দোষ ঢাকতে শিক্ষার্থীদের কাছে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নিলেন বেরোবি শিক্ষক রব্বানী

বেরোবি
  © সংগৃহীত

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ গোলাম রব্বানীর বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে যেতে বাধা দেওয়া, নিয়োগ জালিয়াতী এবং অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনা গণমাধ্যমে উঠে আসে। এসব দোষ ঢাকতে নিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাছে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নিলেন শিক্ষক গোলাম রব্বানী।

জানা যায়, গতকাল (৩০ নভেম্বর) এবং আজ (১লা ডিসেম্বর) বেরোবির ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক গোলাম রব্বানী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ থেকে ১৬ তম ব্যাচের সকল শিক্ষার্থীদের ডাকেন। তাঁর ডাকে শুধু নবীন ১৬ তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা আসেন। তখন শিক্ষক গোলাম রব্বানী কোন নিয়ম-নীতি ছাড়াই সাদা কাগজে পরীক্ষার্থীদের স্বাক্ষর এবং মোবাইল নাম্বার দিতে বলেন। এছাড়া ১২ তম ব্যাচের (স্নাতকোত্তর অধ্যায়নরত) শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শেষে শিক্ষক গোলাম রব্বানী তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের কথা তুলে ধরেন শিক্ষার্থীদেরকে এর প্রতিবাদ করতে বলেন এবং সাদা কাগজে স্বাক্ষর এবং মোবাইল নাম্বার চান।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টারের কাছে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে শিক্ষক গোলাম রব্বানী পরীক্ষা শেষে তাদের স্বাক্ষর এবং মোবাইল নাম্বার নিয়েছেন। এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর বরাবর তাদেরকে আগামীকাল যেতে হবে এবং তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে।

শিক্ষার্থীরা আরও জানায়, তৎক্ষণাৎ যারা ভিসির কাছে যেতে ইচ্ছুক ছিল তাদেরকে তারা বলেছেন, উনি অন্যায় করলে কিংবা নির্দোষ হলে নিজে প্রমাণ করবে তাদের কেন সেখানে গিয়ে প্রমাণ করতে হবে।

শিক্ষার্থীরা জানায়, পরীক্ষা শেষে গোলাম রাব্বানী তাদের বলতেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি সব সময় ন্যায়ের পক্ষে লড়েছেন, অন্যায়কে কখনো প্রশ্রয় দেয়নি। বর্তমান তাকে মানসিকভাবে ও আর্থিকভাবে হেনস্থা করার জন্য এক শ্রেণী তার বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে। এজন্য শিক্ষার্থীরা যেন তার পাশে থাকে, ফেসবুকসহ অন্যান্য যে সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হচ্ছে এখানে যেন তারা স্টুডেন্ট হিসেবে এর বিরোধিতা করে।

শিক্ষার্থীদের কাছে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেওয়ার বিষয়ে ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক আরা তানজিয়া বলেন, আমি তো পরীক্ষার ডিউটিতে ছিলাম। শিক্ষার্থীরাই এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবে। 

এ বিষয়ে শিক্ষক গোলাম রব্বানীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি কিছুই বলবো না, আপনাদের যা ইচ্ছা তাই করেন। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী বলেন, আমিও বিষয়টা শুনলাম। এটা সত্য হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং আগামী সিন্ডিকেট সভায় তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।