকে বলতে দেখা যায়- তোদের ক্লাসের টোটাল লিকুইড+ পটখোর কারা বল, একটা গ্রান্ড ট্রিট দিবো একদিন ক্যাম্পাসের বাংলোয় সারারাত।'স্মল বাট ক্লাসি পার্টি অপর একটি কথোপকথনে রোমান শুভকে বলতে দেখা যায় -'তুই কি ভার্জিন? কখনো পট করছস? অকেশনালি এগুলো খাওয়াই যায় সিগারেটের চেয়ে গাঞ্জায় ক্ষতি কম 'এছাড়াও বেশ কয়েকজন এই সহকারী অধ্যাপকের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে মাদকের অফার পেয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। সহকারী প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে শিক্ষার্থীদের জামায়াত -শিবির , জঙ্গি ট্যাগ দিয়ে মামলার ভয় দেখিয়ে মানসিক চাপ প্রয়োগ করতেন বলে জানা যায়। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলায় সরাসরি অংশ নেওয়া ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রকাশ্যে আশ্রয় প্রশ্রয় দেওয়ার বিষয়টি নিয়েও শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন।
গত মঙ্গলবার চবি আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড: আব্দুল্লাহ ফারুকের কাছে ২৪ ঘন্টার মধ্যে পদত্যাগ না করলে অব্যহতি চেয়ে অভিযোগপত্র দিলে তিনি বলেন -শিক্ষার্থীরা একটি আবেদন করেছে। আমি সেটা গ্রহণ করেছি। এটি একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। তদন্ত হবে; এরপর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয় আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তবে এই সব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সহকারী অধ্যাপক হাসান মুহাম্মদ রোমান জানান -আমি মব জাস্টিসের শিকার হচ্ছি। আমি কখনো গনহত্যাকে সমর্থন করিনা, ২০১৬ সালেও আমি বিচার বহির্ভূত হত্যা ( Extra Judicial Killing) নিয়ে গবেষণা করেছি এবং গবেষণা প্রবন্ধ ভারতের একটি স্বনামধন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত হয়েছিল। আমি তার প্রমাণ দিতে পারবো। আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যথাযথ আইনী প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছি। নিরপেক্ষ তদন্ত হলে আমি নির্দোষ প্রমাণিত হবো ইনশাআল্লাহ।