জবি শিক্ষার্থীদের বাসে হামলা, মালিক পক্ষের দায় স্বীকার
- জবি প্রতিনিধি;
- প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৪ PM , আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৪ PM
![জবি](https://bangladeshmoments.com/resources/img/article/202412/N_-_2024-12-29T195931.077_-12959.jpg)
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের বহনকারী উল্কা-৪ নামক বাসে একতা পরিবহনের স্টাফদের দ্বারা হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে দায় স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে সমঝোতার জন্য দেখা করেছে মালিকপক্ষ। রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকায় উত্তরা রুটের উল্কা-৪ বাসটি শিক্ষার্থী নিয়ে ক্যাম্পাসে আসার সময় এমন ঘটনা ঘটে। এতে উল্কা বাসের ড্রাইভার,হেল্পার ও সাধারণ শিক্ষার্থী ৭ জনসহ মোট ৯ জন আহত হয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের বাস মহাখালী ইউটার্ন এলাকায় আসলে আমাদের বাসের সামনে একতা বাস অবস্থান করছিলো। অনেকক্ষণ একই জায়গায় দাঁড়িয়ে পুরো রাস্তা ব্লক করে রেখেছিলো। হর্ন দিলেও বাস সাইড দিচ্ছিলো না। যার ফলে সামনে এগোতে পারছিলো জবির বাসও। এ ঘটনায় জবির উল্কা-৪ বাস চালকের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয় একতা বাসের চালকের সঙ্গে। এক পর্যায়ে মহাখালী বাস টার্মিনালের প্রায় পঞ্চাশজন বাসচালক ও ড্রাইভার মিলে ইট-পাটকেল ও লাঠিসোঁটা দিয়ে হামলা চালায় জবির শিক্ষার্থী ও বাসের ওপর।
হামলায় আহতদের মধ্যে বাস ড্রাইভারকে গুরুত্বতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার নিয়ে আসা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
জবির উল্কা-৪ বাস চালক জগদীশ বলেন, মহাখালী বাস টার্মিনালে আমাদের গাড়ির সামনে একতার বাস ছিলো। একতা বাসের সামনে কোনো গাড়ি ছিলো না। তাদের বারবার সাইড দেয়ার কথা বললেও তারা সাইড না দিয়ে বরং গাড়ি থেকে হেল্পার ও ড্রাইভার লাঠি নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। সেখানে একতা বাসের আরো অনেক কর্মচারী ছিলেন তারাও আমাদের ওপর হামলা করে। হামলা করে আমার হাত ভেঙ্গে দিয়েছে এবং সারা শরীরে জখম করে করেছে, চোখে আঘাত করেছে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান সোহাগ বলেন, একতা বাস এক জায়গায় অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার বিষয়ে আমাদের বাস চালক মামা যখন একতা বাসের ড্রাইভারকে বলে তখন সে লাঠি দিয়ে আমাদের বাসচালক মামার উপর হামলা চালায়। তারপর তাকে ধরে নিয়ে যেতে চাইলে আমরা বাধা দিই। তখন আমাদের উপরও হামলা চালায়। বাসে মেয়েরা ছিলো। তাদের উপরও ইট-পাথর ছুড়ে মারে।
উক্ত ঘটনার সংবাদ পেয়ে উপাচার্য অধ্যাপক মোঃ রেজাউল করিম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে আসেন এবং আহতের চিকিৎসা বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন। পরবর্তীতে ঢাকা জেলা বাস-মিনিবাস সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ বিষয়টি সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডির সাথে আলোচনায় বসেন। পারস্পরিক আলোচনার পর বিশ্ববিদ্যালয় বাস মেরামত, আহতদের চিকিৎসা ব্যয় বহন এবং হামলায় জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনার সম্মতির ভিত্তিতে দু’পক্ষের সমঝোতায় বিষয়টি সুরাহা হয়।
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদানে বদ্ধ পরিকর। হামলার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করণে এবং আহতদের উন্নত চিকিৎসাসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে মালিকপক্ষের সাথে কথা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, 'ঢাকা জেলা বাস-মিনিবাস সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং পরবর্তীতে মহাখালী এলাকায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তার আশ্বাস দিয়েছেন।'