পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটিতে ইসলামি বিশেষজ্ঞ না থাকায় ঢাবির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের উদ্বেগ 

ঢাবি
  © ফাইল ফটো

গত ১৫ সেপ্টেম্বর জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কর্তৃক প্রণীত ও মুদ্রিত সকল পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন ও সমন্বয়ের লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের গঠিত সমন্বয় কমিটিতে কোনো ইসলামি বিশেষজ্ঞ না থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। 

বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সেমিনার কক্ষে বিভাগটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এক মতবিনিময় সভায় এ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। 

এসময় উক্ত বিভাগ থেকে ২ জন আরবি সাহিত্য বিভাগ থেকে ২জনসহ মোট ৪জন ইসলামি বিশেষজ্ঞকে অন্তর্ভুক্ত করে কমিটি পুনর্গঠন করার দাবি জানান তার। অন্যথায় যথাযথভাবে পরিমার্জন ও ইসলামি মূল্যবোধ বিরোধী উপাদান পরিমার্জন সম্ভব হবে না মর্মে অভিমত ব্যক্ত করেন তারা।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ছানাউল্লাহর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা৷ সভায় শিক্ষা মন্ত্রনালয় কর্তৃক গঠিত কমিটিতে কোন ইসলামি বিশেষজ্ঞ না থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার মূলধারার সকল স্তরে (প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয়) ইসলাম শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার জোর দাবি জানানো হয়। 

বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শফিক আহমেদ বলেন, "এনসিটিবি কর্তৃক গঠিত কমিটিতে কোন ইসলামি বিশেষজ্ঞ রাখা হয়নি। বিষয়টি ধর্মপ্রাণ মানুষের জন্য সত্যিই উদ্বেগজনক।" বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের ছাত্র মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, "বিগত সরকারের আমলে পাঠ্যপুস্তকে অনেক অনৈসলামিক উপায়, উপাদান সংযুক্ত করা হয়েছিল এবং তা নিয়ে দেশের সর্ব মহলে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। ইসলামি মূল্যবোধের সাথে সঙ্গতি রেখে পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জনের জন্য ইসলামি বিশেষজ্ঞের কোন বিকল্প নেই।" 

আরেকজন শিক্ষার্থী মো. হাসান তারেক খান বলেন, "এনসিটিবি কর্তৃক গঠিত কমিটিতে বিজ্ঞ ইসলামিক ব্যক্তিত্বের অনুপস্থিতি কমিটির কার্যক্রমকে বিতর্কিত করবে।" 

উল্লেখ্য, গত ১৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সহকারী সচিব (সরকারি মাধ্যমিক-২) মো. ইয়ানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জনে ১০ সদস্য বিশিষ্ট একটি সমন্বয় কমিটি দেওয়া হয়। সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক করা হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. খম কবিরুল ইসলামকে এবং সদস্যসচিব করা হয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. ইয়ানুর রহমানকে। 

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন—শিক্ষা গবেষক রাখাল রাহা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর কামরুল হাসান মামুন, ঢাবির বাংলা বিভাগের প্রফেসর ও বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম, ঢাবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর সামিনা লুৎফা নিত্রা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাসুদ আখতার খান, এনসিটিবির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান, এনসিটিবি শিক্ষাক্রমের সদস্য প্রফেসর রবিউল কবীর চৌধুরী এবং এনসিটিবি প্রাথমিক শিক্ষাক্রমের সদস্য প্রফেসর এ এফ এম সারোয়ার জাহান।