ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল
- রোহান চিশতী, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি;
- প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৪, ০৯:৫০ PM , আপডেট: ২২ আগস্ট ২০২৪, ১০:৩৪ PM
ভারতীয় আসগ্রাসনের কারণে কৃত্রিম বন্যা এবং নদীর পানি বন্টনের নায্য হিস্যার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) শিক্ষার্থীদের মিছিল সন্ধ্যায় নজরুল ভাস্কর্য থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম গেইট ও প্রশাসনিক ভবন হয়ে নজরুল ভাস্কর্যে থামে। এসময় মিছিলে যুক্ত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষক। কোন সতর্কতা ছাড়া বাধ খুলে দেয়া ও বিপদসীমা না আসা পর্যন্ত পানি আটকে রাখার তীব্র প্রতিবাদ জানায় শিক্ষার্থীরা। এসময় তার ভারতীয় পণ্য বয়কটেরও ডাক দেয়।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা নানান ভারত বিরোধী স্লোগান দিতে থাকে। "দিল্লী না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা", "দালালী না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ", "আমার পদ্মা আমার তিস্তা, ফেরত চাই দিতে হবে ", "কুমিল্লা/নোয়াখালী/ফেনী ডুবলো কেন?, ভারত তুই জবাব দে", "তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা ,মেঘনা,যমুনা", "দিল্লীর দাসত্ব, মানিনা মানবোনা", "ভারতীয় আগ্রাসন, ভেঙে দাও গুরিয়ে দাও", "পেতে চাইলে মুক্তি, ছাড়ো ভারত ভক্তি" ইত্যাদি স্লোগানে মুখরিত হতে থাকে পুরো ক্যাম্পাস।
এসময় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, "ভারতের বাধগুলোর গেইট খুলে দেয়া হবে এই সম্পর্কে বাংলাদেশ সরকারকে অবগত করেনি। যদি জানানো হতো তাহলে সাধারণ মানুষদের নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করা যেতো। এর জন্যে আমাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে। শিক্ষক সমাজের পক্ষ থেকে আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।"
স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাদিক হাসান শুভ বলেন, "গত সরকারের সময় ভারত বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নগ্নভাবে হস্তক্ষেপ করেছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মাঝে যতগুলো নদী প্রবাহিত হয়েছে তার প্রায় প্রত্যেকটিতেই ভারত বাধ নির্মাণ করে রেখেছে। ফলে শুষ্ক মৌসুমে নদীগুলো পুকুরের মতো হয়ে যায়। এভাবে তারা আমাদের প্রতিটা নদীকে মেরে ফেলেছে।" এসময় তিনি ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দেন।
ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তরিকুল ইসলাম জনি বলেন, তোমাদের মাঝে আমি স্বাধীন বাংলাদেশের ছাত্রদের দেখতে পারছি। আমাদের সকলকে একসাথে এই প্রতিকূল অবস্থা মোকাবিলা করতে হবে। এর মাঝেও নানান ষড়যন্ত্র হবে এগুলোকেও আমাদের রুখে দিতে হবে। আমরা সবাই যার যার জায়গা থেকে চেষ্টা করে যাবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী জেনাস ভৌমিক বলেন, ভারত সর্বদা চেয়েছে বাংলাদেশকে তার ঔপনিবেশ করে রাখতে যেটা গত ১৬ বছরে প্রকট আকার ধারণ করেছিল। আমরা পরোক্ষভাবে ভারত দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছিলাম। আর বাংলাদেশ যেনো পুণরায় কোন রাষ্ট্রের কলোনিতে পরিণত না হয় সেদিকেও আমাদের সচেতন থাকতে হবে।
মানব সম্পদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী হৃদয় বিশ্বাস বলেন, মহান নেতা মওলানা ভাসানী যেটা ১৯৭৬ সালে চিন্তা করতে পেরেছিল সেটা আমরা বিপদের পরে চিন্তা করি। যখন কৃষি মৌসুম তখন তারা আমাদের নদীগুলোকে হত্যা করে। তাদের এইসব বাধ আমাদের কৃষকদের ক্ষতি করে। এখন সময় এসেছে ভূ-রাজনীতি নিয় কথা বলার। আপনারা বাধ খুলে আমাদের পানি দিয়ে মারবেন আর আমরা বসে বসে দেখবো এইসব আর হবে না।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) গভীররাতে ত্রিপুরা রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির কারণে কোনরকম সতর্কতা ছাড়াই বাধ খুলে দেয় ভারত। ফলে প্লাবিত হয় ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লাসহ আশপাশের এলাকা।