'স্বৈরাচারী সরকার পতনে যেমন খুশি, নিজেদের ভিসি পেয়ে তেমন খুশি’

জবি
  © টিবিএম

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে উপাচার্যদের পদত্যাগের হিড়িক পড়ে যায়। অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় গুলো। অন্তবর্তীকালীন সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের পর নানান সমীকরণ মিলিয়ে উদ্যোগ নেয়া হয় উপাচার্য নিয়োগের। 

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর সবখানে আওয়াজ উঠে সংস্কারের। তারি ধারাবাহিকতায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার আন্দোলন প্লাটফর্ম থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা দাবি তুলে নিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য নিয়োগের। 

বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর পর‌ই শুরু হয় জবি থেকে ভিসি নিয়োগ নিয়ে আন্দোলন। অবস্থান কর্মসূচি, গণ জমায়েত, গণস্বাক্ষর, বিভাগ সংযোগ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে চলে এ আন্দোলন। সরাসরি আন্দোলনের পাশাপাশি চলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও, অনলাইনেও গ্রহণ করা হয় নানা কর্মসূচি।আন্দোলনের আওয়াজ গুলো স্পর্শ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়াল গুলোতে। গ্রাফিত্তি কর্মসূচির মাধ্যমে ভবনের দেয়াল গুলো হয়ে ওঠে দাবি আদায়ের ফেস্টুন।

সকল জল্পনা কল্পনা শেষে গত বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পায় সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম। উপাচার্য নিয়োগ পর রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) জবি থেকে ভিসি নিয়োগ আন্দোলনের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন উপাচার্য ড. রেজাউল করিম।

এসময় আন্দোলনের অন্যতম উদ্যাক্তা সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক মোস্তফা হাসান বলেন, এই আন্দোলন নিয়ে আমরা এতটাই আন্তরিক ছিলাম যে কেউ পিছুপা হয়নি। বৃষ্টির মধ্যে, রৌদ্রের মধ্যে, মঙ্গলবার বন্ধের দিন, নিচ তলা থেকে ১২ তলা পর্যন্ত আমরা পায়ে হেঁটে উঠেছি। আমাদের চাওয়া যা ছিল আমরা তা পেয়েছি আল্লাহ পাকের কাছে হাজার শুকরিয়া।

এনিয়ে ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাসির আহমাদ বলেন, আমরা স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর যে আনন্দ পেয়েছি জবি থেকে ভিসি পেয়ে সেই এক‌ই রকম আনন্দ পেয়েছি। আন্দোলন করে আমরা সফল হয়েছি এক‌ই ভাবে পাশে থেকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানের করার চেষ্টা করবো।


এই আন্দোলনের আহ্বায়ক ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন বলেন, ৫ আগস্টের পর পরই শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে এই আন্দোলন শুরু করি। আমরা টানা একমাস ধারাবাহিক কর্মসূচি দিয়েছি যাতে এটি বানচাল না হয়। আমাদেরকে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে যারা সহযোগিতা করছে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।


তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে দাবি আদায়ে আমরা পিছপা হবো না। উপাচার্য পেতে আমরা পক্ষে আন্দোলন করেছি দরকার পড়লে আমরা বিপক্ষে যেতে পারি।


সৌজন্য সাক্ষাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপাচার্যের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন সংশোধন থেকে শুরু করে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষার্থীদের সুযোগ সুবিধা নিয়ে বিভিন্ন দাবি জানান।

এনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত উপাচার্য ড. রেজাউল করিম বলেন, যারা আন্দোলনে ছিল সবার প্রতি শ্রদ্ধা রাখছি। আমরা সবাই মিলে কাজ করবো, সবাই মিলে সফল হবো ইনশাআল্লাহ।