ঢাবি শিক্ষার্থীর ‘প্যান্ট খুলে নেওয়ার হুমকি’ ছাত্রদল নেতার

ঢাবি
ইনসেটে বরিশাল জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক সোহেল শাহরিয়ার  © সংগৃহীত

বরিশাল জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক সোহেল শাহরিয়ারের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থীকে ‘দেখে নেওয়া’র হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া আরেক ব্যক্তিকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি জানিয়ে সম্প্রতি মাহমুদুল হাসান নামের ঢাবির মুহসিন হলের ওই শিক্ষার্থী বিএনপি মহাসচিব এবং ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের বরাবর একটি অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। 

অভিযোগপত্রে জানানো হয়েছে, ‘সোহেল শাহরিয়ার কখনো নিজেকে কেন্দ্রীয় যুবদলের সদস্য, আবার কখনো ছাত্রদলের নেতা হিসেবে পরিচয় দিয়ে মানুষকে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছেন। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী হিসেবে পরিচিত আনিসুর রহমান সোহাগ নামক এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট জালিয়াতির অভিযোগ উঠলে সোহেল শাহরিয়ার তাকে রক্ষা করতে সক্রিয় হন।’

এছাড়াও আনিসুর রহমান সোহাগ পতিত স্বৈরাচারের সুবিধাভোগী এবং মদদপুষ্ট। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সহকারী সচিব হাফিজুর রহমান লিকুর ছত্রছায়ায় একসময় তিনি ফুলেফেঁপে উঠছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি সার্টিফিকেট জালিয়াতি করে রাজধানীর একটা স্বনামধন্য ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের অধ্যক্ষ বনে যান বলেও উল্লেখ করা হয়েছে একই অভিযোগপত্রে।

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে সরাসরি জীবননাশের হুমকি দেওয়ার ঘটনায় সোহেল শাহরিয়ারের নাম আবারও আলোচনায় আসে। হুমকিদানের অডিও ক্লিপে ‘শালা তোর প্যান্ট খুলে ফেলবো’সহ এমন নানা অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন সোহেল শাহরিয়ার।

একই সাথে ঢাবির ওই শিক্ষার্থীকে নানা ধরনের হুমকিও দেন। ফলে নিরাপত্তাহীনতায় শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) দায়ের করেছেন তিনি। তার অভিযোগ—সোহেল তাকে বারবার হুমকি দিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করেছেন এবং তিনি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় দপ্তর বরাবর যোগাযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি। 

অন্যদিকে পাশাপাশি এস. এম রাকিবুজ্জামান নামক আরেক ব্যক্তিকে সরাসরি ‘গুলি করা’র হুমকি দিয়েছেন সোহেল শাহরিয়ার। এ সংক্রান্ত অডিওতে তাকে বলথে শোনা গেছে,‘একদম শুট কইরা মাইরা হালামু। ওর জিহ্বে টাইনা কাইট্টাহালামু’। 

এ ঘটনার পর রাকিবুজ্জামানের পরিবার ভয় ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। এ বিষয়ে তিনি গত ২৮ নভেম্বর মোহাম্মদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। যারা জিডি নম্বর ২২৮৩। এ বিষয়ে তিনি প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন।

ভুক্তভোগী পরিবার জানিয়েছে—সোহেল শাহরিয়ার দলীয় নাম এবং দলীয় নেতাদের সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ছবি পোস্ট করে নিজেকে প্রভাবশালী হিসেবে উপস্থাপন করেন। আর এসবকে তিনি তার অপকর্মের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেন।

এ বিষয়ে জানতে বরিশাল জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক সোহেল শাহরিয়ারের ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। তাকে যতবারই কল করা হয়েছে, ততবারই তিনি তা কেটে দিয়েছেন। এছাড়াও ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।