ঢাবি সাংবাদিক সমিতির ৩৯ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

ঢাবি
  © টিবিএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে। ‘তথ্যে তারুণ্যে নিত্য সত্যে’- স্লোগানকে ধারণ করে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় টিএসসির ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের অভ্যন্তরীণ ক্রীড়া কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটেন।

পরে উপাচার্যের নেতৃত্বে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র চত্বরে একটি র‌্যালি বের করা হয়। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আল সাদী ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ, সমিতির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য খায়রুল আনোয়ার মুকুল, খায়রুজ্জামান কামাল, আফতাব উদ্দিন মানিক ও মশিউর রহমানসহ বর্তমান কমিটির অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সমিতির সদস্যরা এবং সমিতি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা নিষ্ঠা ও সততার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। ভবিষ্যতেও তাদের এই পেশাদারিত্ব অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সকলকে সাথে নিয়ে দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও আন্তরিকতার সাথে বিভিন্ন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে এগিয়ে যাবে। এই অগ্রযাত্রায় সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য উপাচার্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান।

প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা মানুষের জীবনে গণযোগাযোগের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, তরুণ সাংবাদিকদের কর্মচাঞ্চল্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি পরিচালিত হয়ে আসছে। প্রশাসনকে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে কাজ করতে সমিতির সদস্যরা সহযোগিতা করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্যদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।

খায়রুজ্জামান কামাল বলেন, আমরা যখন সাংবাদিকতা করতাম তখন আমরা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পক্ষে কথা বলতাম। এখনো এই সাংবাদিক সমিতিতে সেই চর্চাই হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় সমিতির সাবেক সদস্যরা বীরদর্পে কাজ করছে। সাংবাদিকতা ছাড়াও তারা অন্যান্য পেশায় সুনাম রেখে চলছে। এর সদস্যরা সারাদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রতিনিধিত্ব করছে। পেশাদারিত্বের ক্ষেত্রে সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা তাদের ভালো কাজের সুবাদে সব জায়গায় সুফল ভোগ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি হলো ওয়ান অব দ্য থিংক ট্যাংক। সমিতির প্রতিষ্ঠাকালীন অন্য দুই সদস্য খায়রুল আনোয়ার মুকুল ও আফতাব উদ্দিন মানিক তরুণ সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে অনুপ্রেরণমূলক বক্তব্য প্রদান করেন।

সভাপতির বক্তব্যে আল সাদী ভূঁইয়া বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা সবসময় ইতিবাচক কাজের মাধ্যমে তাদের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। নিজেদের পেশাদারিত্ব পালনের মাধ্যমে জাতির সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির অবদান অপরিসীম। আমরা সবসময় মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ধারণ করি। জুলাই বিপ্লবের ফলে ক্যাম্পাসে দেরিতে হলেও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ফিরে এসেছে। যা আমাদের এ্যাকাডেমিক পরিবেশকে আরও সমৃদ্ধ করবে বলে মনে করি।

‘তথ্যে তারুণ্যে নিত্য সত্যে’ স্লোগানকে ধারণ করে ১৯৮৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে অদ্যাবধি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিসর, এমনকি জাতীয়ভাবে সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য ও আস্থার সংগঠন হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে সংগঠনটি। ডুজার প্রত্যেক সদস্য সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতা, পেশাদারিত্ব ও বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রেখে সাহসের সাথে সত্য প্রকাশ করে যাচ্ছেন। প্রতিনিয়ত নানা প্রতিবন্ধকতা ও প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে তারা আপসহীনভাবে কাজ করছেন। সংগঠনটি দেশ ও জাতির বিভিন্ন সংকটেও রেখেছে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা।