সাড়ে ১২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ; ‘প্রমাণ করুন-ফেরত দেব’- সোহেল আহসান
- নোয়াখালী প্রতিনিধি:
- প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:৩৮ PM , আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:৩৮ PM

বিনিয়োগের নামে প্রবাসীদের সাড়ে ১২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে সৌদি আরব ও বাংলাদেশের সফল উদ্যোক্তা ও স্বনামধন্য ব্যবসায়ী সোহেল আহসানের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে একটি মহল নোয়াখালী জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে পোস্টার,ব্যানার ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে অপপ্রচার চালাতে খুব ব্যস্ত হয়ে পড়ছে।
তবে এমন অভিযোগের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে সোহেল আহসান সাংবাদিককে বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে যারা সাংবাদিকসহ বিভিন্ন মহলে সাড়ে ১২ কোটি টাকা আত্নসাতের অভিযোগ করে যে অপপ্রচার চালাচ্ছেন তাদের বলতে চাই আপনারা কেন আমার বিরুদ্ধে মামলা করছেন না? আপনারা কেন আইনি ভাবে না লড়ে সাংবাদিকদের বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে আমার মানহানির চেষ্টা করছেন? এখন যেহেতু সাংবাদিকদের সহায়তা চেয়েছেন সেহেতু আপনাদের ট্যাক্স ফাইল ও বিনিয়োগের টাকার অন্যান্য তথ্য-প্রমাণাদি জেলার ওনাদের নিকট প্রদান করুন এবং তা প্রমাণ করুন। নোয়াখালী প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের মাধ্যমে আমি আপনাদের দাবিকৃত টাকাগুলো ফেরত দিতে চাই।”
দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আমি তো কোথাও পালিয়ে যাই নাই। আমি দীর্ঘদিন যাবৎ সৌদি আরবে ব্যবসা করি এবং সেখানেই আছি। নোয়াখালীবাসীর কল্যাণে আমি সেখানে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান করেছি। যেখানে কয়েকশো মানুষের রুটি রুজি। প্রবাসের ঘাম ঝরানো টাকা নোয়াখালীতে ইনভেস্ট করেছি এটাই কি আমার অপরাধ? আমি নোয়াখালী জেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের কাছে এই বিচার দিলাম।
জানা যায়, সৌদি আরবে স্বনামধন্য কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বাংলাদেশের নোয়াখালীতে স্কাই ভিউ,মেহরান ডাইন, সেন্টার পয়েন্ট, হোটেল ভ্যালেন্টিনো, চেন্নাই এক্সপ্রেস ও স্বপ্ন সুপার শপ সহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী সোহেল আহসান।
সোহেল আহসান অভিযোগ করে বলেন, “ হারুনুর রশিদ ও আজিজুর রহমান গং প্রবাসে নিজেদের একটি হোটেল পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত পুঁজি ও আর্থিক যোগানের অনুরোধ করেন। এতে আমি বিভিন্ন ধাপে ৪ কোটি টাকা ব্যবসায়িক লভ্যাংশসহ ফেরত প্রদানের শর্তে চুক্তিবদ্ধ হয়ে বিনিয়োগ করি। পরবর্তীতে, সৌদি আইনানুযায়ী ওই হোটেলের বৈধ অনুমোদন না থাকায় সৌদি প্রশাসন হোটেলটি বন্ধ করে দেয়। এরপর আমি বিনিয়োগকৃত টাকা ফেরত চাইলে তারা তা দিতে অস্বীকার করেন। বিনিয়োগকৃত টাকা না পেয়ে আমি সৌদি আরবের আদালতে মামলা করি। একপযার্য়ে হারুন গংরা সৌদি আরব ছেড়ে পালিয়ে দেশে চলে আসেন। পরে তাদের সংঘটিত প্রতারণার বিরুদ্ধে আমি ঢাকায় বিজ্ঞ চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করি। মামলায় হারুনুর রশিদের স্ত্রী ফাহমিদা আক্তার গ্রেফতার হয়ে কাশিমপুর কারাগারে ৩ দিন কারাবরণ করেন মর্মে জানতে পারি।”
তিনি আরো বলেন, হারুনুর রশীদ, আজিজুর রহমান এবং আবুল হোসেন সরকারের ছেলে রহমত উল্ল্যাহ গং আমার বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে (র্যাব, সেনাবাহিনী, পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসক) বিভিন্ন অভিযোগ দিয়ে আসলে তার প্রেক্ষিতে আমার কাছে থাকা সবধরনের ডকুমেন্টস ইতোমধ্যে ফাইল করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দফতরে জমা দেই এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলেছি তাদের তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আমি তাদের টাকা দিতে চাই। কিন্তু প্রতারক চক্রের এই সদস্যগণ আমাকে কাগজপত্রের মাধ্যমে মোকাবিলা করতে না পেরে সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমাকে সামাজিক মর্যাদাহীন করার অপচেষ্টা করছে।
সোহেল আহসান আরো অভিযোগ করে বলেন, প্রকৃতপক্ষে হারুনুর রশিদ একজন হুন্ডি ব্যবসায়ী যা অবৈধ উপায়ে সরকারকে ফাঁকি দিয়ে কোটি টাকা বাণিজ্য করে চলেছে। তার কিছু ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার ঘাটাঘাটি করলেই বেরিয়ে আসবে, কোনো তদন্ত সংস্থা চাইলে আমরা তা সংরক্ষণ করে দিতে পারি।
উল্লেখ্য, গত ১৫ই জানুয়ারি জেলা শহরের একটি রেষ্টুরেন্টে হারুনুর রশীদ, আজিজুর রহমানের স্ত্রী ফারজানা ইয়াসমিন সহ কয়েকজন ব্যক্তি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সোহেল আহসানের বিরুদ্ধে সাড়ে ১২ কোটি টাকা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তোলেন।