ঢাবিতে "পলিথিন ও এসইউপি বর্জন এবং বৃক্ষরোপণ ও প্রকৃতি চিত্রাঙ্কন” কর্মসূচি পালিত

 ঢাবি
  © টিবিএম

'সম্প্রীতির ভাবনায় বৈষম্যহীন আবহে টেকসই পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা' স্লোগানকে সামনে রেখে সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে "পলিথিন ও এসইউপি বর্জন এবং বৃক্ষরোপণ ও প্রকৃতি চিত্রাঙ্কন" কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন মলচত্বরে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। 

এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী পৃথক পৃথকভাবে একটি করে গাছের চারা রোপণ করেন।

পরে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসেইন চৌধুরী বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন এবং রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আহসান হাবীব বিষয়ভিত্তিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ ড. আব্দুল্লাহ-আল-মামুন অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে দেশের তাপমাত্রা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবছর দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। নোয়াখালী ও ফেনীতে ব্যতিক্রমী এক বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণ রোধ করা না গেলে ২০৫০ থেকে ২০৭৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশের এক তৃতীয়াংশ অঞ্চল সমুদ্রের গভীরে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি নির্বিচারে বন উজাড় বন্ধ এবং প্রাকৃতিক বন সংরক্ষণের উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, প্রয়োজনে এ সংক্রান্ত আইনের সংস্কার করা হবে। 


তিনি বলেন, পলিথিন নিষিদ্ধ করে ২০০২ সালে আইন প্রণয়ন করা হয়। কিন্তু এ আইনের যথাযথ প্রয়োগ ঘটানো হয় নি। প্লাস্টিক ও পলিথিনের উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহার বন্ধে এ আইনের কার্যকর প্রয়োগ ঘটানো হবে উল্লেখ করে তিনি এক্ষেত্রে গণসচেতনতা সৃষ্টির উপর গুরুত্বারোপ করেন। এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালনের জন্য তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, পরিবেশ রক্ষায় সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়তে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের পরিবেশ ক্লাবের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। প্রকৃতি চিত্রাঙ্কনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম আরও জোরদার করার মাধ্যমে পরিবেশ সংরক্ষণ এবং সমাজ উন্নয়নে শিক্ষার্থীরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি আশাপ্রকাশ করেন।

এছাড়া, নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে প্রকৃতি চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভার প্রাক্কালে অতিথিবৃন্দ প্রকৃতি চিত্রাঙ্কন কর্মসূচি পরিদর্শন করেন।