ইচ্ছাকৃত ফেল করানোর অভিযোগে করা পুনঃ নিরীক্ষণে বাড়ছে চবি ছাত্রীর রেজাল্ট
- সারওয়ার মাহমুদ,চবি
- প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:০৭ PM , আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:০৭ PM
গত বছরের ৫ ই জুন একটি কোর্সে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত ফেল করানোর অভিযোগ এনে খাতা পুনঃ নিরীক্ষণের আবেদন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের একজন শিক্ষার্থী।এই আবেদনের প্রেক্ষিতে দুই দফা তদন্তের পর দীর্ঘ ৭ মাস পর ফলাফল পরিবর্তনের সুপারিশ করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তদন্ত কমিটি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ভোক্তভোগী শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট কোর্সে পূর্ণ নম্বরের পরীক্ষা দেন কিন্তু Chem-3203 কোর্সের উত্তরপত্রে বেশ কয়েকটি উত্তর বলেপেন দিয়ে কাটা পাওয়া যায়।কাটা থাকার কারণে নম্বর দেওয়া সম্ভব হয়নি এই প্রশ্নের উত্তর গুলোতে। তদন্ত কমিটি ভালো ভাবে দফা দফায় বিভিন্ন ভাবে তথ্য প্রমাণ সাক্ষ্য গ্রহণের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে যাচাই বাছাই করেছে যে উত্তর গুলো ঐ শিক্ষার্থী নিজে কেটেছেন কিনা। তবে দীর্ঘ তদন্ত প্রক্রিয়ার পরে উত্তরপত্রে উত্তর কাটা থাকার ঘটনায় শিক্ষার্থীর দায় পায়নি তদন্ত কমিটি। ফলাফল পরিবর্তনের বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. রেজাউল আজিম মন্তব্য করতে রাজি হননি বিস্তারিত জানতে রেজিস্ট্রারের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। পরবর্তীতে এই ব্যাপারে চবি রেজিস্ট্রার(ভারপ্রাপ্ত ) অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম বলেন- এখানে উত্তরপত্রে কিছু অস্পষ্টতা ছিল তাই তদন্ত কমিটি ফলাফল পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে, মেয়েটি নির্দোষ উত্তরপত্রে অস্পষ্টতার সাথে ছাত্রীর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
ফলাফল পরিবর্তনের সুপারিশের পরে যারা উত্তরপত্র মূল্যায়ন করেছেন পরীক্ষকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান- আপাতত আমরা ফলাফল পরিবর্তনের জন্য বলেছি কারা এই ঘটনায় দায়ী এই বিষয়টি এখনো পুরোপুরি বলা যাচ্ছে না।
তদন্ত কমিটির সুপারিশের পর ফলাফল পরিবর্তনের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে উপ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ফলাফল শাখা) খালেদ মিছবাহুল মোকর রবীন বলেন- সুপারিশের চিঠিটা এখনো আমাদের হাতে আসেনি,আমরা চিঠি পেলে পরীক্ষা কমিটিকে সংশোধিত ফলাফল প্রকাশের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলবো।
উল্লেখ্য গত বছরে ৩য় বর্ষের ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষায় অন্য সব কোর্সে A+ থেকে A- এর মধ্যে গ্রেড আসে কিন্তু এই কোর্সে ফেল চলে আসায় ফলাফলে অসামঞ্জস্যতা দেখা যায় । যেহেতু গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে এই একই কোর্স টিচারের বিরুদ্ধে অযাচিত ভাবে মানসিক চাপ প্রয়োগ ও গভীর রাতে ফোন দিয়ে উত্যক্ত করার অভিযোগ দেন ঐ ছাত্রী। টিচার প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে এই কোর্সে ফেল করিয়ে দেন এমন অভিযোগ এনে পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করেন। বিষয়টি সর্বপ্রথম বাংলাদেশ মোমেন্টসে সংবাদ প্রকাশিত হলে অন্যান্য মিডিয়াতেও আসে যার এবং সবার দৃষ্টিগোচর হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় পর পর দুইবার তদন্ত কমিটি গঠন করে এবং দীর্ঘ সাত মাস পর ভোক্তভোগী শিক্ষার্থীর ফলাফল পরিবর্তনের সুপারিশ করে।