পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালিদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাবিতে সমাবেশ 

ঢাবি
  © সংগৃহীত

পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে সন্ত্রাসী গ্রুপ কর্তৃক বাঙালি নিরস্ত্র নাগরিক হত্যা, মসজিদে হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট বন্ধ ও মানুষের অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) একদল শিক্ষার্থী। 

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘স্টুডেন্টস ফর  সভারেন্টি’র ব্যানারে এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। 

এ সময় সমতলে খবর দে জুমল্যান্ডের কবর দে ; আমরা সবাই বাংলাদেশী, কেউ নয় আদিবাসী ; আদিবাসী বলে যারা, বাংলাদেশের শত্রু তারা ; মামুন ভাই মরল কেন প্রশাসন জবাব চাই ইত্যাদি স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা পার্বত্য চট্টগ্রামে অবস্থানরত সকল নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণে  সকল সন্ত্রাসীদের চিহ্নিতকরণের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনা ও সেনা ক্যাম্প বৃদ্ধিসহ চার দফা দাবি জানান।

দাবি গুলো হলো, পাবর্ত্য চট্টগ্রামে অবস্থানরত স্বশস্ত্র সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে; পার্বত্য চট্টগ্রামে সকল প্রকার অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে; পার্বত্য চট্টগ্রামের নিরস্ত্র সাধারণ নাগরিকদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করণে সেনাবাহিনীকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে এবং নিরাপত্তা ঝুঁকিতে থাকা জায়গাগুলোতে সেনা ক্যাম্প বাড়াতে হবে; পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির অসংবিধানিক ধারাগুলো বাতিল করতে হবে।

পাহাড়ে অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য আওয়ামী লীগ ও ভারতকে দায়ী করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিনহাজ তৌকি। তিনি বলেন, গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের পর থেকেই আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসর ভারতের মদদে পরিকল্পিতভাবে সারা দেশে নানা সেক্টরে অস্থিরতা, অস্থিতিশীলতা তৈরির অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের সাম্প্রতিক এই সংঘাত ও সন্ত্রাসী তৎপরতাও তাদের সেই চক্রান্তেরই ধারাবাহিকতা মাত্র। কেন না, শুরু থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে উপজাতীয়রা তাদের ৫% কোটার দাবিতে মিছিল, মিটিং, আন্দোলন করেছে। কিন্তু ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকেই তারা ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। 

মিনহাজ বলেন, তারা নিজেদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অংশীদার দাবি করে নতুন বিভিন্ন দাবিতে সংঘটিত হতে শুরু করে এবং খাগড়াছড়িসহ বিভিন্ন স্বস্থানে তারা ধারাবাহিক কর্মসূচিও পালন করতে থাকে। তখন থেকেই অনুমান করা যাচ্ছিল যে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের বদলা হিসেবে ভারত তাদের দোসরদের মদদ দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে আবারও ষড়যন্ত্র শুরু করবে। বাস্তবে সেটারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে সাম্প্রতিক তাদের উগ্র সাম্প্রদায়িক হামলা, হত্যা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনার মাধ্যমে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা যারা করছে তাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

পাহাড়ে বাঙ্গালীদের রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন,  আপনারা কেউই জানেন না বাঙালীরা তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হতে পারবে না, স্থায়ী পরিষদের চেয়ারম্যান হতে পারবে না। আমাদেরকে সেখানে জিম্মির মত রাখা হয়।  আজকে ৫০ বছর ধরে পাহাড়ে যারা  মারা গিয়েছে তারা শুধু বাঙালী নয়, তারা ধর্মীয় ভাবে মুসলিমও। যারা ইসলাম নিয়ে রাজনীতি করছেন ফিলিস্তিন নিয়ে  কাশ্মীর নিয়ে তারা ব্যাপক চিন্তিত কারন তারা মুসলিম। আপনাদের কি পাহাড়ের নির্যাতিতদের মুসলিম মনে হয় না৷?পাহাড়ে বাঙালি নির্যাতনের ইতিহাস টেনে তিনি বলেন - তাদের এই খেলা নতুন নয় তারা এটা শুরু করেছে ৭৩ থেকে। প্রথমে শুরুতেই পার্বত্য চট্টগ্রামে কোনো সেনাশাসন ছিল না। যখন সেখানে পুলিশ বাহীনী অনিরাপদ হয়ে পড়ে তখনই প্রয়োজন হয় সেনাবাহিনীর। পার্বত্য চট্টগ্রামে অবস্থানরত সকল বাঙালী  নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণে  সকল সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধে  সেনাশাসনের  তৎপরতা বাড়াতে হবে।