দ্রোহের গান ও কাওয়ালী সন্ধ্যায় মুখরিত ববি ক্যাম্পাস
- ববি প্রতিনিধিঃ
- প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৪ AM , আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৪ AM
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) প্রথমবারের মতো শহীদদের স্মরণে ইন্তিফাদা মঞ্চের উদ্যোগে ভিন্নধর্মী অনুষ্ঠান দ্রোহের গান ও কাওয়ালী সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫ টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি শুরু এবং রাত ১০ টা পর্যন্ত চলমান থাকে। আয়োজনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জনপ্রিয় কাওয়ালী ব্যান্ড আজাদী মঞ্চের পাশাপাশি ববির ইন্তিফাদা মঞ্চ পারফরম্যান্স করে।বলতে গেলে এক অনন্য সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছিল ববি ক্যাম্পাস । ‘দ্রোহের গান ও কাওয়ালী’ শীর্ষক এই বিশেষ আয়োজনে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় সংস্কৃতিপ্রেমীরা মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করেন বাংলা গানের ইতিহাস ও কাওয়ালীর সুরমূর্ছনা।
এ সময় সঙ্গীতশিল্পীরা বাংলা সাহিত্যের বিখ্যাত কবিতা ও গান পরিবেশন করেন। নজরুলের বিদ্রোহী চেতনার প্রভাব, দেশের প্রতি প্রেম এবং সামাজিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠা মনোভাব সঙ্গীতের প্রতিটি কথায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। এরপরে শুরু হয় কাওয়ালী, যা অনুষ্ঠানে এক ভিন্নমাত্রা যোগ করে। সুফি ধারার এই গানের জগতে সবাই এক গভীর আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতায় ডুবে যায়। কাওয়ালিদের হৃদয়গ্রাহী সুর ও তাল মুগ্ধ করে সবাইকে। গানের পাশাপাশি দর্শকদের মধ্যে সৃষ্ট আধ্যাত্মিক অনুভূতি সবার মন ছুঁয়ে যায়। "আল্লাহ হু" ও "দমাদম মস্ত কালন্দর" কাওয়ালী পরিবেশনায় শ্রোতারা পুরোপুরি নিমগ্ন ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান রাহাত বলেন, বলতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রায় শেষদিকে চলে এসেছি,এমন সময়ে ক্যাম্পাসে একটি সুন্দর আয়োজন “কাওয়ালী সন্ধ্যা” পেয়ে খুবই ভালো লাগলো। অনুষ্ঠানের পুরোটা সময় মাতিয়ে রেখেছিলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগত আজাদী মঞ্চ ও আমাদের ক্যাম্পাসের ইন্তিফাদা মঞ্চ শিল্পীরা। প্রোগ্রাম শেষে বন্ধুরা স্মৃতি ধরে রাখতে ছবি তুলতে ভুললাম না,কারন পরের বছর থেকে যে যার ঠিকানায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইলিয়াস হোসেন আবিদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এমন একটা প্রোগ্রাম পাবো তা কখনও আশাকরিনি, বিশ্ববিদ্যালয় হলো মুক্ত জ্ঞান চর্চার জায়গা সেখানে এমন আধাত্মিক গানের পরিবেশ তৈরি হবে তা ছিলো কল্পনাতীত। আমাদের মাঝে প্রায় বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই আছে কাওয়ালী গান কি তারা জানেন না কিংবা সুফীবাদ কি? তার সম্পর্কেও ভালো ধারণা নেই।
যদিও আমরা লালন সম্পর্কে যতটা জানি, সুফীবাদ সম্পর্কে ততটা জানি না। আমার কাছে মনে হয়, সুফীবাদকে জানতে হলে তাদের গানকে জানতে হবে, গানের মহত্ত্বকে ধারন করতে হবে, আমর জানি "শত কষ্টের ভীড়েও গান মানুষের অন্তরকে ছুয়ে যায়"। তাই এমন ভিন্ন ধর্মী আয়োজনকে আমরা সবাই সাদরে গ্রহণ করি,আমরা চাই এমন আরো সুন্দর সুন্দর সাহিত্য / সংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন হোক।