ইবিতে ‘ইসলামিক স্কলার ভিসি’ চেয়ে যা বললেন শিক্ষার্থীরা

ইবি
  © ফাইল ছবি

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)। দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় হতে সম্পূর্ণ আলাদা আদলে ১৯৭৯ সালের ২২ নভেম্বর এটি প্রতিষ্ঠা করেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। প্রতিষ্ঠালগ্নে বিশ্ববিদ্যালয়টির মূল লক্ষ্য ছিল ইসলামী শিক্ষার সাথে আধুনিক শিক্ষার সমন্বয় করে দেশের উচ্চশিক্ষায় ভূমিকা রেখে উন্নত জাতি গঠন। কিন্তু যে লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। ইসলামিক স্কলার কোন শিক্ষককে ভিসি হিসেবে নিয়োগ না দেয়ার ফলে মূল লক্ষ্য থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টি ছিটকে গেছে বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিটি বিভাগে সাধারণ শিক্ষার সমন্বয় করে ইসলাম বিষয়ে মৌলিক ধারণাসহ বিশেষ জ্ঞান অর্জন করবে এমন উদ্দেশ্য থাকলেও সেটি সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন হয়নি। জেনারেল প্রতিটি বিভাগে ‘ইসলামিক স্টাডিজ’ নামক একটি নন ক্রেডিট কোর্স রয়েছে। কিন্তু কোর্সটির পাঠদান ছাড়া পরীক্ষা ও শুধু পাস নম্বরের জন্য পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা হয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে শুরু করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় খুব কমই আন্তর্জাতিক মানের ইসলামিক স্কলার পেয়েছে ভিসি হিসেবে। শুধু রাজনৈতিক মাপকাঠি ও তদবিরের কারণে জেনারেল শিক্ষকরা বারবার ভিসি নিয়োগে মূল্যায়ণ পেয়েছেন। 

এ বিষয়ে ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী হাজেরা খাতুন বলেন, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত প্রথম সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়৷ জেনারেল শিক্ষার পাশাপাশি ইসলামী শিক্ষার সমন্বয়ের আদলে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু পরিতাপের বিষয় জেনারেল শিক্ষার পাশাপাশি ইসলামী শিক্ষার আদলে বিশ্ববিদ্যালয়টি রূপ লাভ করেনি। এর অন্যতম কারণ শুধু জেনারেল ক্যাটাগরি থেকে ভিসি নিয়োগ দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির মূল লক্ষে ফিরতে আমরা চাই ইসলামিক স্কলার ভিসি।

এ বিষয়ে আল ফিকহ্ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিলো  ইসলামী শিক্ষার পাশাপাশি জেনারেল শিক্ষায় শিক্ষিত করা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার চার দশক পার হলেও, বিশ্ববিদ্যালয়টি তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে জেনারেল শিক্ষায় শিক্ষিত অনেক ভিসি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব পালন করেছে। তাই জেনারেল বিষয়গুলোর অনেক উন্নতি সাধন করে। কিন্তু ইসলামী শিক্ষার বিষয়টি ব্যহত হয়। তাই আমরা একজন ইসলামিক স্কলার ভিসি চাই।

এ বিষয়ে আইসিটি বিভাগের শিক্ষার্থী তামান্না জাহান স্নেহা বলেন, দেশের চলমান পরিস্থিতিতে শিক্ষাব্যবস্থায়  শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে অন্তবর্তীকালীন সরকার বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর উপাচার্য নিয়োগের কাজ শুরু করেছেন। তাই দেশ সংস্কারের মতো এই সময়ে ইসলামি চেতনাসমৃদ্ধ এবং সুদক্ষ নেতৃত্বের মাধ্যমে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে মূল ধারায় ফিরিয়ে আনার মোক্ষম সুযোগ বলে আমি মনে করি। যার হাত ধরে জ্ঞান ও গবেষণা নির্ভর পরিবেশ তৈরীর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশ বিনির্মাণে কল্যানমূখী ভুমিকা পালন করতে করতে পারবে। এদিকে, শিক্ষক-কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম দিকে একাডেমিক যোগ্যতার সাথে ইসলামী জ্ঞানের উপর গুরুত্ব দেওয়া হলেও বর্তমানে তেমনটি হয় না বলে জানা গেছে।