শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বাজে মন্তব্যে বেরোবির সেই কর্মকর্তার শাস্তির দাবি

বেরোবি
  © সংগৃহীত

নিজেই অফিস ফাঁকি দিয়ে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বাজে মন্তব্য করায় বেরোবির সেই কর্মকর্তা রোকনুজ্জামানের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ড.ওয়াজেদ ইন্সটিটিউটের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অনিয়মিত অফিস  করার অভিযোগ পাওয়া গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সদস্যবৃন্দ তা সরোজমিনে প্রদক্ষিণ করতে যান।

সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রবিবার   অফিস শুরুর পর বেলা সাড়ে নয়টায় এবং বিকেল ৩টায় ১ জন কর্মকর্তা ছাড়া বাকি কাউকে অফিসে পাওয়া যায়নি। পরের দিন সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় ২,৩ জনকে উপস্থিত পাওয়া গেলে তারা সাংবাদিকদের দেখে চড়াও হয়ে সবাই একত্রিত হয়ে তেড়ে আসেন। 

এ সময় কর্মকর্তাদের মধ্যে রোকনুজ্জামান রোকন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে মোর ঘুরিয়ে বলেন, শিক্ষকরা ভর্তি পরীক্ষায় আশি হাজার টাকা করে নেয়, কর্মকর্তাদের ২/৩/৫ হাজার টাকা করে দেয়, রিপোর্ট করো। ডিপার্টমেন্টে যাও, কোন শিক্ষক কয়টার দিকে আসে, দশটার সময় আসে এইগুলা রিপোর্ট করো।ছয় মাসের ক্লাশ দুই দিনে শেষ করে দিবে এটা হবে না, কোন শিক্ষক পরীক্ষা না নিয়ে নম্বর দিছে, এইগুলা রিপোর্ট হবে। ঐগুলা রিপোর্ট তো তোমরা করতে পারবা না, নম্বরের ভয় আছে, ফেল করায় দিবে।

এ সময় সাংবাদিক সমিতির এক সদস্য তার এই আক্রমণাত্মক বক্তব্যের ভিডিও ধারণ করে সাংবাদিক সমিতির পেজে প্রকাশ করলে  শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মাঝে মালোচনার ঝড় উঠে।

ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ সহযোগী অধ্যাপক জাকিউর রহমান তার ফেসবুক ওয়ালে ভিডিওটি শেয়ার দিয়ে লিখেন, ২০২৩-২৪ GST পারিতোষিক সংক্রান্ত থলের বিড়াল অবশেষে বাইরে আসলো! মাসে মাসে শিক্ষক সমিতির চাঁদা কি এসব তামাশা দেখার জন্য দিচ্ছি!! ডিয়ার ফ্যালাস, "দেখেন আপনারা যেটা ভাল মনে করেন।"

পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারি অধ্যাপক  বিপুল হোসেন তার ফেসবুক ওয়ালে ভিডিওটি শেয়ার দিয়ে লিখেন, একজন কর্মকর্তার এরকম ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়! সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

ইমরানুল হাসান ইমন নামের এক শিক্ষার্থী  মন্তব্যের ঘরে লেখেন,ভিডিওর লোকটাকে বিচারের আওতায় আনা হোক।

শিক্ষার্থী রিপন আহামেদ লিখেন ,কথা বার্তার টোন দেখে তো মনে চোর বাটপার এরা। জিজ্ঞেস করলে দুর্নীতিবাজদের গায়ে লাগে।

"এখন" টিভির সাংবাদিক কেএম হিমেল আহামেদ লিখেন, এই বাটপারকে ইদানীং রিসার্চার/ গবেষক হিসেবে 'সট' দিতে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে।

এ বিষয়ে ভূগোল পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ সহযোগী অধ্যাপক জাকিউর রহমান জানান, একজন কর্মকর্তা হয়ে শিক্ষকদের নামে এরকম অপবাদ কোনভাবেই মেনে নেওয়ার নয়। সব শিক্ষক তো এক না।বিষয়টা নিয়ে সব শিক্ষকরাই কনসার্ন। আমরা প্রশাসনকে বিষয়টা অবগত করেছি। কি কারনে তিনি শিক্ষকদের নিয়ে এমন আপত্তিকর মন্তব্য করলেন প্রশাসন এটার সঠিক জবাব না দিতে পারলে আমরা কঠোর হতে বাধ্য হবো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিসংখ্যান বিভাগ সহকারি অধ্যাপক বিপুল হোসেন বলেন, আমরা ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীলতা ফিরে আনতে যায়। এমন মুহূর্তে তার(রোকনুজ্জামানের)ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা কোন ভাবেই কাম্য নয়। তাঁকে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড.শওকাত আলী বলেন, শিক্ষকদের নিয়ে এমন আপত্তিকর মন্তব্য করার পরও তিনি আমার কাছে অনুতপ্ত হননি। কোন সাহসে তিনি এসব কথা বলেছেন এর সঠিক জবাব তাকে দিতে হবে।  আর সাংবাদিকদের সাথে  অসভনীয় আচরণের জন্য  অবশ্যই তাকে ক্ষমা চাইতে হবে।এ বিশ্ববিদ্যালয়ে গায়ের জোরে কোন কিছু হবে না।

উল্লেখ্য, ড.ওয়াজেদ রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং ইন্সিটিউটের রিসার্চ অফিসার ড. রোকনুজ্জামান রোকন গবেষণার চেয়ে রাজনীতিতে বেশি সক্রিয় । এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে হয়েছেন জিয়া পরিষদ রংপুরের সাংগঠনিক সম্পাদক।