ভুয়া সমন্বয়ক নিয়ে নিউজ করায় জবাব চাইলেন আসল সমন্বয়ক
- লিটন ইসলাম, ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২৪, ০৬:১৩ PM , আপডেট: ২১ আগস্ট ২০২৪, ০৬:২২ PM
রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজের খোদেজা খাতুন ছাত্রীনিবাসের কথিত সমন্বয়ক মরিয়ম মারামকে নিয়ে ” গভীর রাতে শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের হওয়ার হুমকি দেন ইডেনের ‘সমন্বয়ক” শিরোনামে আজ বুধবার (২১ আগষ্ট ) দুপুরে নিউজ প্রকাশ করে দ্য বাংলাদেশ মোমেন্টস।
নিউজ প্রকাশের পর কথিত সমন্বয়কের পক্ষ থেকে কোন বিবৃতি না আসলেও জবাবদিহিতা চেয়েছেন ইডেনের আসল সমন্বয়ক শাহিনুর সুমি। বুধবার বিকাল ৪টা ৫২ মিনিটে এই প্রতিবেদকের মুঠোফোন নাম্বারে কল দিয়ে নিজেকে ইডেন কলেজের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দেন সুমি।
এরপর জানতে চান কেন এই নিউজ করা হয়েছে। ৫৩ সেকেন্ডের ওই কল রেকর্ডে সুমি বলেন, আপনি যে একটা নিউজ করেছেন এর সত্যতা কোথায় পেয়েছেন?
সেটা আপনাকে বলবো কেন? এই প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নের পর সুমি বলেন, আমার কলেজ নিয়ে নিউজ করবেন আর আমাকে জবাবদিহি করবেন না? তার কাছে কেন জবাবদিহি করবে জানতে চাইলে এই সমন্বয়ক বলেন, সাংবাদিকদেরও জবাবদিহিতা করতে হয়। তাহলে তো সেটা ভুয়া নিউজ। এসময় এই সাংবাদিক ভুয়া নিউজ হলে মামলা করার পরামর্শ দেন।
সুমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। এর আগে গভীর রাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি, ব্যক্তিগত ফোন চেক করা, ব্যক্তিগত আক্রোশকে রাজনৈতিকভাবে সাজানোসহ নানা অভিযোগ উঠে রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘সমন্বয়ক’ দাবি করা মরিয়ম মারামের বিরুদ্ধে। আর এসব কাজে সায় দেয়ার অভিযোগ উঠে ওই কলেজের সহকারী হোস্টেল সুপার মুস্তারি সালেহিনের বিরুদ্ধেও।
কথিত এই সমন্বয়কের নাম মরিয়ম মারাম। তিনি বাংলা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ ও খোদেজা খাতুন ছাত্রীনিবাসের আবাসিক শিক্ষার্থী।
জানা যায়, ইডেন কলেজের খোদেজা খাতুন হলের ৩১০ , ৩১২ ও ৩১৪ নাম্বার কক্ষগুলো আগে ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণে ছিল যেগুলোকে বলা হতো ‘রাজনৈতিক রুম’। সেসব কক্ষে যারা থাকতেন তাদের বেশিরভাগই বাধ্য হয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের পতনের পর সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ চলে আসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হাতে। এই সুযোগকেই পুঁজি করে মরিয়ম নামের অভিযুক্ত শিক্ষার্থী নিজেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে হলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কাছে প্রভাব বিস্তার করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে তিন রুমে (৩১০, ৩১২ ও ৩১৪) অবস্থানকারী শিক্ষার্থীদের জোর করে সহকারী হল সুপার মোস্তারি সালেহিনের কক্ষে নিয়ে যায় মরিয়মসহ আরও কয়েকজন। সেখানে নিয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে হাসি-ঠাট্টা, ফোন চেক করা হয়। ব্যক্তিগত বিভিন্ন ইস্যুকে রাজনৈতিক ইস্যু বানানো হয়। সিনিয়র, জুনিয়র সকল শিক্ষার্থীকে মাফ চাইতে বাধ্য করা হয়। এই পরিস্থিতিতে অনেক শিক্ষার্থীই কান্না করে ফেলেন। এমনকি আজ বুধবারের মধ্যে ওই তিন কক্ষের শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের হয়ে যেতে বলা হয়। আর এসব সবকিছু হয় হল সুপার মোস্তারি সালেহিন এর সামনে। যদিও তিনি এসব কাজে সম্মতি দিয়েছেন বলে জানা যায়।