অবশেষে চালু হলো ছাত্রলীগের হাতে বন্ধ হওয়া ঢাবির জিয়া হলের মেস

ঢাবি
  © টিবিএম ফটো

দীর্ঘ দুই বছর বন্ধ থাকার পর আবারও চালু হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের ‘বন্ধন মেস’। অভিযোগ রয়েছে, সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের জিয়া হল শাখার প্রভাবে এতো দিন ধরে বন্ধ ছিলো এই মেস।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দুপুরের খাবারে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য মেস চালু হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, ব্যাপক উদ্দীপনা নিয়ে নিজেদের খাবার খাচ্ছেন হলের শিক্ষার্থীরা। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও নিরবিলি পরিবেশে নিজ নিজ খাবার গ্রহণ করছেন। প্রথম সেশনে ১৬০ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে শুরু করার পর অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন নতুন সদস্য হওয়ার।

পুরাতন মেস নতুন করে চালু হওয়ায় নতুন নতুন স্বাদে বিমোহিত শিক্ষার্থীরা। রাজু শেখ নামের হলের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ক্যান্টিনের পঁচা খাবার খেতে খেতে একদম অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। এখন মেসে খাবার খাচ্ছি, অসাধারণ স্বাদ। অনেক তৃপ্তি নিয়ে খাচ্ছি।’

মেসের ম্যানেজার ও অডিটর হিসেবে চারজন শিক্ষার্থীকে দায়িত্ব দিয়েছে হল প্রশাসন। ম্যানেজার হিসেবে মাকসুদুল হাসান (মারুফ) ও মো. তামিম হোসাইন এবং অডিটর হিসেবে এনামুল হক ও আব্দুল্লাহ আল নোমান দায়িত্ব পালন করছেন।

ম্যানেজার মারুফ বলেন, ‘২টি ক্যান্টিন থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা মানসম্মত ও স্বাস্থ্যকর খাবারের জন্য প্রতিনিয়তই ভোগান্তির শিকার হয়েছে। তাদের একজন হিসেবে তাই আমিও এই পরিস্থিতির স্বীকার। এই অভিজ্ঞতা থেকে হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি লাঘবে তাই বিনা বেতনেই মেস পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহণ করা। ছাত্রলীগের হস্তক্ষেপে বন্ধ হয়ে যাওয়া এই ঐতিহ্যবাহী মেসটি পুনরায় চালু করতে হল প্রশাসন ও হলের ছাত্র প্রতিনিধিরাও অনেক সহযোগিতা করেছেন। আশা করি বন্ধন মেসের মাধ্যমে আবারো শিক্ষার্থীদের স্বল্পমূল্যে মানসম্মত খাবার খাওয়ানো সম্ভব হবে‌।’

এদিকে জিয়া হল ছাত্রলীগের সভাপতি আজহারুল ইসলাম মামুন ও সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হোসেন শান্ত'র সরাসরি হস্তক্ষেপে বন্ধন মেসে শিক্ষার্থীদের খাওয়া নিষেধ করা হয়েছিল। বিশেষ করে, প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের মেসে খাওয়া ছিলো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

মেসের জায়গায় ক্যান্টিন চালু করতে ক্যান্টিন মালিকের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ঘুষও নিয়েছিলেন তৎকালীন হল শাখার এই দুই নেতা। 

এ বিষয়ে হলের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘আজহার ও শান্ত (হল ছাত্রলীগ নেতা) ক্যান্টিন মালিক তৌহিদের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা চাঁদা নিয়ে এই মেস বন্ধ করে নতুন ক্যান্টিন চালু করেছিল। টাকা দেয়ার বিষয়টি তৌহিদ নিজেই আমার কাছে স্বীকার করেছে।’