বৈষম্যমুক্ত ক্যাম্পাস গঠনে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ৩৩ দাবি

বৈষম্যমুক্ত ক্যাম্পাস গঠনে ৩৩ দফা দাবি জানিয়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইমদাদুল হুদা বরাবর দাবিগুলো পেশ করা হয়।

দাবিভেদে ৭ দিন, ৩০ দিন ও ৩ মাসের সময়সীমা বেধে দেয় শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো ছিলো: 

১. শিক্ষার্থীদের দলনিরপেক্ষ উপাচার্য নিয়োগের দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ হতে   দাপ্তরিক  চিঠির মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা, ইউজিসি সহ প্রয়োজনীয় দপ্তরে পাঠাতে হবে ।

২. শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সকল প্রকার  লেজুড়বৃত্তিক দলীয় রাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ করতে হবে । কেউ নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করলে শাস্তির আওতায় আনতে হবে ।

৩. প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা,  হল প্রভোস্ট, পরিবহন প্রশাসক,  ক্যাফেটেরিয়া পরিচালক, কেন্দ্রীয়  গ্রন্থাগার পরিচালক, শারীরিক শিক্ষা পরিচালক  প্রভৃতি সরাসরি  শিক্ষার্থী সম্পর্কিত দায়িত্ব শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে প্রদান করতে হবে ।

৪. বাস শিডিউল এবং বাস রুট শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে নির্ধারণ করতে হবে ।

৫. আগামী ৭ দিনের মধ্যে   হলের সিট বন্টন করতে হবে মেধা,  আর্থিক অবস্থা এবং স্থায়ী ঠিকানার দূরত্ব  বিবেচনায় রেখে ।

৬. হলের সিট বন্টন  আবেদনকৃত শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় সভা আয়োজন  করে করতে হবে ।  যেন হল প্রভোস্ট কোন দলীয় তদবির/ যে কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সিট বরাদ্দ দিতে না পারে ।

৭. শিক্ষকদের ক্লাস শিডিউল অনুযায়ী সময়মত ক্লাসে আসতে হবে । দেরীতে আসলে অনুপস্থিত গণ্য করে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে ।

৮. কর্মকর্তা- কর্মচারীদের নিয়ম মেনে অফিস করতে হবে । কে কখন লাঞ্চে যাবে শিডিউল করে দিতে হবে । যেন সর্বক্ষণ প্রশাসনিক ভবনে কার্যক্রম চলমান থাকবে । দায়িত্বে অবহেলা করলে প্রশাসনিক শাস্তির ব্যবস্থা নিতে হবে ।

৯. হলের সিট ভাড়া ৫০ টাকা করতে হবে ।

১০. ব্যাথার দানে সরবরাহকৃত ঔষধের তালিকা প্রতিমাসে প্রকাশ্যে টাঙিয়ে দিতে হবে । 

১১. ক্যাফে এবং হলের খাবারের খাবারের দাম কমাতে হবে এবং মানসম্মত চালের ভাত ভর্তকি দিতে হবে ।

১২. প্রতিটি হলে কমপক্ষে  একটি লিফট দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা শিফট করে চালু রাখতে হবে ।

১৩. যাদের আইডি কার্ড দেওয়া  হয়নি ১ সপ্তাহের মাঝে আইডি কার্ড সরবরাহ করতে হবে ।

২৪. প্রত্যেক রিডিং রুমে নিউজ পেপার দিতে হবে এবং পড়ার টেবিল বাড়াতে হবে  ।

১৫. বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে অবাধ চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের  নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে ।

১৬. সপ্তাহে ৬ দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত  লাইব্রেরি খোলা রাখতে হবে । 

১৭. কমপক্ষে সাবেক ৩ জন  দল নিরপেক্ষ  শিক্ষার্থীকে সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে মনোনীত করতে হবে ।

১৮. সেশনজট কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

১৯. দূর্নীতি প্রতিরোধে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিরত সকলের  সম্পদের হিসাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফিসিয়ালি প্রকাশ করতে হবে। পরবর্তীতে প্রতি অর্থ বছরের শুরুতে নিয়মিত  প্রকাশ করতে হবে ।

২০. বৈষম্য বিরোধী ছাত্র  আন্দোলনে বাঁধা দানকারী এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রমে যুক্ত শিক্ষার্থীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

২১. প্রতি সেমিষ্টার শেষে শিক্ষক মূল্যায়ন ফর্ম শিক্ষার্থীদের প্রদান করতে হবে । যা ভিসি কর্তৃক সরাসরি নিয়ন্ত্রিত হবে এবং শিক্ষকদের প্রমোশনের ক্ষেত্রে এই মূল্যায়ন ফর্মটি বিবেচনায় রাখতে কবে । বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অনুসরণ করে এ কার্যক্রম করতে  হবে ।

২২. প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে প্রতি সেমিস্টারে  শিক্ষা বৃত্তি  দিতে হবে ।

২৩. খেলার মাঠ সংস্কার করে শহীদদের স্মরণে টুর্নামেন্ট দিতে হবে।

২৪. বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট তোলার কাজ ডিজিটাল করতে হবে ।

২৫. বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপস যুগোপযোগী করতে হবে ।

২৬. নজরুল ভাস্কর্যের কাজ সমাপ্ত করতে হবে ।

২৭. ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক নির্মাণের কাজ সম্পন্ন  করতে হবে।

২৮. প্রত্যেক ধর্মের শিক্ষার্থীদের জন্য ধর্মীয় উপাসনালয়ের সুবিধা যুক্ত করতে হবে।

২৯. ক্যাম্পাসের রাস্তা গুলো মেরামত করতে হবে।

৩০. পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে।

৩১. বাস সংখ্যা বাড়াতে হবে।

৩২. চিকিৎসা ব্যাবস্থা উন্নত করতে হবে ।

৩৩.  সুস্থ বিশ্ববিদ্যালয় গঠনে  জিমনেসিয়াম সুবিধা  যুক্ত  করতে হবে ।

এসময় শিক্ষার্থীরা জানায়, আলোচনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় যৌক্তিক দাবি সংযোজন বা বিয়োজন করা হবে। নির্দিষ্ঠ সময়ের মধ্যে দাবি না মানা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে তারা।